নাটোর কণ্ঠ, সিংড়া প্রতিনিধি : প্রিয় পাঠক ভূমিকায় বলা হয়েছিল- নাটোরের সিংড়ায় কোটি টাকার বাস টার্মিনাল ব্যবহার না করে মহাসড়ক দখলে যানজট ! নাটোরের সিংড়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্র চার মাথার মোড়, যানজট পূর্ণ প্রধান একটি এলাকা, ট্রাফিক মোড় বলা হলেও অনেক সময় এখানে ট্রাফিক দেখা যায় না। ট্রাফিক থাকলেও মহাসড়কের দুইপাশ জুড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকে সারিবদ্ধ বাস।
যাত্রী বাসে উঠানামা করে মহাসড়কের উপরেই। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাস টার্মিনাল ব্যবহার করে না কোন বাসের মালিক, শ্রমিকগণ। মহাসড়ক জুড়ে সব সময় সারিবদ্ধ গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকার জন্য চলমান গাড়ি যাতায়াতে বাধাগ্রস্ত হয়। মাঝে মধ্যেই ঘটে ছোটখাট দুর্ঘটনা।
যানজট পূর্ণ সিংড়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্র বাস টার্মিনালের সামনে, মহাসড়কে দীর্ঘদিন যাবৎ এমন অবস্থা। সরজমিনে দেখা যায় সেখানে কোন ট্রাফিক নেই। মহা সড়কের দুই পাশে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে বাস। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টির গুরুত্বের সহিত অতি দ্রুত সমাধান করবেন, এমনটাই প্রত্যাশা সিংড়ার সচেতন নাগরিকদের।
ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব।
সাতটি উপজেলায় গঠিত নাটোর জেলা, সদর উপজেলা ছাড়া কেবলমাত্র সিংড়া উপজেলায় রয়েছে, সিংড়া পৌর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল। বড়াইগ্রাম উপজেলার উপর দিয়ে দুই দুইটি মহাসড়ক থাকলেও নেই কোনো বাস টার্মিনাল আর নলডাঙ্গা, বাগাতিপাড়া, লালপুর উপজেলা উপর দিয়ে নেই কোন মহাসড়ক, ফলে বাস টার্মিনালের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কথায় বলে- “দাঁত থাকতে বাঙালি দাঁতের মর্ম বোঝেনা” উদ্বোধনের পর থেকেই বেদখলে সিংড়া পৌর টার্মিনাল। সিংড়া পৌর মেয়র বলছেন- দফায় দফায় বন্ধ টার্মিনালটি চালু করা হলেও নাটোর জেলা মোটর মালিক মালিক সমিতির অবহেলার কারনে বার বার বন্ধ হচ্ছে বাস টার্মিনাল। ফলে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে মহাসড়কে।
মোটর মালিক সমিতির নেতারা বলছেন- অপরিকল্পিতভাবে পৌর কর্তৃপক্ষ বাস টার্মিনালের সামনে মার্কেট নির্মাণ করার ফলে বন্ধু হয়ে গেছে টার্মিনাল। রাজস্ব খাতে আয় বৃদ্ধি হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ গলা টিপে হত্যা করেছেন বাস টার্মিনাল। দূরপাল্লার চালকরা বলছেন- বর্তমানে টার্মিনালের ভিতরে বাস নিয়ে তাদেরকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলছেন- টার্মিনালের সামনে ১৭টি দোকান ঘর তৈরি করে, প্রতি দোকান ঘর নয় লক্ষ টাকা জামানত নিয়ে মাসে দুইহাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টার্মিনালটি কোনই কাজে আসছে না। আর রাজস্বখাতে আয় দেখানো হলেও অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে অর্থ আত্মসাত করেছেন বর্তমান পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস।
সরেজমিনে দেখা যায় মহাসড়কের পাশে অবস্থিত পৌর বাস টার্মিনালটির প্রবেশদ্বার ও প্রস্থানের দ্বার আছে সুন্দর ভাবেই। একটি বাস টার্মিনালের ভেতরে প্রবেশ করে বাহির হওয়ার পরিকল্পনায় নির্মাণ করা হয়েছিল এই টার্মিনাল। কিন্তু টার্মিনালটি মাইক্রো গাড়ি, প্রাইভেট গাড়ির গ্যারেজ আর ট্রাক, বাস মেরামতের কাজে বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই নাটোর জেলা মোটর মালিক সমিতি, টার্মিনালের ভেতরে নতুন করে শ্রমিকদের বিশ্রামাগারের জন্য নির্মাণ করেছেন নতুন ভবন। আর মূল ভবনে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে অনেক ঘর।
যানজট পূর্ণ মহাসড়কে সরেজমিনে দেখা পাওয়া যায় না ট্রাফিক পুলিশ। হাটের দিনে সিংড়া পৌর কমিউনিটি ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও দায়িত্ব পালন না করে দেখা গেছে চা পানের দোকানে বসে আড্ডা করতে।
প্রিয় পাঠক বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন নাটোর কন্ঠের দ্বিতীয় পর্বে।