নাটোরকন্ঠ: খাবারের খোঁজে দলছুট হয়ে নাটোরের লোকালয়ে ছুটে এসেছে একটি হনুমান। কয়েকদিন ধরেই নাটোরের বিভিন্ন এলাকায় হনুমানটি ঘোরাফেরা করছে।বিষয়টি জেনেও উদ্ধার করার ব্যাপারে তেমন কোনো আগ্রহ নেই সংশ্লিষ্টদের। সর্বশেষ বুধবার বিকেলে নাটোরের শহরতলি শ্রীধরপুর শিবমন্দির এলাকায় হনুমানটির দেখা মেলে।দৃষ্টিগোচর হওয়া মাত্রই উৎসুক জনতা হনুমানটিকে আম, কলা, পাউরুটিসহ বিভিন্ন রকমের খাবার খেতে দেয়।
জানা যায়,গত মপ্তাহে হুনুমানটি হয়বতপুর এলাকায় বাজারে অবস্থন করছিলো। বাজারের একটি চালায় অবস্খান নিলে স্থনীয়রা বিভিন্ন খাবার দিলেও উৎসুক জনতার একাংশ মাঝে মাঝে বিরক্তও করছিলো বলে জানায় স্থানীয়রা। পরে হুনুমানটি রাতে বেলায় স্থান পরিবর্তন করে শ্রীধরপুর এলাকায় চলে আসে। অবস্থান নেয় শিতলা মন্দীর এলাকার আম বাগানে। সেখান থেকে মাঝে মাঝে খাবারের সন্ধানে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে। নতুন আর ভালোলাগা থেকে মানুষ এখন পর্যন্ত খাবার দিচ্ছে। কিন্তু কতক্ষন দেবে তা বলা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে আম বাগানের আম ক্ষতি করছে বলে অভিযোগ করছে বাগান ব্যাপারীরা। স্থানীয়দের আশংকা প্রাণীটিকে মেরে না ফেলে বখাটেরা।
তবে স্থানীয়রা জানান, হনুমানটি এখনো কোনো মানুষের ক্ষতি করেনি। কিন্তু মানুষ দেখে হনুমানটি সবসময় ভয়ে থাকে। তবে হনুমানটি অনেকটা এই গ্রামের মানুষের আনন্দের খোরাক হয়েছে।
তাপস ঘোষ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা নাটোরকন্ঠকে জানান, হনুমানটি দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছে। মানুষের ভিড়ে হনুমানটি মাঝে মাঝে ভয়ে এদিকে-ওদিক ছোটাছুটি করছে।অনেক সময় হনুমানটি ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের বেশ আনন্দ দিচ্ছে। আমারা হনুমানটিকে কলা, পাউরুটি খেতে দিচ্ছি।তিনি অনুরোধ করেন ইচ্ছে করলে স্থানীয় প্রশাসন হুনুমানটিকে নাটোর উত্তরা গণভবনে অবস্থিত মিনি চিড়িয়াখানায় রাখতে পারে।এতে প্রাণীটির প্রাণ রক্ষার পাশাপাশি মানুষের আনন্দের বিষয় হবে। তাছাড়া বিপরীত লিঙ্গের আরেকটি হুনুমান সেখানে রাখলে সঙ্গী পাবার পাশাপাশি প্রজনন সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রাণী বিষেজ্ঞরা বলেন, এ প্রাণী আমাদের প্রকৃতির সম্পদ, প্রকৃতিতেই হুনুমান বিচরণ করে। এক সময় এ অঞ্চলে হুনুমান, মেছোবাঘ, বাঘডাসা, বনবিড়াল, বণ্য শুকর, প্রচুর বণ্য প্রাণীর বসবাস ছিলো। মানুষ ও হিংশ্র এসব প্রাণীর বসবাস ছিলো পাশাপাশি। খাবারের প্রয়োজনে মানুষের বাড়িতে হানা দেওয়ার ঞটনাও ছিলো স্বাভাবিক। তবে ক্রমবর্ধমান মানুষ বৃদ্ধির ফলে বন জঙ্গল ধ্বংশ করেছে মানুষ, ধা্বংশ হয়েছে মানুষের মানবিকতা, বিবেকবোধ, আর আবাসস্থল হারয়ে যাবার ফলে হারিয়ে গেছে এসব প্রাণী। তবে হনুমানকে বিরক্ত না করলে সে কারো ক্ষতি করবে না। এক সময় আপনা আপনি সে তার নিজের জায়গায় ফিরে যাবে।