ব্লেন্ডারে রচিত
কামাল খাঁ
মাথা ঘুরছে… ক্রমাগত সন্নিকটবর্তী হচ্ছে
প্রিয় পুত্রের মুখচ্ছবি, কাচের আলমারিতে
রবীন্দ্ররচনাবলী আরও আরও অর্ধপঠিত বই,
ভেতরে লোরকার ষাঁড়ের মতো বেপরোয়া
অন্ধগতি-ঘূর্ণি ভর করছে আমার ঘাড়ের ওপর।
আর মাথা ক্রমাগত মেশিনের মতো ঘুরছে
আগত হচ্ছে লতাপাতা,প্রেম-প্রীতি,ভালোবাসা,
দ্রোহ
উব্দেগ ও ঈর্ষা দ্রবীভূত হচ্ছে-
মল্ডিংমেশিনে পাক খাচ্ছে আড্ডার চক্রছবি,
কৈশোরের কত ভালোলাগা ছায়াচিত্র।
আর রাত ও দিনের বহু বহু চোরাস্রোত
আমাকে বোবা করে রাখছে।
কতক দৃশ্যে আর কতক অদৃশ্যে
যা কিছু বাইরে আছে আর যা সব ভেতরে রক্ত-রুদ্ধ আয়নায় আয়নায় টুকরো টুকরো জীবন।
একগোছাচুল, কানের খানিক অংশ
মুখের একপাশ মানুষবৎ মানুষবৎ বলে
ধারনা জন্মে, তবে তা মানুষের মতোই কেবল
আরো আছে ক্লেদ ও গ্লানি ঘাম ও কামের দহনে দলিত পিচ্ছিল শরীরের ভগ্নাংশ। তিক্ততা আছে;
আছে লবণের স্বাদযুক্ত শব্দসমূহ।
বইখাতা ম্যাগাজিন একটা দীর্ঘজীবন
মাঝে মাঝে প্রতিঘন্টায় ঘুরপাক খায়
হাওয়ায় ঘুরপাক খায়,আগুনে ঘুরপাক খায়,
বরফশীতল জলে ঘোরে…
যেন না-থামা এক ছাপাখানা চলছে তো চলছেই…
রোলের পর রোল ছাপছে, সকাল ছাপছে , বিকাল ছাপছে
চন্দ্র-সূর্য আর এক অন্ধ গীতিকারের মুখ।
অনাগত মূক ও বধির পরিকল্পনা হাত পা মেলে
ছাপাঙ্কিত হয়ে ফুটে উঠছে এই ঘূর্ণনের ভেতর।
আলো ও অন্ধকার আর এইসব লুকিয়ে থাকা
ব্যাক্তিগত বিকারগ্রস্ততা-
ইটের সুরকিতে,বালুতে দলিত-মথিত হচ্ছে মগজে,মেশিনে।