নাটোর কন্ঠ : ৭৬০ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে নাটোর চিনিকলের ৩৮ তম আখ মাড়াই মৌসুমের উৎপাদন শুরু হয়েছে। মোট লোকসানের মধ্যে গত বছরের লোকসান ছিল ২৯ কোটি টাকা। এছাড়া চিনি উৎপাদনের সর্বনিম্ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেই
শুক্রবার থেকে চলতি ২০২১-২২ আখ মাড়াই মৌসুমে উৎপাদন শুরু হয় । আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটায় চলতি মৌসুমের মাড়াই কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। শুক্রবার বিকেলে ডোঙ্গায় আখ নিক্ষেপ করে মাড়াই মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের পরিচালক কৃষিবিদ আশরাফ আলী, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ও পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলিসহ মিলের কর্মকর্তা সহ আখ চাষী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নাটোর চিনিকল কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানাযায়, চলতি ২০২১-২২ মাড়াই মৌসুমে ৩৫ কার্য দিবসে ৩ হাজার ২শ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। আখের প্রাপ্যতা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন।
মোট ১৮ হাজার একর জমি থেকে এই আখ পাওয়া যাবে। চিনি আহরনের হার ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৫০ ভাগ। গত ৩৮ মৌসুমের মধ্যে এবারই সর্বনিন্ম পরিমান উৎপাদনের লক্ষ নিয়ে নাটোর চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুম শুরু হয়।
নাটোর চিনিকলে চলতি ২০২১-২২ মৌসুমের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের পরিচালক (ইক্ষু উন্নয়ন ও গবেষণা) কৃষিবিদ মোঃ আশরাফ আলী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-
নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি, নাটোর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোঃ আবু বকর, নাটোর জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক দিলীপ কুমার দাস,আখচাষী নেতা ময়েজ উদ্দিন সরকার , মোসলেম উদ্দিনসহ শ্রমিক কর্মচারী নেতৃবৃন্দ।
কৃষিবিদ মো. আশরাফ আলী বলেন, চিনিশিল্পে বর্তমানে ক্রান্তিকাল বিরাজ করছে। দেশের নয়টি রাষ্ট্রায়াত্ত চিনিকল চালু আছে, ছয়টি বন্ধ হয়ে গেছে। সকলের সম্মিলীত প্রচেষ্টায় চিনি শিল্প পুরনো গৌরব পুনরুদ্ধার করে লাভজনক অবস্থানে উপনীত হবে বলে আমরা আশাবাদী।
চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মো. আবু বকর বলেন, গত আখ মাড়াই মৌসুমে নাটোর চিনিকলে আখ মাড়াই করে চিনি আহরনের হার ছিলো সর্বনি¤œ ৫.২৯ শতাংশ। অথচ অতীতে নাটোর চিনিকল গৌরবের অবস্থানে ছিলো। ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিগত পাঁচ থেকে ছয় বছর নাটোর চিনিকল লাভজনক অবস্থানে ছিলো।
নাটোর চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) মোঃ জামান হোসেন জানান, নাটোর চিনিকলের ক্রমপুঞ্জিভূত লোকসান ৭৬০ কোটি টাকা। গত আখ মাড়াই মৌসুমে লোকসান ছিলো ৮৮ কোটি টাকা। এরমধ্যে ব্যাংক ঋণের সুদই ছিলো ৫৮ কোটি টাকা এবং অপারেশন কাজের লোকসান ছিলো ২৯ কোটি টাকা। চলতি মৌসুমেও একই পরিমাণ লোকসানের আশংকা রয়েছে।