ঝড়ে ঝরে যাওয়া কলির গল্প
মেহেদী হাসান বাবু নাটোর কণ্ঠ : কে রাখে কার খবর! শুভ! সুব্রত কুমার (শুভ)। ঝড়ে ঝড়ে যাওয়া এক কলির গল্প।বছরের শুরতে হাজার শিশু যেখানে নতুন বইএর শুবাস নিচ্ছে তখন শুভ কনকনে শীতে সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রায় ১৫ ঘন্টা ধরে কাষ্টমারদের পানি আর চা পৌছে দিতেই ব্যাস্ত। জীবনের কঠিন বাস্তবতায় যেখানে বই হাতে থাকার কথা, দারিদ্রতকর কষাঘাতে তা আর হয়ে উঠছেনা।
নাটোরের সিংড়া পৌরসভার সামনে ইলিয়াসের চায়ের দোকানে তিন টাকা মাসিক বেতনে এক বছর যাবৎ চাকরি করে শ্রী সুব্রত কর্মকার (শুভ)। বয়স আনুমানিক চৈদ্দ বছর হবে।
ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করার পর সংসারের অভাব অনটনের কারণে বিদ্যালয়ে যাওয়া আর হয়ে ওঠেনি। নিজ গ্রামে একটি সংঘাতের শুভ বাবার হাত ভেঙে যায়। অন্যের জমিতে -বাড়িতে দিন মুজুর খেটে রোজগার করে চালাতেন সংসার। অপরের সাহায্য সহযোগিতায় চিকিৎসা সম্পন্ন হলেও পূর্ণাঙ্গভাবে সে কর্মহীন হয়ে পড়ে।
দারুন অর্থ কষ্টে পরে শুভর পরিবার। সংসারের হাল ধরে শুভ এবং শুভর মা। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন আর শুভ আয়ের জন্য বেছে নিয়েছে চা দোকানের বয়ের কাজ।
নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৩ নং ইটালি ইউনিয়নের রাতাল গ্রামে জন্ম এই শুভর শ্রী লব কুমারের ঘরে। মা-বাবা সহ পরিবারের সদস্য তারা ছয় জন। পরিবারের হাল ধরতে নিজ গ্রামের এক বছর এবং সিংড়া পৌরসভা সামনে ইলিয়াসের দোকানে এক বছর যাবৎ চাকরি করে মাইনে মাত্র তিন টাকায়।
দোকানী ইলিয়াস আলী জানালেন, শুভ খুব গরিব পরিবারের একটা ছেলে। তার বাবার হাত ভেঙ্গে যায়। পরিবারটা খুব অসহায় হয়ে পরে। পরে শুভকে বলি আমার দোকানে থাকার কথা। আমি তাকে সন্তানের মতই রাখতে চেষ্টা করি। তবে তার পরিবারে লোক সংখ্যা বেশি এবং খুব অভাবি।
শুভর ইচ্ছা আর দশজন বাচ্চা যেমন স্কুলে যায়, স্কুলের বন্ধুদের সাথে হেসেখেলে কাটাব জীবন।
কিন্তু সেই ইচ্ছা কখনো কি পূরণ হবে ? নাকি আজীবন শ্রমিক হিসেবে থেকে যাবে ঝড়ে ঝরে পড়া ফুলকলি? সরকার ও বৃত্তবানরা এসব ঝড়ে যাওয়া কলিদের দিকে নজর দিবেন এমন প্রত্যাশা।
নাটোর কন্ঠ পরিবার শিশুর দায়িত্ব নেবার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের কাছে। মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে আকুল আবেদন তিন যেন শিশুটির লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন। শিশুটির স্বপ্নপূরণে তার পাশে দাঁড়ান।