নাটোরকন্ঠ : নাটোরের সিংড়ায় আড়াই লক্ষ টাকার বিনিময়ে খাস জমি দিয়েছেন চামারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি চামারীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেন। তিনি তাঁর ভাতিজা বর্তমান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মতলেব আলীর যোগসাজশে একজন অসহায় মহিলার কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে খাস জমি দেন।
দীর্ঘ প্রায় ৮ বছরে ও জমিটির দলিল না করে দেয়ায় টাকা ফেরত চায় ক্ষতিগ্রস্ত মহিলা আন্জুয়ারা। কিন্তু আজো সে সুষ্ঠু বিচার পায়নি। ঐ সাবেক চেয়ারম্যানের কাছে ধর্ণা ধরে বিচার না পেয়ে সিংড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ঐ মহিলা। ঐ মহিলার দাবি তাঁকে জমির দলিল করে দিক, নতুবা টাকা ফেরত দেয়া হোক।
জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে আন্জুয়ারা বিলদহর গ্রামে আব্দুস সালামকে বিবাহ করে। বিয়ের পর দিনমজুর স্বামীকে নিয়ে বসবাসের জন্য ঐ চেয়ারম্যানের কাছে গেলে সে জমি দিতে রাজি হয়। ঐ মহিলার স্বামী সাবেক চেয়ারম্যানের এর এলাকায় হওয়ায় তাঁর এলাকায় জমি দেয়ার আশ্বাস দেয় এবং আড়াইলক্ষ টাকা জোগাড় করতে বলে । এসময় নিজের মায়ের ভিটার অংশ বিক্রি করে আড়াই লক্ষ টাকা পরিশোধ করে আন্জুয়ারা। এদিকে ঐ সাবেক চেয়ারম্যান আন্জুয়ারাকে ৫ কাঠা খাস জায়গায় বসবাসের সুযোগ দেয়। পরে ঐ জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে বললে গড়িমসি করে।
সম্প্রতি ঐ মহিলাকে তালাক প্রদান করে তাঁর স্বামী। এতে করে বিপাকে পড়ে সে। বিভিন্ন স্থানে ঘুরে কোনো বিচার না পেয়ে সে কলম ইউপি চেয়ারম্যান মঈনুল হক চুনুকে জানালে সে সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেনের সাথে কথা বলে তাঁর কাছে পাঠায় দেয়।অসহায় ঐ মহিলা দাড়স্থ হয় সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেনের কাছে। পরে তিনি ১ লক্ষ টাকার রফাদফা করে দেয়। কিন্তু আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে মাত্র ১ লক্ষ টাকার রফাদফা করে দেয়ায় তা মানতে নারাজ ঐ মহিলা। বর্তমানে আন্জুয়ারা তাঁর মায়ের সাথে কলম ইউনিয়নের নাছিয়ারকান্দি গ্রামে বসবাস করছে।
সরেজমিনে গিয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান ও তাঁর ভাতিজা মতলেব আমার কাছ থেকে আড়াইলক্ষ টাকা নিয়েছে। জমি লিখে দিবে বলেছিলো অথচ আমাকে জমি লিখে দেয়নি। জমির কথা বললে মতলেব আমাকে কুপ্রস্তাব দেয় এবং বলে আমি সমাধান করে দিবো। কিন্তু সে কিংবা চেয়ারম্যান সাহেব আমার ন্যায় বিচার করে দেয় নি। আমি এর সঠিক বিচার চাই। এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান রশিদুল ইসলাম জানান, আমি এ বিষয়ে কোনো সমাধান করতে পারবো না। কারন তাঁকে আমি সম্মান করি। আশা করি তিনি এটার সুষ্ঠু সমাধান করে দিবেন।
কলম ইউপি চেয়ারম্যান মঈনুল হক চুনু জানান, ঐ মহিলা আমার এলাকার ভোটার। আমার কাছে আসার পর সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেনকে ফোনে বিষয়টি অবগত করলে তিনি স্বীকার করেন এবং তাঁর কাছে পাঠাতে বলেন। এ বিষয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেন জানান, আন্জুয়ারা তাঁর পরিচিত, সে এ বিষয়ে আমার কাছে আসলে আমি ১ লক্ষ টাকার আপোষ মিমাংসা করে দিয়েছি। কিন্তু সে তা মানেনি। শুনলাম থানায় অভিযোগ দিয়েছে।