স্মৃতি বেলা
লেখক নাজনীন নাহার
মাঝে মাঝে কেউ আমায় হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়,
একের পর এক স্মৃতির পাঠশালায়।
পণ্ডিত মশাইয়ের ধুতির কোঁচড় থেকে শুরু করে,
হেডস্যারের চোখ রাঙানি।
পাঁচ টাকার চাটনির স্বাদে জিভে জলের শ্রাবণ।
বাইসাইকেলে চড়ে স্কুলের পথে
পিছু নেয়া লম্বা চুলের প্রথম উপন্যাস।
মেঘ বৃষ্টির সন্দিপনে অনাহুত ছাতার প্রেম বিসর্জন।
আমার কেমন ভাবনা জুড়ে খেলা করে
বানভাসি এক পুতুল বিয়ে,
উদাস দুপুর পুকুর ঘাটে পানশী নায়ের বৈঠা ফেলে।
শ্রাবণ গেল ভাদর গেল বর্ষা গেল,
গেল আমার হারিয়েই গেল প্রথম পাওয়া প্রেমের চিঠি।
বইয়ের ভাঁজে লুকোচুরি প্রথম ফাগুন,
হারিয়ে গেল।
হু হু করে বুকের ভেতর,
থরে থরে গল্প কথা ছেলেবেলা রঙের মেলা।
কেন যে সব হারিয়ে গেল ফুরিয়ে গেল হয়ে অবেলা।
তবুও আমি স্বপ্ন ঘুড়ি উড়িয়ে দিয়ে
স্মৃতির ভেলায় ভাসাই নুড়ি।
একলা মনে একলা ক্ষণে ফেলে আসা
আকাশ বনে একলা উড়ি।
চোখের মণি মুক্তা জলে অবলিলায় সাঁতার কাটি।
আহা কত সুখের স্মৃতি দুঃখের স্মৃতি,
পথের বাঁকে হারিয়ে ফেলা নাকের নোলক অশ্রু ঝুড়ি।
হাতের পরে হাত রেখে যে টানে আমায় স্মৃতির খেলায়,
তাকিয়ে দেখি সেই তো আমি সেই তো
আমার ফেলে আসা স্মৃতি বেলা।