আরসিসি ঢালাই কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ

0
285

সজিবুল ইসলাম : মিলরোড কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ স্থানীয়দের ! তারা বলছেন- সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার উপস্থিতিতেই অনিয়ম। কালো পাথরের পরিবর্তে নিম্নমানের সাদা পাথর ব্যবহার। মোটা বালুর পরিবর্তে চিকন বালু ব্যবহার। পরিমাণে রড কম দিয়েছে।

খাঁচা তৈরিতে ৬ ও ৭ ইঞ্চি বর্গফুটের পরিবর্তে ৮ থেকে সাড়ে ৮ বর্গফুটে রড ব্যবহার। ৩০ ফিট পর পর ম্যাচিংবার দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি। কিছু জায়গায় থিকনেস ৮ ইঞ্চির কম। ১২ দিন যাবৎ সম্পন্ন রাস্তা বন্ধ, জনদূর্ভোগ। ঢালাইয়ের মিশ্রণে পরিমাণ ঠিক নেই। রাতের আধাঁরেও কাজ হয়েছে।

নাটোরের লালপুরে মিলরোডের সড়ক উন্নয়ন কাজে এসব অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে আরসিসি ঢালাই কাজে নির্ধারিত অনুপাত না মেনে ঠিকাদার নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার ও পরিমাণে রড কম দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয়রা জানান, উপজেলার গোপালপুর রেলগেট থেকে লেবারলাইন পযন্ত ১ কি.মি. সড়ক উন্নয়নের কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। গত ২২ দিন আগে সড়কে কাজ শুরুর থেকেই কাজের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তাদের।

বর্তমানে ১২ দিন যাবৎ সম্পন্ন সড়ক বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে আরসিসি ঢালাই কাজ করছে। আবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করতে রাতের আধারেও কাজ করেছেন বলে জানান স্থানীয়রা।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্র জানা যায়, এ সড়কটির সরকারি বরাদ্দ প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। রাস্তাটির ৫৩০ মিটার আরসিসি ঢালাই কাজ রয়েছে। শিডিউল অনুযায়ী ঢালাইয়ের প্রতি মিশ্রণে এক বস্তা সিমেন্ট,

দেড় বস্তা মোটা বালি, আড়াই কড়াই কালো পাথর, ঢালাইয়ের থিকনেস ৮ ইঞ্চি, রডের খাঁচা নির্মাণে ৬ ও ৭ ইঞ্চি বর্গফুট, ৩০ ফিট জয়েন্টে বারে ২০ ইঞ্চি ২৫ মিলি রডের ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হলেও বাঁশ দিয়ে সম্পন্ন সড়ক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। যেখানে সড়কের ৮০ শতাংশ জায়গায় কালো পাথরের পরিবর্তে নিম্নমানের সাদা পাথর ও মোটা বালুর পরিবর্তে চিকন বালু ব্যবহার করা হয়েছে।

সম্পন্ন রাস্তায় খাঁচা নির্মাণে রডের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। ৬ ও ৭ ইঞ্চি বর্গফুটের পরিবর্তে ৮ থেকে সাড়ে ৮ বর্গফুটে রড ব্যবহার করা হয়। কাজের শেষ দিকে দুই/এক জায়গা ব্যাতিত কোথায় জয়েনিং বা মেচিংবারে রড ব্যবহার করা হয়নি। আবার বেশ কিছু জায়গায় ঢালাইয়ে ৮ ইঞ্চির কম থিকনেস দেওয়া হয়েছে।

এবিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার রেন্টু বলেন, “আমি পাথরের জায়গায় তো খোয়া দেয়নি। এতে সমস্যা নেই।’’ আর জয়েন্টবারে রড না দেওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি।

এবিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন, কাজে কিছু অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, “মিথ্যা কথা বলবো না, চিকন বালু ব্যবহার করেছিলো। তবে পরের বার সেটা আর দেয়নি। এলসির মাল সব সময় পাওয়া যায় না। তাই সাদা পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। আর সাদা পাথর টেস্টে পাশ করছে।’’

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আখতার বলেন, “কাজে অনিয়ম প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরে শেখ রাসেল শিশু পার্ক নির্মাণে অনিয়ম
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরে শিলাবৃষ্টি : ফসলের ক্ষতি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে