আমি এক মৃত প্রজাপতি
কবি নন্দিনী খান
হায় অনুজীব, তুমি কতটা পাষাণ
মুহূর্তেই তুচ্ছ করে দাও জননীর ভালোবাসা
পিতৃস্নেহ, সহোদরের আদর-
প্রিয়জনের করুন চোখের চেয়ে থাকা।
তুমি তখন দেহের প্রতিটি অনুতে স্বৈরাচারী হিটলার
নিমিষে বন্ধ করে দাও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া
ভুলিয়ে নিয়ে যাও মৃত্যুর গভীর খাদপ্রান্তে
তখন তুমি দুঃস্বপ্নের ড্রাকুলা
আমায় নিয়ে খেলা করো সযতনে।
মহামারি করোনা,
তোমাকে দেখেছি আলো-আধারিতে
হৃদয়ে প্রবাহমান রক্তের খুব কাছে থেকে
ঘুমঘোরে প্রতিটি নিঃশ্বাসে রক্ত মাংসে
মাতাল মাতাল পায়ে যমদূত হয়ে হেঁটে বেড়াও শরীরে।
একটি বারের জন্যও ভয় পাইনি তোমার রক্ত চোক্ষুকে
তোমার নির্মমতা যতই দংশিত করুক সময়ে অসময়ে।
যখন দেহের শিরা উপশিরায় ঘাতক বুল্ডোজার চালিয়েছ
তখন আমি এক মৃত প্রজাপতি, শূন্যে উড়িয়ে নিয়ে গেছে হাওয়া
ভুলে গেছি জাগতিক সব চাওয়া পাওয়া।
প্রতিটি নির্ঘুম রাতে তুমি ছিলে এক ছদ্মবেশী অশ্বারোহী
আমাকে নিলামে তুলে করেছ দরদাম বেচাকেনা
দাসত্তের শেকল পরিয়ে চালান করে দিতে চেয়েছ মৃত্যুর কাছে,
কখনো সম্রাট হয়ে জেঁকে বসেছো বুকের ময়ূর সিংহাসনে।
প্রতিটি মুহুর্ত ছলনার পাশা খেলেছ কৃষ্ণের ছলে।
খুব জানতে ইচ্ছে করে,
তুমি কোথা থেকে এলে আর কোথায় বা যাবে?
দিনের পর দিন কার নির্দেশে
মৃত্যুর ভয়াল হিমাবাহ ঠেলে দিচ্ছ মানব সভ্যতার দিকে?
এভাবে কত কাল মানুষকে ভাসাবে দুর্ভাগ্যের নোনাজলে
স্বৈরাচারের পতাকা ওড়াবে লাশের মিছিলে।
তুমি একটু শান্ত হও স্রষ্টার বেপরোয়া অণুজীব
এবার তুমি ফিরে যাও।
৩০/০৯/২০