নাটোর কন্ঠ : অবশেষে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের কোলাকান্তনগর ও কুমরাগাড়ী বিলের কৃষি জমিগুলোর জলাবদ্ধতা নিরসনে জলার বাধ অপসারণ করে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা করলেন ইউএনও তমাল হোসেন।
এতে রক্ষা পেয়েছে জলাবদ্ধতার শিকার হওয়া ২ হাজার বিঘারও বেশি কৃষি জমি। সেই সাথে ফসল ফলানোর ব্যাপক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেয়েছেন বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা।
ভুক্তভোগী কৃষিজমির মালিক সফিন মন্ডল, আবুল সরকার, আলম শেখ, হানিফ, খোরশেদুল, পোলান প্রমাণিক, ডা. নজরুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, বিলের জমিগুলোতে খাদ্যশস্য ২৯, ৩৮ ও ৪৮ জাতের ধানসহ ভুট্টা এবং বেগুন, কড়লা, বটবটি, শসা, কাঁকরোল, মিষ্টিকুমড়াসহ সব ধরণের শাকসবজির জমি রয়েছে।
তাছাড়া জলাবদ্ধতায় পাটগাছের ক্ষতি হচ্ছিল। কুমরাগাড়ী বিল থেকে নন্দকুজা নদী পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ফিট দৈর্ঘ্যরে এই জলাটি পাকিস্তান আমল থেকে পানি নিস্কাশনের কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অথচ করিম মোল্লা নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বাধ দিয়ে জলাটি বন্ধ করে ঘর নির্মান করেন।
ফলে জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে নষ্ট হতে থাকে। ফসল রক্ষার্থে কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে চাপিলা ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় ওই বাধ কেটে পানি নিস্কাশন করার নির্দেশ দেন ইউএনও তমাল হোসেন।
চাপিলা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলাল উদ্দিন ভুট্টু ও ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন বলেন, জলার দুইপাড়ের বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ২৫ বছর আগে একটি কালভার্ট নির্মান করা হয়।
তাছাড়া কান্তনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ওই জলার ওপর পাকাসড়কে আরেকটি কালভার্ট নির্মান করা হয়েছে। প্রতি বর্ষা মৌসুমে এ জলা দিয়েই বিলের পানি নিস্কাশন হয়ে থাকে।
শুকনো মৌসুমে জলাটিতে করিম মোল্লা বাধ দেয়ার সময় নিষেধ করা হলেও ব্যক্তিমালিকানার জায়গা অজুহাতে পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করে দেন। ওই বাধের ওপর ঘরও নির্মান করেন তিনি।
এলাকার মানুষ এতদিন কিছু বলেনি। কিন্তু গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে বিলের পানি বের হতে না পারায় কৃষি জমিগুলো জলাবদ্ধতার শিকার হয়। মঙ্গলবার দিনভর ১০ জন শ্রমিক ওই বাধ কাটার কাজ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন জানান, ‘সরেজমিনে গিয়ে এ বিষয়ে গণশুনানী করা হয়েছে। জলাটি ব্যক্তিমালিকানার হলেও করোনার সময় এসব জমির ফসল ফলানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিলের পানি নিস্কাশনের জন্য জলার বাধ ও ঘর নির্মানকারীকে ডেকে অনুরোধ জানালে তারা রাজি হয়েছেন। জলাবদ্ধতা নিরসনে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে সুন্দরভাবে কাজটি করতে বলা হয়েছে।’