দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠুন, রাজবংশী আমার সংস্কৃতি আমার ইতিহাস

0
341
Rajbonsi

দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠুন, রাজবংশী আমার সংস্কৃতি আমার ইতিহাস

শ্রী বিনয় বর্মণ।পেশায় শিক্ষক।নিজের অর্থে কোচবিহারের ভারত ক্লাব এলাকায় বাড়ি কিনেছেন।কিন্তু স্থানীয় কিছু অমানুষ ও তোলা বাজ বিনয় বর্মণের কাছে দশ লক্ষ টাকা তোলা চাইলেন।আর সেটা না দেওয়াতে বিনয় বর্মণ কে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে গেটে তালা লাগিয়ে দিলো দুষ্কৃতিকারীরা।আর তীব্র লজ্জার যে বিনয় বর্মণ রাজবংশী সমাজের মানুষ বলে তাকে এবং রাজবংশী সমাজকে অপমান করে নানাভাবে গালিগালাজ করে দুষ্কৃতিকারীরা। ভাবা যায়!কি দুঃসাহস!কি স্পর্ধা! রাজবংশী সমাজ রাজবংশী সংস্কৃতি ভাষা কৃষ্টি আর উত্তরের ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন।অত্যন্ত সমৃদ্ধ।অত্যন্ত উর্বর। ভূমিপুত্র রাজবংশী সমাজ ও সংস্কৃতি আমাদের অহংকার।আমাদের গর্ব।

১৯৪৭ এ দেশভাগের পরে কোচবিহারের মহারাজা পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তুদের জন্য রাজ্যের সীমানা খুলে দিয়েছিলেন। খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন মহারাজার প্রশাসন। উত্তরবঙ্গে যত স্কুল কলেজ রয়েছে তার নিরানব্বই শতাংশ রাজবংশী জোতদার ও ধনীদের দেওয়া জমির ওপর। পূর্ববঙ্গ থেকে আসা লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তুদের বাড়ি ও জমি দিয়ে বাঁচিয়েছিলেন রাজবংশী সমাজ। ভাওয়াইয়া, কুষাণ,সাইটল,বিষ হরি,পালাটিয়া এই সব লোকসংস্কৃতি অত্যন্ত বর্ণময়। আন্তর্জাতিক স্তরের।রাজবংশী কবিতা বিশ্ব মানের। আমরা গর্বিত চিলা রায়ের জন্য। আমাদের অহংকার রায়সাহেব পঞ্চানন বর্মা। রাজবংশী সমাজের মানুষেরা অত্যন্ত সহজ সরল।অতিথি বৎসল। তারা বুকে জড়িয়ে ধরতে জানেন।

কিন্তু বরাবরই কিছু মানুষ এই রাজবংশী সমাজকে অসম্মান করেছেন,হেয় করেছেন,অসম্মান করেছে,ব্যবহার করেছে, বঞ্চিত করেছে,চেপে রাখবার চেষ্টা করেছে। সেই ট্র্যাডিশন আজও চলে আসছে। কোচবিহার মহারাজার সঙ্গে ভারত সরকারের ভারত ভুক্তির চুক্তির বেশিরভাগ শর্তই লঙ্ঘন করা হয়েছে। আমার ছোটবেলায় চোখের সামনে ভেঙে ফেলতে দেখেছি ঘোড়াশাল, খেলাঘর, ইন্দ্রজিতের বাড়ি । বুঝিয়ে ফেলা হয়েচ্ছে শহরের প্রচুর পুকুর। আর এই সবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলেই তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী তকমা দেওয়া হয়। বিনয় বর্মণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজবংশী বিভিন্ন সংগঠন রাস্তায় নেমেছেন। গর্জে উঠেছেন।ধিক্কার জানিয়েছি আমরাও।

আর আজ সকালে মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছেন। এই নিয়ে চারজন চরম ঘৃণ্য অপরাধী গ্রেফতার হলেন। এটা অত্যন্ত একটা সাফল্য। যদি আন্দোলন না গড়ে তুলতেন বিভিন্ন রাজবংশী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো তাহলে একজন অপরাধীও আজ গ্রেফতার হতেন না। এখানেই আন্দোলনের অনেকটাই সফলতা। অপরাধীদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি। আর রাজবংশী সমাজকে অপমান করবার জন্য অপরাধীদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবার দাবি জানাচ্ছি। কুর্নিশ সকল প্রতিবাদীদের। শ্রীমতি স্বপ্না বর্মণ।তার পরিচয় নুতন করে আর দেবার কিছু নেই।তিনি উত্তরের অহংকার। ভারত ও এশিয়ার গর্ব। স্বপ্না বর্মণ কে যেভাবে হেনস্থা ও অপমান করা হয়েছে সেটাও কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তীব্র প্রতিবাদ।তীব্র ক্ষোভ জানাই। আসলে উত্তর মানে তো উপনিবেশ। উত্তরবঙ্গ কেন এভাবে আর বঞ্চিত হয়ে থাকবে! সমস্ত অপমান ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এর পর থেকে সবাইকে একসাথে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শ্রদ্ধা জানাই ভূমিপুত্র রাজবংশী সমাজ ও সংস্কৃতিকে।

বিষয় পশ্চিমবঙ্গ, সংগ্রহ ইন্টারনেট

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধউচিতের ভাত নেই -কবি মুতাকাব্বির মাসুদ‘এর কবিতা
পরবর্তী নিবন্ধশারীরিক প্রতিবন্ধী রাসেল বাঁচতে চায়

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে