রাজু আহমেদ, সিংড়া,নাটোরকন্ঠ: চলনবিলে বন্যার পানি থৈ থৈ করছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে তিন শতাধিক মাছের ঘের। ঘের থেকে এসব মাছ ভেসে ভেসে খাল, বিল, নদী, লোকালয়ে চলে আসছে। এ অবস্থায় সারা চলনবিল জুড়েই এখন মাছের রাজত্ব। তাই মাছ মারতে ব্যস্ত মৎস্যজীবি সহ সকল শ্রেনীর মানুষ। ছোট ছোট জাল খাল, বিল, নদীতে কিছুক্ষণ ফেলে রাখলেই তাতে আটকা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ। মূলত গত এক সপ্তাহ ধরে বন্যার পানিতে ডুবছে চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন। এসব এলাকার শতাধিক মাছের ঘের পানিতে ডুবে গেছে।
ফলে এখন চলনবিলে বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছের পাশাপাশি পুঁটি, চিংড়ি, টেংরা, খলশে, শোল, টাকি, বোয়াল, পাবদা, কই মাছ মিলছে জেলের জালে। সিংড়া উপজেলার ভাগনাগরকান্দি গ্রামের ইউসুফ হোসেন জানান, গত তিনদিনে ওই এলাকার বন্যার পানির মধ্যে ৫ কেজি খলশে ও পুঁটি মাছ ধরেছেন তিনি। মাছ মারতে তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন। ছাতারদীঘী ইউনিয়নের মাছ ব্যবসায়ী মিঠু শেখ জানান, বন্যার পানিতে ভেসে আসা মাছগুলোর বেশ চাহিদা রয়েছে। এসব মাছ স্থানীয় বাজারেই বেশি বিক্রি হচ্ছে।
চামারী ইউনিয়নের বিলদহর বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, বর্ষাকালে এই বাজারে বিলের দেশি মাছের চাহিদা বেশি থাকে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মাছ কিনতে আসেন অনেকে। অন্য সময় কার্প জাতীয় মাছ বেশি কেনে মানুষ। এদিকে প্রতিদিনই নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের শেরকোল এলাকায় রাস্তার পাশে বড়শি দিয়ে শত শত মানুষ মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করে। একেকজন মানুষ প্রতিদিন দুই থেকে তিন কেজি করে বিভিন্ন প্রকার দেশি মাছ ধরছেন। খালবিলে মাছ শিকারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মা ও পোনা মাছ। এতে বিলের পানিতে প্রজনন সম্ভাব্য মাছও আটকা পড়ছে শিকারির বরশিতে। এ কারণে ব্যাহত হচ্ছে মাছের প্রজনন।
চলনবিল পরিবেশ উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি রাজু আহমেদ জানান, মাছ শিকার করতে গিয়ে অনেকে পোনা মাছও ধরছেন। তবে পোনা মাছগুলো ছেড়ে দিলে চলনবিল মৎস্য সম্পদে আরও সমৃদ্ধ হবে। সিংড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা ওয়ালী উল্লাহ বলেন, ‘বছরের এই সময়ে চলনবিলে মাছের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। প্রকৃত মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি অনেকে সখে মাছ শিকার করেন। পোনা মাছ শিকার থেকে বিরত থাকলে আমাদেরই লাভ। এ ব্যাপারে নিজেদের সচেতন থাকার বিকল্প নেই।