আর তামাশা নয় প্লিজ!-জাকির তালুকদার
ঢাকার পূর্ব রাজাবাজার লকডাউন করলেন। লাভটা কী হবে?
১৪ দিন পরে খুলে দেবেন। তারপর সব একাকার হয়ে যাবে। এমন তো নয় যে ১৪ দিন পরে ঢাকা বা সারাদেশ করোনামুক্ত হয়ে যাবে।
টোলারবাগের উদাহরণ টানছেন। কিন্তু মনে রাখছেন না যে টোলারবাগের লকডাউন শেষ হওয়ার আগেই সারা দেশে সাধারণ ছুটি নামক ঢিলে লকডাউন শুরু হয়েছিল।
এখন করণীয় কী?
সারা দেশে একযোগে একমাসের কঠোর কারফিউ একমাত্র কার্যকর পথ।
কিন্তু সরকার সে পথে যাবে না।
কেন যাবে না সেই প্রসঙ্গ নিয়ে নোংরা ঘাঁটতে চাই না।
দ্বিতীয় পথ হচ্ছে বেশি বেশি টেস্ট এবং আক্রান্তদের আইসোলেশন।
টেস্টের যে অবস্থা, টেস্টের জন্য সাধারণ মানুষের যে ভোগান্তি, তাতে তা নিয়ে আশাবাদী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
র্যাপিড টেস্ট কিট সমাধান হতে পারে। গণস্বাস্থ্যের টেস্ট কিট না নিতে চাইলে অন্যটা আনুন। WHO এর অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করে মানুষকে বিপদে ফেলে রাখবেন না। আর WHO যে কোনো ফেরেশতা-প্রতিষ্ঠান না, সেটি বিশ্ববাসী জেনে গেছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যবিভাগ দেশের মানুষের কথা না ভেবে কেন সেই প্রতিষ্ঠানের গোলামি করে যাবে?
তাছাড়া পিসিআর টেস্টেও যে অনেক ভুল রিপোর্ট আসে তা তো এতদিনে আপনারাও জেনে গেছেন।
আর কোনো বিকল্প আমার জানা নেই। সম্ভবত আপনাদেরও জানা নেই। থাকলে দেশ এত বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ত না।
আমরা ব্যক্তিকে গালি দিই দুর্নীতিবাজ বলে- জাকির তালুকদার
অবশ্যই অনেকেই দুর্নীতিবাজ।
কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে রাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনার মধ্যেই আছে দুর্নীতির বীজ এবং দুর্নীতির সুযোগ।
ব্যক্তিগতভাবে সৎ আমলা আছেন, সৎ পুলিশ আছেন, বিভিন্ন বিভাগে সৎ কর্মকর্তা আছেন। কিন্তু গলদ রয়েছে আমলাতন্ত্রের মধ্যেই। তাই সৎ অফিসাররা অত্যাচারিত হন, বঞ্চিত হন, তাদের বার বার পানিশমেন্ট পোস্টিং হয়।
সেই ব্রিটিশ আমলের আমলাতন্ত্র-বুরোক্র্যাটতন্ত্র চলে আসছে। পরাধীন দেশের নাগরিকদের সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার জন্য যে ধরনের আমলাতন্ত্র তৈরি করেছিল ব্রিটিশরা, তা একটি স্বাধীন স্বাধীন দেশে চলতে পারে না। সেকথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো। তার কথা ছিল তোমার দলের লোকদের দিয়ে এদেরকে রিপ্লেস করতে হবে। তারা ভুল করবে কিন্তু দেশের মানুষের মঙ্গলচিন্তা থেকে সরে আসবে না। কিন্তু শেখ মুজিবের কিছু করার ছিল না। তার দলের লোক আর ফিদেল কাস্ত্রোর দলের লোক তো এক নয়।
কাজেই এখনকার আন্দোলনের লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি দলকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে আরেকটি একই রকম দলকে ক্ষমতায় বসানো নয়। আন্দোলন হতে হবে এমন একটি দলের ক্ষমতা দখলের জন্য যারা আমূল পরিবর্তন আনবে প্রশাসনিক কাঠামোতে।
সমস্যা হচ্ছে সেই দলটাই নেই।
তাই এখনকার প্রধান কর্তব্য সেই রকম একটি দল বা জোট প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াকে সহযোগিতা করা।