নাটোর কন্ঠ : আব্দুল্লাহ আল কাফি। নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর ইউনিয়নের, জোয়ানপুর গ্রামের কৃষক, মাহবুল আলম ও গৃহীনি পল্লব কান্তি সরদারের একমাত্র সন্তান। সে পাবনা পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক বিভাগের তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।
সম্প্রতি দেশে ধারাবাহিকভাবে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশীত ঘটনা গুলো ঘটার পর স্বাভাবিকভাই ট্রেনে ভ্রমণ পছন্দ করা মানুষের মনে জন্মেছে নানান ভয়-সংশয়। সম্প্রতি গাজিপুরে রেললাইন কেটে ফেলার পর ভয়াবহ দূর্ঘটনার ঘটনাটি মনে দাগ কাটে আব্দুল্লাহ আল কাফি‘র।
তারপর থেকেই রেললাইন কিভাবে নিরাপদ রাখা যায়, সে চিন্তায় বিভোর হয়ে থাকে সে । দিনরাত গবেষণা ও চেষ্টার পর কাফি আবিষ্কার করে ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’।
কাফি‘র দাবি -রেললাইন কেটে ফেলা হলে বা ভেঙ্গে গেলে তার এই যন্ত্রের সাহায্যে সাথে সাথে স্টেশন মাস্টারের রুমে বেজে উঠবে এলার্ম। একই সাথে কল আসবে স্টেশন মাস্টারের মোবাইল ফোনে।
এটি কল্পনা মনে হলেও এমনই এক যন্ত্র আবিস্কারের দাবি করেছেন পাবনা পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল কাফি। তার দাবি মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচ করে এই যন্ত্র স্থাপন করলে এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনের নিরাপত্তা দিবে তার এই ডিভাইস।
আব্দুল্লাহ আল কাফি জানান, “সম্প্রতি গাজিপুরে রেললাইন কেটে ফেলায় ভয়াবহ দূর্ঘটনা আমার মনে দাগ কাটে। মূলত এরপর থেকেই রেললাইনকে নিরাপদ করতে প্রযুক্তি আবিস্কারের চিন্তা আসে আমার মাথায়। এই চিন্তা থেকেই ডিভাইসটি তৈরি করি।
ডিভাইসটি তৈরি করতে দিনরাত পরিশ্রম করেছি। এটার কাজ হলো স্বাভাবিক রেল লাইন কখনো যদি ফেটে যায় বা আলাদা হয়ে যায়, তাহলে এটা সয়ংক্রিয়ভাবে সংকেত দিতে থাকবে। সেইসাথে স্টেশন মাস্টারকে কল দিবে।
রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’টি তৈরি করতে আমার ১০ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। তবে এটা যদি পরিপূর্ণ ভাবে রেলের নিরাপত্তার জন্য ব্যাবহার করতে হয় তাহলে আরেকটু বড় করে স্থাপন করতে হবে। সেক্ষেত্রে এটার খরচ পরবে প্রায় ২০ হাজার টাকা।’’
কাফি’র পিতা মাহবুব আলম বলেন, “সন্তানের এমন আবিস্কারে আমি গর্বিত। আমার ছেলের আবিস্কার দেশের ও জনগনের যদি কাজে লাগে তাহলে ওর পরিশ্রমের সার্থক হবে।’’
মাধনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “কাফি‘র আবিষ্কারকৃত যন্ত্রটি কার্যকরী কি না। তা পরীক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান করি।’’
নাটোরের রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার, কামরুন নাহার বলেন, “কাফি’র আবিষ্কৃত যন্ত্রটি আমাদেরকে দেখালে, এ বিষয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলব।”