নারী ও নদীর গল্প –অনুপম সৌরিশ সরকার
নারী বসে ছিল মজা নদীটির তীরে
নদীর বুকে বালি আর বালি চড়া
নদী সে তো বিগত যৌবনা
বৈধব্যের সাজে ধূসর তার জীবন|
নারী তার বুক জুড়ে তৃপ্তি ঘনঘোর ,
পুরুষটি পাশে সজল হৃদয় সবুজ ,
নারী সে তো পূর্ণ যুবতী প্রাণ |
নদীর জন্য নারীর মনে সমবেদনার ছায়া |
তবু নদী ও তো নারী ,
ঈর্ষায় তার আগুন আগুন চোখ
নবীন বধূর সহানুভূতি তে গায়ে লাগে তার ছ্যাঁকা ,
বিধবা শাশুড়ির মতো দাঁতে দাঁত চেপে
অস্ফুটে সে বলে ,
“ছুঁড়ি তোর বড্ডো দেমাক দেখি
তোর গুমোর যদি না ভেঙেছি আমি …|”
রইলো নদী সুযোগের সন্ধানে ,
ঝড় তার প্রতিবেশী হয় , তাকেই বলে সে ,
“আর যে সহ্য হয় না সই
একটা কিছু তো কর |”
একদিন এলো প্রবল সাইক্লোন
বৃষ্টি হলো অবিশ্রান্ত পাগল
ভরলো নদী কানায় কানায় জলে
সে কী ভীষণ স্রোত—ভয়ঙ্কর তেজ !!!
এক ছুটে সে ভাঙলো সেই নারীটির ঘর
ভাসিয়ে নিয়ে চললো নারীর
বুকের সন্তান—-প্রবল উল্লাসে |
নারীটির বুক জুড়ে হাহাকার বালুচর |
তবু এই গল্পের আরও ছিল বাকি |
ভুলে গিয়েছিলো নদী—
মানুষ পারে জেগে উঠতে ধ্বংসস্তূপ থেকে
মানুষ পারে গড়ে নিতে ভাঙা জীবন তার
নতুন করে নতুন উদ্যমে |
অতএব জল সরতেই আবার নারীটি
বাঁধলো তার ঘর ,
পুরুষটি হাত বাড়িয়ে দিতেই
নারী আবার পূর্ণগর্ভা চাঁদ !!