মোহাম্মদ আলী রনজু‘এর ছ‘টি কবিতা

0
175
Mohammad Aliranju

ঘরের চোর

চোরের কাছে আমানত দিয়ে
বলছে গরীব দুখিক দিস..
নাচছে সে চোর বোগল বাজায়
দু আঙ্গুলে দিচ্ছে সিস…
গরীব দুখির আর্তনাদে
তুমি তো মা দিয়েই খালাস…
চোর গুলো সব করছেটা কি
করেনি তো একটু তালাস….
ফুটা কলসি ভরবে কবে
যতই চাপো টিউবয়েল..
চোর গুলো সব লুটেপুটে
আড়াল থেকে করছে ঘায়েল..
ভাবছো তুমি এত দিয়েও
পেট ভরেনা গরীবের…
আসলে তা খাচ্ছে চোরে
সত্যি তুমি পাওনি টের…
চোর গুলো সব আখের গুছায়
হয়ত সঠিক জানোনি,
বরাদ্দের আগে চোর সামলাও
পা ধরি মা জননী!!

পাগলা ঘোড়া

পাঁচ টাকাতে গরু কিনে
বাহিরে দাদা পালতো,
বাদ’দে দাদা ভাল্লাগেনা
আজগুবি তোর গল্প…
এক হালি ডিম পঁচিশ পয়সা
আনায় পাপড় ভাজা,
সত্যি বুঝি খাইছে দাদা
মেয়াদ ছাড়া গাঁজা….
ডাল চিনি আর আটা কিনতে
নিয়ে যেত কড়ি,
আর মারিসনা চাপা দাদা
পা দুটো তোর ধরি…
এক টাকাতে দুই কেজি চাল,
খাঁটি ঘাঁনির তেল…..
ডিজিটাল যুগে ভাবছে দাদা
নাতি বেয়াক্কেল..
শুনরে দাদা আমার কথা
একটু খানি বলি,
বাজার দরে অামজনতা
শ্মশান পূঁজার বলী…
চাল কিনে খাই ষাট টাকাতে,
তেল একশো আশি…
অজকে যে দর আছে দাদা,
কালকে হবে বাসি…
কেউ জানেনা কালকে কি দর,
কখন কি’যে বাড়ে….
পাগলা ঘোড়ার উর্ধো গতি,
আমজনতার ঘারে….
বেওয়ারিশ বাজার দরে
হ য ব র ল….
জমি বেঁচে বাজার করবো
রাজি কিনা ‘ক’..?

ঘুম

আমার তো ভাই ঘুম ধরেনা
উর্ধো গতির বেরামে..
ওরা তো হুট দাম বাড়িয়ে
ঘুম পারে ভাই আরামে..
ভয়ে আমার হাত পা কাঁপে
হাট বাজারের ফর্দিতে…
তার চেয়ে ভাই কোভিড ভাল
হাচি কাশি সর্দিতে….
চাল ডাল তেল লঙ্কা পেয়াজ
কিনতে যত কষ্ট হয়…
কষ্ট করেও কিনলে পরে
খেতে লাগে মায়ার ভয়..
ওদের তো ভাই চিন্তা নেই
ওদের আছে কচুক্ষেত
আমরা তো ভাই স্বল্প আয়ের
খাদ্য ঘাটতির ভেদাভেদ..
ঘুমা তোরা যত খুশি
কচু ক্ষেতও হবে শেষ..
সেদিন তোদের ক্ষুধার জ্বালায়
হতে হবে নিরুদ্দেশ..

শীতের বালিশ

শীতের দিনে বালিশ বিনে
একলা কেমনে থাকি……!
শীতের চোটে হাড় কেঁপে যায়
মরন টা মোর বাকি……!!
শীতের জ্বলায় দাদুর কাছে
করলাম আমি নালিশ….!
বোকা দাদা এনে দিলো
শিমুল তুলার বালিশ……!!
সন্দহ মোর চতুর দাদা
কিছুই বুঝে নাই………..??
ওরে দাদা দাদির তোমার মত
জ্যান্ত বালিশ চাই……..???
বুঝবা তখন তোমার বালিশ
করবো যখন চুরি…….??
কাইন্দা তখন বুক ভাসাইও
ভিজাই দিও দাড়ি…….???
তুমি যখন কাঁদবা শীতে
বইসা ঘরের কোনে………?
তোমার জ্যান্ত বালিশ আমায়
তখন উসুম দিবে মনে…….!!

কঙ্কালের আর্তনাদ

আম জনতা সতিনের পোলা
সরকার সৎ মা…..
যেমন খুশি তেমন করে
দিচ্ছে মোদের ঘা…..
আমজনতা নাচের পুতুল
নৃত্য ছারা কেঁদে কি লাভ….
অন্ধ বধির সরকার তাই
বুঝতে পারবেনা কষ্ট বিলাপ..
পাচার রোধের জন্য যদি
তেলের দামও বাড়ে……
বি এস এফ কি আঙ্গুল চুষে
বন্দুক নিয়ে ঘারে???
দেশটা মেদের উন্নয়নে
হচ্ছে আকাশ ছোয়া…..
আমজনতা শুটকি হয়ে
শুকিয়ে হচ্ছে পোয়া….
এ দেশ’তো আর গরীব না
দেশটা এখন ধ্বনীদের….
আমজনতা কলুর বলদ
টানবে ঘানী মনিবের…..
না খেয়ে তো মরেনি কেউ
এ মূল্য আর এমন কি….
সরকার এমন ভাবছে বসে
পান্তা ভাতে খাচ্ছে ঘি…..
লাগাম ছাড়া পাগলা ঘোড়ার
চাবুক পিঠে দিচ্ছে ঘা…
হতভাগা আম জনতা
নিজের রক্ত নিজেই খা..
রক্ত খাবো মাংশ খাবো
দেহ হবে কঙ্কালসার
ক্ষিপ্ত জিদে প্রশ্ন করি
সরকার তুমি আসলে কার??

অসিম কষ্ট

উৎসর্গ : দাদুকে

যে ভার ! বইতে পারিনা অনেক ভারি,
জ্বলছি ধুকে ধুকে।
যে ভার! কালসিটে পরেছে কাঁধে নয় আমার!
কালসিটে পরেছে বুকে।
যে ভার! পৃথিবীর ভারি? তার চেয়েও ভারি,
বোঝানো যেতো যদি?
যে ভার! আশ্রু ঝড়ায় অপলক চোখে
বুকে বয়েযায় নদী।
যে ভার! গুমরে মরে বুকের গভীরে,
অগ্নুৎপাতের মত।
যে ভার! ঝড়না ঝরায়, অবিরাম ঝরে,
কাঁদায় অবিরত।
যে ভার! দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণাতে
বিশ্বসেরা ইতিহাস।
যে ভার! আর ভারি নয়, তার চেয়ে কিছু,
বাবার কাঁধে ছেলের লাশ।

Advertisement
উৎসMohammad Aliranju
পূর্ববর্তী নিবন্ধত্রিভুজ প্রেমের কারণে জুয়েল হত্যা
পরবর্তী নিবন্ধনাটোর সড়কে ঝড়ল শিশুর প্রাণ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে