মাঠ কাঁপানো ফুটবলার লালপুরের গণেশ,শেষ বয়সে অর্থ সংকটে হচ্ছেনা চিকিৎসা,প্রয়োজন সহায়তা

0
383
Gonas

মেহেরুল ইসলাম, লালপুর, নাটোরকন্ঠ: মানুষের জীবন বড়ই বিচিত্র। কেউ জন্মগ্রহণ করে রাজার রাজপ্রাসাদে। আবার কেউ জন্মগ্রহণ করে দুঃখের কুটিরে। গণেশ ছোট্ট ঘরে জন্মগ্রহণ করলে হবে কি তার ফুটবল প্রতিভা তাকে প্রতিষ্ঠা করেছিল উচ্চ আসরে। সকল মানুষের মণিকোঠায় স্থান পেয়েছিল একদিন। সেই গণেশ এখন রোগে-শোকে অভাব-অনটনের কারণে বিপর্যস্ত বিছানায় শুয়ে আছে হতাশার কাফনে জড়ানো একটি জীবন্ত লাশ। নিত্যনৈমত্তিক প্রস্রাব-পায়খানা খাওয়া-দাওয়া গোসল করা সবই এখন পরের উপর নির্ভরশীল। যে গণেশ কে দেখার জন্য বা যার খেলা দেখার জন্য নাটোরের লালপুর উপজেলার মানুষগুলো পাগলপারা ছিল তারা কি গণেশকে একেবারেই ভুলে গেছে?

বলছি সত্তর আশি দশকে মাঠ কাঁপানো নাটোর জেলার অন্যতম সেরা ফুটবলার শ্রী গণেশ চন্দ্র দাস(৭২)’র কথা।খেলেছেন বাংলাদেশ পুলিশ, রাজশাহী দিগন্ত প্রসারী, ঈশ্বরদী ব্রাদার্স ইউনিয়ন, নাটোর জেলা দলসহ বিভিন্ন ক্লাবে। গত বছর দশেক আগে স্ট্রোক জনিত কারণে অসুস্থ হন তিনি। আবার ১৬-১৭ দিন আগে পুনরায় স্টোক করেন। সেই থেকে বিছানায় পড়ে আছে গণেশ। নাটোর জেলার কৃতি এই ফুটবলারের চিকিৎসার খরচ মিটাতে হিমশিম খাচ্ছে তার পরিবার, ফলে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। এমন পরিস্থিতিতে পাশে পায়নি কোনো ক্রিড়া সংগঠন বা সরকারি অনুদানও।

ফুটবলার গণেশ চন্দ্র লালপুর উপজেলার ত্রী-মহনী গ্রামের বাসিন্দা। তুখোড় এই ফুটবলার করুন দৃষ্টিতে কল্পনাতেই মত্ত থেকে শুনাতে থাকের তার একসময়ের মাঠ কাঁপানো গল্প। বিছানায় শয্যাশায়ী গণেশ মৃদু কন্ঠে জানায়, দিন দিন তার অবস্থার অবনতি হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসা করালে তিনি আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। এ সময় আর্থিক সংকটের কারণে তার উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না জানিয়ে সবার সহায়তা চান তিনি।

কৃতি এই ফুটবলারের বড় ছেলে জানান, তিনি চুল কেটে কোন রকমে সংসার চালান, ছোট ভাই গাড়ির হেলপার। করোনা ভাইরাসের কারণে সেলুন অারো বিপদস্ত। সব মিলিয়ে বাবার চিকিৎসা চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সপ্তাহে ৬/৭০০ টাকার ঔষধ প্রয়োজন হয়। কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না শুধু অর্থের অভাবে। তার এমন বিপদের দিনে সমাজের বিত্তবান ও যারা ফুটবলকে ভালোবাসে তাদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান তিনি। এবিষয়ে স্থানীয় প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুর রশিদ মাষ্টার জানান,যার দু পায়ে ছিল বার পোস্টের জাল ছেঁড়ার হিট। সেই পা‌ দিয়ে আজ তিনি হাঁটতে ও পারছেন না। সবই নিয়তি। সেই গণেশ আজ বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছে। কোন কোন মাঠে গণেশ দা খেলবেন জানলে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় থাকতো দর্শকের। আজ সবাই গণেশ দা কে ভুলে গেছে। মুছে গেছে গণেশ দার সকল অতীত।

এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল হল মুকুল জানান,উত্তর বঙ্গের অহংকার সোনালী অতীত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক তুখোড় স্টাইকার শ্রী গনেশ চন্দ্র দাস।তিনিই আমাদের ফুটবল খেলা শিখিয়েছেন বলে আমরা তার কাছে ঋণী। সেই গণেশ দাস এখন রোগে-শোকে অভাব-অনটনের কারণে বিপর্যস্ত। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে অর্থ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে তার উন্নত চিকিৎসা। এমতাবস্থায় তার চিকিৎসার জন্য সরকারি অনুদানের দাবি জানান। এছাড়া সমাজের বৃত্তবান ও ক্রিয়া সংগঠন গুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরের সিংড়ায় পুকুর নিয়ে বিরোধে গ্রাম ছাড়া ১ টি পরিবার
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরের সিংড়ায় করোনার দুঃসময়ে মানুষের দুয়ারে জনলোক

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে