ভালাবাসার আজব শহর
কবি মেরিন নাজনীন শিপা
তোমাকে দেখার পর থেকেই এই শহরের চারপাশ কেমন যেন সুন্দর হয়ে যাচ্ছে। প্রচন্ড গরমেও আমি বসন্তের মাতাল বাতাস পাই। ভীষণ ট্র্যফিক জ্যামেও ভেতরটাতে প্রচন্ড হীম শীতল শান্তি আসে তোমার দূষ্টু মিষ্টি স্মৃতি কথা মনে করে, তখন একা একাই হাসি।
কখন যে মন্দলাগা অভ্যাস গুলো ভালো লাগতে শুরু করেছে টেরই পাইনি, এই যেমন ধরো, বোরিং ক্রিকেট খেলা দেখা, দুই আড়াই ঘন্টার সিনেমায় কি করে নিস্পলক চোখ রাখি মনের অজান্তে বিশ্বাসই হয়না।
তোমার পছন্দের খাবার খেতে গেলে তোমার মুখটাই কেন যেন সামনে আসে বলতে পারো।আচ্ছা তোমারও কি এমন হয়? আমার মতোন।
কি কোরে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে, মোমের আলোয় এই ব্যস্ত শহরে বাঁচা যায় তুমি না হলে বোধহয় জানাই হতো না। নিঃস্বার্থ ভালোবাসার শহর বলে যে, এই দেশে আজব একটা শহর আছে তাও দেখা হতো না।
বাতাসে সীসার পরিমান বেড়েছে, সূর্যরশ্মিতে অতিবেগুনী রশ্মি এর মাঝেই তোমার আমার মার্ক ফাইভ ফোকাসড করে ভালোবাসার রঙধনু রং টাকে, অক্সিজেন ছড়াচ্ছে কিনা তাই দেখতে। কি দারুণ! তাই না?
ব্যস্ত রুটিনে অফিস থেকে বিয়ের দাওয়াতে যেতে ল্যামপোস্টের আলোয় যখন লিপস্টিক দেই, চোখে কাজলরেখা আঁকি, স্বল্প আলোয় কি অদ্ভুত করে তাকিয়ে দেখো, এই বোকা পাখি বউকে কেঊ এমনি করে দেখে? তোমার এই দেখায় আমি অপ্রস্তুত হয়ে যাই তুমি প্রেমিক না স্বামী? বুঝে ঊঠতে পারিনা।
আজকাল একা একা শাড়ি পড়তে বড্ড বেশি ভয় লাগে,কুঁচির ভাঁজ যদি এলোমেলো হয়ে যায় কে ধরবে? শাড়ির সাথে সেফটিপিনের আটসাট গাঁথুনি কে দেবে তোমার মতো নিখুঁত করে। কপালের ঠিক মাঝখানটাতে যেখানে শূন্যরেখা আঁকা, তাতে লাল, কালো, নীল টিপ আঁকলে যে আমাকে লক্ষীমন্ত দুষ্ট বউ লাগে, তুমি না হলে হয়তো এই জীবনের ষোল আনাই মিছে হতো।
ঝুম বৃষ্টিতে গাড়ির গ্লাস ঊঠিয়ে চুমু খাওয়ার মাঝে যে রহস্যময় আনন্দ, বৃষ্টির জলে ভিজে, নেয়ে জ্বর বাধিয়ে একসাথে জড়াজড়ি করে লেপ টানাটানিতে যে সুখ তা তুমি না আসলে আমার কল্পনাতেও আসতো না। হাতে তুলে দেয়া তেতো নাপা ও মনে হয় অমৃত। কী আজব সুখ।
এতো সুন্দর করে শিল্পীর আঁকা ছবির মতো তোমার জীবনে আমাকে কি করে এঁকে নিয়েছো একটু বলবে। আমিও নিতে চাই।
ভালোবাসি যত বলি তৃষ্ণা মেটেনা।
যতবার বলি কম মনে হয়।
যতবার বলি মনে হয় এইতো প্রথম বললাম।
আগে কখোনো বলেছি, মনেতো হয়না
আমার সাধ মেটেনা কিন্তু সময় ফুরিয়ে যায়।