ঠাহর•••
বেনজির শিকদার
ধরা যাক—
কোনো এক দুপুরে খাঁখাঁ রোদের তপ্তবেলায়
মহিষের বাথান, এলোকেশী মেঘ, বাঁশির সুর ছাপিয়ে
আশ্চর্য এক অমোঘ সঞ্জীবনী শক্তির ছোঁয়ায়
আকাশ নুয়ে এলো মৃত্তিকায়;
দূর চলে এলো কাছে,
সকল কয়েদী মুক্তি পেয়ে গেলো!
অতঃপর কঙ্কাবতীকে উদ্ধারের শপথে
প্রত্যেকেই হয়ে উঠলো একেকজন রূপকথার রাজার কুমার!
ধরা যাক—
এক বিকেলে বেদনারা দলবেঁধে এসে বললো
না— না— আর নয়; চেয়ে দেখো
মুদ্রার উল্টোপিঠের মতো আমাদেরও আছে সরল-মুখশ্রী;
বুকের সানুদেশজুড়ে আছে ঘন প্রেইরীর মানবিক প্রেম!
নব পরিণীতার মতো আনকোরা-অসার-জুবুথুবু নয়;
চাইলেই কলরোলে খুলে দিতে পারি বন্ধ-অন্ধ মস্তিষ্ক;
বিশ্ববাউলগীত কিংবা অষ্টপ্রহর শোনাতে পারি—
ভাটিয়ালি-ভাওয়াইয়া-জারি-সারি- সুমধুর রবি-নজরুল।
ধরা যাক—
কোনো এক রাতে বাবুই মুখের কারুকার্য
আর হার্দ্য রঙে পৃথিবী রাঙাতে—
মাদার তেরেসা, মহাত্মা গান্ধী, কার্ল মার্কস,
আব্রাহাম লিংকন, নেলসন ম্যান্ডেলা,
ফিদেল কাস্ত্রো, কমরেড লেনিন
ও শেখ মুজিবের মতো—
প্রাঞ্জল মুখগুলোয় সেজে উঠলো ধরিত্রীর দুয়ার!
ধরা যাক—
হলুদ খঞ্জনাপাখির ঠোঁটে চেপে একদিন ভোর এলো;
রুপোলিইলিশ আর কিশোরীর গালে পড়া টোলের মতো
হৃদয় উথলে ওঠা ভোর!
সাথে নিয়ে এলো ভালোবাসার মহামন্ত্র!
জগতের সমুদয় সম্প্রচারের নবে আঙ্গুল ছোঁয়াতেই
প্রবাহিত হলো স্বাস্থ্যকর সংবাদের সু-বাতাস।
অষ্টমীর পুণ্যস্নানে মেতে—
ইথারে ইথারে ধ্বনিত হলো বিজয়োল্লাস!
দৌড়ে পালালো—
আহাজারির দিন; বিবর্ণ মুখচ্ছবির ক্ষুধা-জরা-মৃত্যু!
নদীর কল্লোল-পাখিদের বিলাপ-আত্মার ক্রন্দনধ্বনি—
থেমে গেলো অন্যমনস্ক পাথর-সময়।
বিগত কটাক্ষ বন্ধ রেখে অহংকারী ছুঁলো অসহায়ের মন;
বকুল ছড়ালো সুবাস, কোকিল গান ধরলো!
দোয়েলের শীষে সয়লাভ স্বর্গ-মর্ত্য!
দেশদ্রোহী মেতে উঠলো দেশপ্রেমের উৎস ধারায়।
একটা দু’টো নয়—
পৃথিবীর প্রতিটি মানচিত্র হতে
ব্যালিস্টিক মিসাইল ধ্বংস করে দিলো শোষণের বীভৎস মুখ!
ক্যামন হবে তবে! পৃথিবীর রূপ?
•••ঠাহর•••
বেনজির শিকদার
মে ২০২০, নিউ ইয়র্ক