সাহিত্যের অন্যতম সারথি -কবি ছন্দা দাস‘এর একগুচ্ছ কবিতা

0
465
Chhanda Das

আগামী

স্বপ্নের সিঁড়ি ভেঙে গেলে আলপথ ধরি।
দেখি উজ্জয়িনীপুর দূর বহুদুর!
জোড়া শালিখেও নেই সরল বিশ্বাস
খুচরো পাতায় হাত দিলে ছ্যাঁকা খাই।
পুরানো সিন্দুক থেকে তুলে আনি
সান্ত্বনা। দামি পোশাকও এখন শরীরে
বড়ো বেশি যেন আঁটো।
সব যদি আজ গায় ভাঙনের গান
স্বপ্নেরা তবু কেন বেঁচে থাকে?
একচক্ষু হরিণী জীবনই তো
অধিক শ্রেয়তরো।
কেউ বলেছিল কবে যেন
জীবন সে তো বহতা নদীর মতো।
ভাটিতে যদি শোন বিদায়ের সুর
জোয়ারে সুনিশ্চিত বিজয়ের গান।

২/৭/২০

প্রেমিক হতে চাইনি

কি হয়ে গেল মুহূর্তেই
জগৎ পাল্টে গেল
চোখের পলকে।
বিকেল যেন সকাল
হয়ে ধরা দিল।
নদীতে এসেছে বান
জোয়ারে আমার প্লাবন।
পৃথিবীর সব বিস্ময় আজ
আমার চোখে!
একে কি প্রেম বলে?
প্রেমিকেরা কী সব সুন্দর দেখে?
ওরা কি ফুল ফোটাতে পারে?
আনন্দকে লুটিয়ে দিতে পারে?
আমি প্রেমিক হতে চাইনি।
কিন্তু
তুমি কেন এতো সুন্দর হলে?

২৬/৬/২০

নিঠুর দরদী

আমি সহজলভ্য কোন গানের কলির মতো
নয় যে তুমি এতো সহজে গাইতে পারবে
আমার রাগাশ্রয়ী গান।
উপেক্ষাকে জয় করতে পারিনি আজও
তাই পাড় ভাঙার কষ্ট নিয়ে
আঁকিনা কোন রঙিন ক্যানভাসে
জীবনের সুর।
অবেলার ফুল দিয়ে পুজোর নৈবেদ্য আর
কে সাজায় বলো?জলের দাগ জলের
গভীর‌ই জানে ।ঢেউ তো মুছে দেয় শুধু
তার বাইরের আবরণ টুকু।

২৯/৬/২০

ভেজা দেওয়াল

ভেজা দেওয়ালের সাথে সুবর্ণার
খুব মিল।একথা তাকে কখনও
বলিনি।
সবকথা বলতে নেই।এ সহজ
সত্যটা আমি জেনে গেছি ছেলেবেলা
থেকেই রাণুপিসিকে দেখে।
রাণুপিসিকে কেউ ভালোবাসেনি
কোনদিন। সব সত্যি বলতো বলে।
অথচ রাণুপিসির অন্তরে হাজার
শক্তির আলো। আমি তার আলোতে
স্নাত হয়েছি।
বলছিলাম সুবর্ণাকে আমি পৃথিবীর
সব উষ্ণতা নিয়েও ভেজাতে পারিনি।
তবুও তাকে আমার ভেজা দেওয়ালের
মতই মনে হয়।

৩০/৬/২০

বৈরী মন

আর‌ কতো দিন গুনবো,আর‌ও কতো
প্রতীক্ষার প্রহর পার হলে আসবে সুবর্ণ প্রভাত।
গৃহবন্দী জীবনের তাল কেটে যাচ্ছে
অজানা এক বৈরী কীটের দংশনে।
দুরত্ব কখনো কাছে আনে।ভালোবাসার সংসারের
জন্য তা পয়মন্ত। মনের নৈকট্যে যখন
বিধ্বংসী সুর তখন গভীর হয় বিরহের মধুরতা।
আর‌ কতো অসহনীয় মন নিয়ে গাইব
জীবনের গান। বাইরে পৃথিবী তন্নী কুমারীর
মতো সাজায় ঋতু সাজের রূপের পসরা।
মনের ঘরে আজ কালরাত্রির দীর্ঘ যাত্রা।
সুন্দরের আবাহন আজ বিসর্জনের নদীতে।
ঈশ্বর‌ও কি নিরুপায়ী় স্বাক্ষর করছেন
স্বসৃষ্ট জগত সভায়?মনের ঘর‌ও তব
কেন করেনি রুদ্ধ?
দিন যাপনের কষ্টে বেঁচে থাকার আনন্দকে
করছে ক্লান্তিকর দাঁড় টানা মাঝির মতো।
আর কতো প্রহর পার করতে হবে?আর
কতো যন্ত্রণার রাত পার করে মানুষ বলবে
দেখ আমরা জয়ী -আমরা অমৃতপুত্র।

১/৭/২০

ভ্রূণ

ইচ্ছেতে ভ্রূণ হয়ে আছি বহুদিন
ফুল আর ফোটাতে পারিনি।
গীতবিতানের পাতা এখন
ফুটপাতের আশ্রয়ে
আমি তো আর হিটলার হতে
পারিনা।
ব্যর্থ কবিদের তালিকা আর
কতো দীর্ঘ করবো!
মূলধন যা ছিল ক্ষয় রোগে
খেয়েছে সবই
রক্তের অক্ষরে যাকিছু লিখি।

৪/৭/২০

Advertisement
উৎসChhanda Das
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরে বাসের চাপায় যুবকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধসিংড়ায় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ হতে ত্রাণ বিতরন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে