সৌরভ সোহরাব,সিংড়া,নাটোরকন্ঠ:
কৃষি প্রধান চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের মাঠ জুড়ে এখন দোল খাচ্ছে সোনালী রংয়ের ইরি- বোরো পাকা ধান। এরই মধ্যে আগাম জাতের কিছু মিনিকেট ধান কাটা শুরু হলেও পুরোদমে ধান কাটার মৌসুম শুরু হবে আগামী সপ্তাহ থেকে। তাই জমি থেকে নতুন ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে কৃষক। ধান কাটার আগের এই সময়টায় ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের। কামার শালায় পড়েছে কাস্তে,কোদাল সহ কুষি উপকরন তৈরীর ধুম। দিন রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ধান কাটার এই উপকরন হাতে পেতে কামার শালায় ভীড় করছে কৃষক।
সিংড়া উপজেলার বিয়াশ,জামতলী,চৌগ্রাম সহ বিভিন্ বাজারের কামার শালায় খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। বিয়াশ বাজারের জয়নাল কর্মকর কামার শালায় গিয়ে দেখা যায়, ৫-৭জন কৃষক কাস্তে নেওয়ার অপেক্ষায় বসে আছে। কেউ এসেছেন নতুন কাস্তে কিনতে। কেউ এসেছেন পুরাতন কাস্তে শান দিতে। আবার কেউ এসেছেন নতুন কোদাল তৈরী করতে। কামার শিল্প আলমগীর কর্মকার আফর জ্বালিয়ে কয়লার আগুনের তাপে লৌহ লাল করে নিচ্ছেন। তার পর হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরী করছেন নতুন কাস্তে। এর পর শানে ধার দিয়ে তুলে দিচ্ছেন ক্রেতাদের হাতে। এভাবে পুরনো কাস্তে কয়লার তাপে নরম করে হাতুড়ির কাজ সেরে শানে ধার দিয়ে চকচকে করে নিচ্ছেন পুরনো কাস্তে। বংশ পরষ্পপরয়ায় বাপ-দাদার কাছ থেকে এই কর্মকার পেশায় কাজ করা জয়নুল কর্মকার বলেন, ইরি ধান কাটার আগে যত কাজ পাই সারা বছরে তার অর্ধেক কাজও পাইনা। এই সময় কাজের অনেক চাপ। তাই অনেক রাত জেগেই কাজ করতে হচ্ছে। তবে এখন সবচেয়ে বেশি চাহিদা কাস্তের। কিছু মানুষ কোদাল সহ অন্য উপকরন নিচ্ছেন তবে তা অনেক কম।
কৃষক মানিক মোল্লা বলেন, আমি নতুন কাস্তে কিনতে এসেছি। নতুন কাস্তের দাম নিচ্ছেন ১৫০টাকা, পুরাতন কাস্তে ধার দিতে নেন ৫০ টাকা। আমি নতুন কাস্তে ৪ টি কিনলাম সেই সাথে পুরাতন ২টি কাস্তেও ধার দিতে এসেছিলাম। কৃষক আবজাল উদ্দিন বলেন,আমার ৫ বিঘা জমির ধান পেকে গেছে । আগামী ৩/৪দিনের মধ্যেই ধান কাটবো। প্রতিবছর আমার দুই ছেলেকে নিয়ে নিজেই ধান কাটি। তাই ৩টি নতুন কাস্তে তৈরী করে নিলাম। আয়েশ বাজারের আব্দুল লতিফ কর্মকার বলেন, করোনার ভয়ে কেউ ঘর থেকে সহজে বের হচ্ছেনা। এই অবস্থায় অনেকের কাছ থেকে মোবাইলে কাস্তে তৈরীর র্অডার পেয়েিেছ। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর করোনার দুর্যোগে কাজ অনেকটাই কম বলেও জানান তিনি।