কলকাতায় আমার বইয়ের অভিজ্ঞতা:-জাকির তালুকদার
কলকাতায় আমার প্রথম প্রকাশিত বই ‘কুরসিনামা’। ছোঁয়া প্রকাশনীর তারেক কাজী করেছিল বইটি। খুব মনোযোগ দিয়ে শ্রদ্ধার সাথে বইটি করেছিল তারেক। বইমেলাতে মোড়ক উন্মোচন করেছিলেন কিংবদন্তি কমিউনিস্ট নেতা, যাকে অনেকেই ‘নকশালদের শেষ সূর্য’ নামে চেনেন, সেই আজিজুল হক।
বই নিয়ে আমার দ্বিধা ছিল। বলেছিলাম সেকথা তারেককে। তারেকের জবাব– এই রকম বই লিখতে কবজি ভেঙে যাবে অনেকের। পড়বে না মানে?
আনন্দবাজারে পরিচিতিও বেরিয়েছিল। আরো প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছিল তারেক। কিন্তু এযাবৎ বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ কপি। টাকাগুলো জলে গেছে তারেক কাজীর।
পরের বই ‘মুসলমানমঙ্গল’। প্রকাশ করেছিল ‘একুশ শতক’। বাংলাদেশে কাটতি এবং আলোচনা দেখে, পাশাপাশি বইটির গুরুত্ব অনুধাবন করে, সৌমিত্র লাহিড়ী খুব আগ্রহের সঙ্গে প্রকাশ করেছিলেন বইটি। বিজ্ঞাপন দিয়েছেন দেশ পত্রিকার শারদীয় সংখ্যায়, বইয়ের দেশ-এও। কিন্তু সবমিলিয়ে বিক্রি শত কপির কোটা পার হয়নি।
সর্বশেষ বই ‘কার্ল মার্কস মানুষটি কেমন ছিলেন’। কথারূপ প্রকাশনী থেকে বন্ধু-কমরেড গৌতম অধিকারী প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক গুরুত্ব থেকে অনেকে বইটি নিয়েছেন। গৌতম অধিকারীকে পরিশ্রম করতে হয়েছে ব্যাপক। তিনশো-র মতো কপি বোধহয় বিক্রি হয়েছে। সম্ভবত লগ্নিকৃত খরচটি উঠে এসেছে তার।
প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, তিন প্রকাশকই আমাকে যথেষ্ট সম্মান দেখিয়েছেন। ঢাকার মতো অনেকেই কলকাতা থেকে নিজের খরচে বই করে থাকেন। আমাকে সেই কাজ করতে হয়নি। কেউ সেদিকে ইঙ্গিতমাত্রও করেননি। বরং নানাভাবে আমাকে আপ্যায়ন করেছেন, রয়্যালটির চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেছেন নিয়ম মেনে।
কিন্তু পাঠক বই না গ্রহণ করলে কার কী করার আছে!