মাহফুজা আরা পলক‘এর অণুগল্প -দ্রিয়ানা

0
174
Mahfuza Polok

অণুগল্প : দ্রিয়ানা

মাহফুজা আরা পলক

(বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনী)

দ্রিয়ানা একটা ল্যাবে প্রুটোর সাথে জরুরি কাজ করছে।সাদা ধবধবে ল্যাবে হালকা কিছু রঙের লেজার রশ্মি, কক্ষ এবং করিডোর গুলোর ইনডিকেটর হিসেবে কাজ করছে যদিও তবুও সেগুলোকে ইন্টেরিয়র ডিজাইনের মতো মনে হচ্ছে।এই সৌন্দর্য বোঝানো মুশকিল।

প্রতিটা রশ্মি থেকে রঙধনুর মতো মিষ্টি রঙ ছড়াচ্ছে।কোন কক্ষে যেতে হলে সেই রশ্মিতে দাঁড়ালে সেই কক্ষে পৌঁছে যাচ্ছে নেনো সেকেন্ডে।কক্ষ গুলোর আয়তন পরিমাপ করা কঠিন।দ্রিয়ানার ধী শক্তিকে মহাজাগতিক প্রাণিদের মধ্যে বর্তমানে প্রথম সারির ধরা হয়।

এই সারির প্রাজ্ঞজনের মধ্যে ফ্রুটাড্রিস সংস্থা তাকে সবচাইতে কনিষ্ঠ ঘোষণা করেছে। লিন্ড্রা বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না। ওর হিসেবে সে এই সংস্থার সর্বকনিষ্ঠ।তার বয়স মাত্র আট হাজার বছর। সে ফ্রুটাড্রিস সংস্থার কাছে তা পুনরায় যাচাইয়ের জন্য আবেদন করেছে। এখানে কয়েক ট্রিলিয়ন বছর একএকজনের অস্তিত্ব টিকে থাকতে পারে অনায়াসে।

তবে ইচ্ছে করে নিজেকে ধ্বংস করতে চাইলে তার প্রতিরূপ কাউকে বানিয়ে তবে নিজে ধ্বংস হতে পারবে। এর জন্য এই জগতের আরো দুজনের থেকে ডি এন এর মতো বিভিন্ন যৌগ উপাদান নিয়ে তার বিক্রিয়া ঘটিয়ে যদি সফল কাউকে তৈরি করতে পারে তবেই সে নিজে ধ্বংস হতে পারবে।

তবে নতুন সত্তার বুদ্ধিমত্তা হতে হবে নিজের থেকে দুই তিন ডিগ্রি বেশি। তা না হলে কখনো নিজেকে ধ্বংস করতে পারবে না।বর্তমানে নিজেকে এই প্রক্রিয়ায় ধ্বংস করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মহাজাগতিক ধ্রুব্র নামক সত্তা গুলো। তারা তাদের জগতের আরো সমৃদ্ধি চাইছে।

দ্রিয়ানা এবং প্রুটো সম্পূর্ণ অন্য একটা বিষয় নিয়ে এই ল্যাবে কাজ করছে। দ্রিয়ানা বুঝতে পারছে তার ভেতর ধ্রুব্র সত্তার চাইতে ভিন্ন কিছু একটা আছে। ল্যাবের প্রায় সকল ফাইল সে পড়ে ফেলেছে।পড়ার ক্ষেত্রে অন্যদের থেকে এই ক্ষমতা তার দ্বিগুণ।

প্রুটো একশো বছরের পুরনো একটা ফাইল খুঁজে পেয়েছে। একদম নতুন বলে এই ফাইলকে এর আগে তথ্য সংগ্রহের জন্য বেশি গুরুত্ব দেয়নি তারা। দ্রিয়ানা তার চোখের ডিভাইসের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফাইল পড়ে নিল। তার ইস্পাতের ন্যায় শরীর যেন আরো শক্ত হয়ে গেল।

এখানে লেখা আছে প্রায় একশো বছর আগে স্রিড্রা এবং ত্রুডি নামক দুজন ধ্রুব্র সত্তা খুব অল্প সময়ের জন্য পৃথিবী নামক একটি গ্রহে পৌঁছতে পেরেছিল। সেখানে পৃথিবীর দুজন বিজ্ঞানী যথাক্রমে দিয়া এবং নাজিফ দম্পতির সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়।তারা অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন।

বিজ্ঞানীদ্বয় ধ্রুব্র সত্তার আমন্ত্রণে তাদের জগতে আসার ইচ্ছে পোষণ করে। এই জগতে এসে তারা তাদের সফলতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। ধ্রব্র সত্তার আরো উৎকর্ষ সাধনে তারা অসামান্য অবদান রাখেন। গত একুশ বছর আগে ধ্রুব্রদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে তারা দুজন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

তাদের ডি এন এ এবং ধ্রব্রদের উন্নত প্রযুক্তির ফসল দ্রিয়ানা। দ্রিয়ানা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে দিয়া এবং নাজিফের ছবি এবং ভিডিওচিত্র।উন্নত প্রযুক্তির জন্য, যা মনে হচ্ছে তার সামনে বর্তমান। তারা নাকি তার বাবা ও মা! কি একটা সূক্ষ্ণ অনুভূতি তাকে গ্রাস করে নিল।

দ্রিয়ানার অক্ষিকোটর দিয়ে দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ছে।প্রুটো তার ইস্পাতের ন্যায় আঙুল দিয়ে সেই জলের কণা গুলো সযতনে কাচের একটি পাত্রে তুলে রাখতে রাখতে ভাবছে -কী এই জিনিস? মনে হয় নতুন কোন রিসার্চের দ্বার উন্মোচিত হতে চলেছে!

১১.১১.২০২১ বৃহস্পতিবার

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরের চলনবিলে পাখি রক্ষায় সম্মাননা পেলেন পরিবেশকর্মী সাইফুল
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি ষড়যন্ত্রের চোরাগলি দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার দিবা স্বপ্ন দেখছে -ওবায়দুল কাদের

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে