নাটোর কন্ঠ : নাটোরের লালপুরে ত্রিভুজ প্রেমের পরিণতিতে জুয়েল নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন লালপুর উপজেলার দিলালপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের জিয়ারুল ইসলাম এর স্ত্রী সেলিনা খাতুন ২৮ একই গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে মেহেদী হাসান লিটন -২০ এবং জিয়ারুল ইসলাম এর ছেলে মেহেদী হাসান।
শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, গত ৪ই মার্চ সকালে দিলালপুর গ্রামের জুয়েলের বাড়ির পিছনে একটি মাঠে জুয়েলকে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জুয়েলের বাবা দিলালপুর গ্রামের সাকিম প্রামানিক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার আরো জানান, সেলিনা খাতুন এর সাথে ভাতিজা জুয়েল হোসেনের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে জুয়েল ও সেলিনা খাতুনকে শাসন করা হয় এবং জুয়েলকে সেলিনা খাতুন এর বাড়িতে যেতে নিষেধ করা হয়।
কিন্তু সে নিষেধ না মেনে জুয়েল যাতায়াত করতে থাকলে সেলিনার সৎছেলে মেহেদী ক্ষিপ্ত হয় এবং মেহেদী ও জুয়েলের মধ্যে হাতাহাতি হয়। অপরদিকে মেহেদী হাসান লিটনের আপন বড় ভাই সুমন সেলিনার ঘরে ঢুকে। এসময় সেলিনা সুমনকে আটক করলে গ্রামীণ সালিশে সুমনের ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এতে মেহেদী হাসান লিটন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সেলিনা খাতুন এর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে সেলিনা খাতুন মেহেদি হাসান লিটন এবং মেহেদী হাসান পরস্পর যোগসাজশে জুয়েলকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা তৈরি করে।
পরিকল্পনা মোতাবেক সেলিনা জুয়েলকে ডেকে নিয়ে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট বলে তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। এরপর জুয়েল নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে পার্শ্ববর্তী মাঠে নিয়ে গিয়ে সেলিনা রেখে আসে। এসময় মেহেদী হাসান লিটন ও মেহেদী ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে জুয়েল কে হত্যা করে।
গতকাল পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে সেলিনা খাতুনেকে এবং মেহেদী হাসান লিটনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মতাবেক মেহেদীকে গ্রেফতার করা হয় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র চাকু ও মোটরসাইকেলের ডিস্ক দিয়ে তৈরি করা কুড়াল ও মোবাইল সিম উদ্ধার করে। পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, গ্রেফতারকৃতদের ১৬৪ ধরায় স্বীকারোক্তির জন্য আদালতে প্রেরণ করা হবে।