একটি ধন্যবাদ প্রস্তাবের খসড়া
কবি গোলাম কবির
ঘর হতে বের হয়ে যখন রাস্তায় হাঁটো,
তখন তোমার চোখকে অবনত রাখো।
কারণ এই চোখই তোমাকে সর্বপ্রথম
নিষিদ্ধ বিষয় বা জিনিসের দিকে আকৃষ্ট করে,
তোমাকে বানায় পাপী।
ওই চোখেরই একটুখানি দৃষ্টি তোমাকে-
প্রলুব্ধ করে অন্যায় পথে পা বাড়ানোর জন্য,
তোমাকে লোভী বানায় যা তোমার নেই
তার জন্য বুকের ভিতর শূন্যতা সৃষ্টি করে,
মানুষের বাইরের চাকচিক্যময় জীবন
তোমাকেও হাতছানি দিয়ে ডাকে প্রাচুর্যের দিকে।
তারচেয়ে দৃষ্টি অবনত রেখে
নিজের দিকে একবার গভীর দৃষ্টি ফেলে তাকাও,
দেখো ঐ যে একজন অন্ধ, বিকলাঙ্গ মানুষটির
কথা ভেবে একবার গভীর সন্তুষ্টি নিয়ে
নিজে নিজেই বলে ওঠো,
হে মহান সৃষ্টিকর্তা – তোমাকে ধন্যবাদ।
তারপর ভাবতে থাকো-
এই পৃথিবীতে তো কতো প্রাণীই আছে,
যেমন – কুকুর, বিড়াল, কাক, শকুন, ইঁদুর,
শুকর অথবা বাঘ না হয়ে
পেয়েছো এই সাধের মনুষ্য জীবন!
অতএব আবার একবার সেই মহান সত্তার কাছে
নত হয়ে বলো, হে মহান স্রষ্টা,
তোমাকে ধন্যবাদ যে তুমি
আমাকে এসব না বানিয়ে পাঠিয়েছো মানুষরূপে!
আবার হাঁটতে থাকো পথে আর ভাবতে থাকো
তোমার আশেপাশের মানুষজন এর কথা –
কেউ হয়তো একবেলা খেতে পায়,
দু’বেলা উপোস করে,
আবার এমনও ভাবতে পারো কারো
হয়তো সংসারই নেই, চালচুলোর ঠিক নেই!
অথচ তোমার ঘর আলো করে রয়েছে
সুন্দরী স্ত্রী ও সন্তানেরা!
এসব ভেবেও তো একবার
গভীর শুকরিয়া আদায় করে বলতে পারো,
হে মহান স্রষ্টা, তোমাকে ধন্যবাদ আমাকে
এসবকিছু দিয়েছো তার জন্যই এই শুকরিয়া।
এইভাবে খুঁজে খুঁজে নিজের প্রাপ্তি গুলোর
প্রত্যেকটির কথা একবার স্মরণ করে গভীর সন্তুষ্টি নিয়ে
তাঁর অপার কৃতজ্ঞতার কথা স্মরণ করে
বলতে থাকো হে মহান স্রষ্টা, তোমাকে ধন্যবাদ।
এইভাবে ভাবতে ভাবতে এক সময়
তোমার পথও ফুরিয়ে যাবে এবং তুমিও তোমার আরাধ্য
নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে যাবে।
সুতরাং কি পাওনি তার হিসেব না করে
কি পেয়েছো তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাও,
তুমি ছোটো হবে না।