আমি লালবাজারেচ্ছেলে
কবি অসিত কর্মকার
নাটোরস্থ ‘লালবাজার’ নিছক একটি পাড়ার নামই না,
এপাড়ার সুনাম ছিলো ঢের এখনো আছে জানি,যদিও
বা সুদীর্ঘকাল পাড়াত্যাগী তবু নাড়ীর টান তো বহালই,
সেই টান থেকেই দুরন্ত যৌবনের কিছু কথা মুখগ্রন্থের
পাতায় আপনাদের সম্মুখে স্মৃতিচারণ না করলেই নয়।
ছোটবেলায় ফুটবল খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন ছিল খুব,
আমাদের পাড়ায় খেলার কোনো মাঠ নেই,মাঠ বলতে
কালীবাড়ীর সামনে আর চাদের বাড়ীর পিছন দিকটা
মানে নাই মামার চে’ কানা মামা ভালো সেরকম।
তখন শীর্ণশরীর,দুরন্ত ফুটবল খেলতে গেলে
শরীর কাঠামো মজবুত হওয়া দরকার সে গুড়েও বালি,
রণেভঙ্গ আশ
এই দেহদৌর্বল্য কারণে খেলোয়াড় না হওয়ার দুঃস্বপ্ন
প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেড়াতো দুর্নিরোধ্য এ অধমকে।
জয়কালীবাড়ীর বিপরীতে আমার একটা বাড়ী আছে
তৎকালীন সময়ে সেখানে অফসেট প্লেট-প্রসেসিংসহ
অফসেট প্রিন্টিংপ্রেসের প্রতিষ্ঠানও গড়েছিলাম আর
সেখান থেকেই মনের মধ্যে জমে থাকা সঞ্চিত দুঃস্বপ্ন
অঙ্কুর নামক সামাজিক সংগঠনে উপচে দিয়ে বাস্তবে
স্বপ্ন প্রতিষ্ঠার প্রতিজ্ঞা করি।
ছেলেরা অঙ্কুরেই বিনাশ হোক চাইনি,
তাই স্বপন-রকেট-সুজন-বিপ্লব-
বাবিন গৌতম-ফৌজ-পনা- শঙ্কু আরও একগুচ্ছ কুশাঙ্কুরের
শরীর দিয়ে ক্ষুধিত বাসনা হাসিলের লক্ষ্যেই ক্রিকেট
দল ঘোষনা করি।যে দলটার নাম পূর্বঘোষিত ‘অঙ্কুর’।
ঐ কর্মযজ্ঞে আত্মনিয়োগ করেছিলাম তা শুধু
ক্ষুধিত বাসনা হাসিলের জন্যই নয়,অন্য কারণও ছিলো বটে
তা হলো অন্যান্য পাড়াসহ লালবাজারের
বিপথগামী সমস্ত ছেলেদের খেলাধুলার মধ্যে মনোনিবেশ-
করিয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা,
এখানেও সফল হয়েছি আমি।
তা নাহলে নাটোর জেলা ক্রিড়াসংস্থার আয়োজনে
সেই টুর্নামেন্টে কখনই চ্যাম্পিয়নশিপের
গৌরব অর্জন করতে পারত না সবার প্রিয় দল অঙ্কুর,
খেলাধুলা নিয়েও কতোজনের কতো টিপ্পনী, যেমনটা
লিখালিখি নিয়ে কারো কারো ভিতরের সুরতটা দেখি।
যতটুকু হোক,ক্ষুদ্র এক জীবনে এও যে প্রাপ্তি এক।
নাটোরস্থ লালবাজার নিছক একটি পাড়ার নামই না;
এ পাড়া মায়া জড়ানো এক-গর্ভধারিণী মায়ের মতো।
আজ এ পর্যন্তই,সঞ্চিত যতো কথা আরেকদিন হবে,
ভালো থেকো ক্লাব অঙ্কুর, ভালো থেকো সব সদস্যরা।
১৫-০৭-২০২১ ইং