ওইচলন বিলে গভীর রাতে পথ হারানোর ৪০ পর্যটককে উদ্ধার করল পুলিশ
নাটোর কণ্ঠ: নওগাঁ থেকে চলনবিল বেড়াতে এসে গভীর রাতে পথ হারানো ৪০ পর্যটককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নাটোর জেলা পুলিশের ৪টি টিম আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় রাত আনুমানিক ৪ টার দিকে গভীর চলনবিল থেকে উদ্ধার করে।
নাটোর জেলা পুলিশের প্রেস রিলিজে বলা হয়, জেলা-নওগাঁর ৪০ জনের একটি দল (যার মধ্যে ০৫ জন শিশু, ১২ জন মহিলা এবং ২৩ জন পুরুষ) চলনবিলের তাড়াশ, গুরুদাসপুরের বিলসা বিল বেড়ানো শেষে নাটোর জেলার সিংড়া থানাধীন চলন বিলস্থ তিশীখালী মাজারে গত ২৬-০৮-২০২০ খ্রি. আত্রাই হতে ০১ টি নৌকাযোগে আসেন। তারা সিংড়া থানাধীন তিশীখালীর মাজারে গত ২৬-০৮-২০২০ খ্রি. সময় আনুমানিক সন্ধ্যা সোয়া নয় ঘটিকায় পৌঁছে । তারা একই তারিখ সময় আনুমানিক রাত্রী সাড়ে ১০ ঘটিকায় নৌকাযোগে আত্রাই এর উদ্দেশ্যে রওনা করে । উক্ত ৪০ জনের বেড়ানোর দলটি প্রায় তাদের নৌকাযোগে ০৩ ঘন্টা পথ অতিক্রম করার পর তারা বুঝতে পারে তাদের পথ হারিয়ে ফেলেছে । কিন্তু চলনবিলের মধ্যে তারা তাদের দিক কিংবা অবস্থান বুঝতে পারে না । তারা প্রকৃতপক্ষে কোন জায়গায় অবস্থান করছে কিংবা কোন দিকে যেতে হবে তারা তা বুঝতে পারছিল না । উক্ত ৪০ জন চলনবিলের মধ্যে হারিয়ে যায় ।
গতকাল দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোতে ০৩ নম্বর সতর্ক সংকেত চলছিল । চলনবিল এলাকাতে বৃষ্টি হচ্ছিল । সাঁ সাঁ শব্দ হচ্ছিল । বড় বড় পানির ঢেউ, কোথাও কোন বাড়ি ঘর নেই, নেই কোন আলো, জীবন ঝুঁকির সম্মুখে, নেই কোন দিক, ভেবেই নিয়েছিল তারা এ বিপদ কাটিয়ে উঠতে পারবে না । তাদের মধ্য থেকে পিয়াস সরকারের মনে পড়ে “৯৯৯” এর কথা । সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে “৯৯৯” এ । “৯৯৯” হতে তাদের কাছে তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তারা তাদের অবস্থান কোনভাবেই বলতে পারছিল না । “৯৯৯” হতে ফোন দেয় অফিসার ইনচার্জ, সিংড়া থানাকে ।
অফিসার ইনজার্জ, সিংড়া থানা বিষয়টি তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপার, নাটোরকে অবগত করে । পুলিশ সুপার, নাটোরের নির্দেশক্রমে অদ্য ২৭-০৮-২০২০ খ্রি. রাত্রী দেড় ঘটিকায় সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে সিংড়া ও গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ০৫ টি টিম কাজ শুরু করে ।
পুলিশ সুপার, নাটোর সার্ক্ষণিক বিষয়টি মনিটরিং করেন এবং পিয়াস সরকারের সাথে একাধিকবার ফোনে কথা বলেন । পিয়াস সরকার পুলিশ সুপারকে জানায় যে, সাঁ সাঁ শব্দ হচ্ছে, বড় বড় পানির ঢেউ, কোথাও কোন বাড়ি ঘর নেই, নেই কোন আলো, তাদের জীবন ঝুঁকির সম্মুখে, তারা কোন দিক খুঁজে পাচ্ছে না ।
আধুনিক প্রযুক্তি ও এলআইসি, ঢাকার সহায়তায় কলকৃত ব্যক্তির রাত্রী একটা ৩৪ মিনিটে অবস্থান জানা যায় সিংড়া থানাধীন বিলদহর এলাকায় । সেখানে গিয়েও তাদের পাওয়া যায় না । পুনঃরায় রাত্রী পৌনে দুইটায় কলকৃত ব্যক্তির অবস্থান জানা যায় গুরুদাসপুর থানাধীন যোগেন্দ্রনগর স্থানে । সিংড়া ও গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ০৫ টি টিম অবশেষে রাত্রী ৪ ঘটিকায় তাদের সন্ধান পান । তারা কখনো ভাবেনি অজানা গভীর বিল থেকে তাদের এতো দ্রুত সন্ধান করে পুলিশ সঠিক পথ দেখিয়ে দিবে । পরবর্তীতে সিংড়া থানা পুলিশ তারেদরকে আত্রাই সীমানা পর্যন্ত রেখে আসে ।