করোনাকে করো ভয় – শাহরিমা বৃতি 

0
624

করোনাকে করো ভয় – শাহরিমা বৃতি 

সম্প্রতি বিদেশফেরত লোকজন, ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেশের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে। তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছেন, যাচ্ছেন হাট-বাজারে। তাই সেখানেই প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি সচেতনতা। হতে পারে আপনার পাশের বাড়ির ব্যক্তিটি-ই কোনো না কোনোভাবে শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন করোনাভাইরাস। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা যার নাম দিয়েছেন কোভিড-19। তাই আসুন সচেতন হই এখনই।

১. সকালে বাজারে গেছেন, প্রতিবেশীর সাথে দেখা। আসুন ‘অসামাজিক’ হই। ৩ ফুট দূর থেকে কথা বলি, হাতে হাত না মেলাই। কারণ ওই হাতেই থাকতে পারে করোনার জীবাণু। ওই প্রতিবেশীর হাঁচি-কাশি বা কথা বলার সময় ছিটে আসা থুথুও হতে পারে আপনার মৃত্যুর কারণ।
২. বাজার থেকে ফিরেছেন, ব্যাগটি সাবধানে রাখুন। তাতেও লেগে থাকতে পারে করোনার জীবাণু। কাঁচাপণ্য দ্রুত ধুয়ে হাতে সাবান দিন। ব্যাগটি ধুয়ে ফেলুন, নিজে পরিস্কার হোন।
৩. বাইরে গিয়ে কোনো দরজার হাতল, লোহা বা কাঠের কিছুতে হাত দিয়েছেন। তাতেই হয়তো আপনার হাতে লেগে গেল এই ভাইরাস। তাই এ থেকে বিরত থাকুন। দিলেও সেই হাত নাকে মুখে বা চোখে দেয়া যাবে না। যত দ্রুত সম্ভব হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে।
৪. নারীরা খোলা চুলে বাইরে গেলেন। চুলের সাথে বয়ে আনতে পারেন করোনা। যতটা সম্ভব চুল ঢেকে চলি। কারণ চুলে জীবাণু আটকায় বেশি। সবসময় চুল ধোয়াও সম্ভব হয়না।
৫. বাইরে যাবার সময় ঘড়ি, চুড়ি, বেল্ট, গহনা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলি। এগুলোতেও আটকে যেতে পারে এই ভাইরাস। বাইরে থেকে ফিরে চেষ্টা করি মোবাইল ফোনটি হেক্সিসল দিয়ে পরিস্কার করতে এবং শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে।
৬. বাসায় প্রতিবেশী বেড়াতে এসেছে, তিনিও বয়ে আনতে পারেন ছোঁয়াচে এই রোগ। তাই প্রতিবেশীকে বলুন আপাতত না আসতে। প্রয়োজন ছাড়া বন্ধ করুন বাইরে যাওয়া।
৭. বাড়ির ছোট্ট সদস্য, খেলতে যাবার বায়না ধরেছে। বলুন, মাত্র কয়েকদিন। তারপরই মুক্ত আকাশে খেলবে তুমি।
৮. গ্রামে একই টিউবওয়েল ব্যবহার করেন অনেকে। টিউবওয়েলের হাতল বা মুখ পরিষ্কার করে পানি নিন। কারণ, পানি নিতে আসা কেউ হয়ত জীবাণুবহনকারী।
৯. বিকেলবেলা চায়ের দোকানে আড্ডা। বন্ধুরা কেউ বিদেশফেরত না। তারপরও সাবধান। তাদেরই কেউ হতে পারে করোনার বাহক।
১০. আপনি খুব সাবধান। ঘণ্টায় ঘণ্টায় সাবানে হাতও ধুয়ে ফেলেন। কিন্তু মাঝের এই এক ঘণ্টাতেও যদি বাইরের কোনো কিছু স্পর্শ করে নাকে মুখে চোখে হাত দেন, তাহলে কোনো লাভ নাই। আক্রান্তের ঝুঁকি থেকেই যায়।
১১. আক্রান্তের ঝুঁকি এড়াতে বাড়ির যেকোনো একজন বাইরের প্রয়োজনীয় কাজ সারুন, পর্যাপ্ত সতর্কতায়। কারণ আপনি সুস্থ থাকলেও আপনার বয়ে আনা জীবাণুই হতে পারে বৃদ্ধ মা-বাবা এবং সন্তানের ঝুঁকির কারণ।
১২. করোনা থেকে বাঁচতে, সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য চান, তাই গেলেন মসজিদ, মন্দির অথবা গির্জায়। সেখান থেকেও আক্রান্ত হতে পারেন আপনি। সৃষ্টিকর্তা পরম দয়ালু, তাই ঘরে বসে ডাকলেও নিশ্চই সারা দেবেন তিনি। মহানবী (সা.) বলেছেন, ”মহামারির সময় যে যেখানে অবস্থান করছো সে সেখানেই থাকো।” তাই, আমরা যে যেখানে আছি, সেখানে থেকেই প্রার্থনা করি।

পুণশ্চ :
দীর্ঘদিন মহামারি দেখিনি আমরা। তাই এর সংজ্ঞা ভুলে গেছি। করোনা মহামারি। মহামারি তাই, যাতে মানুষ মরে, উজাড় হয় গ্রামের পর গ্রাম, শহরের পর শহর। তাই আসুন বাসায় থাকি।

লেখকঃ গণমাধ্যমকর্মী

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধমরীচিকা -শাপলা জাকিয়া‘র ভৌতিক গল্প -পর্ব ১১
পরবর্তী নিবন্ধপার্সলে পণ্যের বদলে মানুষ পরিবহন, ভাইরাল

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে