নাটোরকন্ঠ: নাটোরে কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়া এনজিওর মালিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রাজশাহীর পুঠিয়া থানায় এক ভুক্তভোগী এনজিও মালিক কামরুল ইসলাম ও ১০ জন কর্মীর বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই মাঠে নামে পুলিশ।
তিন নারী কর্মীকে আটক করলেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি এখন পর্যন্ত এনজিওর মালিক কামরুল ইসলামকে। এদিকে টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরপরই কামরুল ইসলামের নানা কীর্তি কাহিনী বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন মানুষের মুখ থেকে। স্থানীয়রা বলছেন কামরুল ইসলামের বর্ষা এনজিওর পার্কে প্রতিদিনই বসতো গান নাচের আসর বসতো নেশার আড্ডা।
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রেজাউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মামলা হওয়ার পরপরই আমরা অভিযানে পরিচালনা করি এবং তিন জনকে আটক করি। আদালতের মাধ্যমে আটককৃতদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে নাটোরের মাজদিঘা এলাকায় আজও মানুষের আহাজারি থামছেনা। কামরুল ইসলামের এনজিওতে যারা বড় লাভের আশায় লোভে পড়ে টাকা লগ্নি করেছিলেন তারা বিলাপ করছেন রাস্তার মোড়ে মোড়ে। নাটোর সদর উপজেলার মাঝদিঘা এলাকায় ‘হেলপ সোসাইটি’ নামে একটিএনজিও অফিস খুলে বসে কামরুল ইসলাম। পরে পার্শবর্তি রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার মোল্লাপাড়া ও ঝলমলিয়া দুটি অফিস খুলেন।
দেন বেশ কয়েকজন কর্মচারী নিয়োগ। ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার নামে সঞ্চয় সংগ্রহ শুরু করেন। এছাড়া মোটা অঙ্কের লাভ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন মেয়াদী ফিক্সড ডিপোজিট প্রকল্প খুলে টাকা সংগ্রহ করেন তিনি। এদিকে বর্ষা মাঝদিঘা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি সমবায় সমিতি নামেও আরেকটি সমবায় মমিতি খুলেও টাকা সংগ্রহ করেন।
এদিকে তার সমন্ধে নানা কুকিতীর্র কথা অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। বর্ষা কৃষি পার্ক নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলেন কামরুল ইসলাম । সেখানে একটি হল ঘরে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বসতো বিনোদনের আসর। খানা পিনার সাথে বিভিন্ন স্থাান থেকে মেয়ে / বাইজি নিয়ে গিয়ে নাচ গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। বসতো জুয়ার আসার। ওই এলাকার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সেই অনুষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন বলে অভিযোগ এলাবাসীর।
বাহিরে ধেকে পার্কটিকে দেখতে তেমন আকর্ষনীয় মনে না হলেও ভেতরে ঢুকলেই দেখা যেতো এলাহি কারবার। পার্কের বিভিন্ন স্থান নৌকাসহ রাইডারের জন্য ছিলো আলাদা আলাদা কাউন্টার ও মেয়ে টিকিট বিক্রেতা। এছাড়া ভুতের গুহার আকর্ষন যুবকদের ছিলো বিশেষ পছন্দের। এই কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা সুন্দরী রমনী ২০টাকায় টিকেট বিক্রি করতেন। যুবকরা তাদের বান্ধবীদের নিয়ে ভুতের গুহাভ্রমন করছেন।
এদিকে হঠাৎ করে গ্রাহকরা জানতে পারেন টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন এনজিও মালিক কামরুল ইসলাম। এরপর পরই টাকা সঞ্চয় এবং ফিক্সড ডিপোজিট রাখা গ্রাহকরােআজও তার বাড়িতে চড়াও হয় টাকার জন্য। টাকা না পাওয়া পর্যন্ত তার স্থান ত্যাক করবে না বলে জানান অনেকে। মোল্লাপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম, রাইতুল ইসলাম, অভিযোগ করেন, ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে তারা কয়েক লক্ষ টাকা সঞ্চয় করেছিলেন। এখন তারা সব হারিয়েছেন। টাকা ফেরত না পেলে পথে বসবেন তারা।
Advertisement