ইমাম গাজ্জালী (রাঃ) -পর্ব-০১

0
598
www.natorekantho.com

ইমাম গাজ্জালী (রাঃ) -পর্ব-০১

মহানবী হজরত মুহাম্মাদ(সাঃ)প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, প্রত্যেক শতাব্দীতে ইসলামের সংস্কারের জন্য একজন মুজাদ্দিদ (সংস্কারক) আসবেন। ইতিহাসের পথচলায় বহু মহান মুসলিম চিন্তাবিদ, শাসক, সেনাপতি, এবং শিল্পীর জন্ম হয়েছে যারা মুসলিম বিশ্বে ইসলামকে নতুন করে উপলব্ধিতে সহায়তা করেছেন এবং বিশ্বের সমসাময়িক নানা সমস্যা মোকাবেলায় মুসলিমদের সাহায্য করেছেন।

এসকল মনীষীদের প্রতিটি অবদানই সেসময়কার প্রতিটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংস্কারক ছিলেন একাদশ শতাব্দীর প্রখ্যাত আলেম আবু হামিদ আল গাজ্জালী, যিনি আজ পরিচিত ইসলামের সাক্ষ্য  নামে।

সেসময়কার ইসলামের নামে প্রচলিত যেসব ভয়ংকর মতবাদ ও ভ্রান্ত দর্শন মুসলমানদেরকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল সেসবের বিরুদ্ধে কার্যকর বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ের কারণে তাঁকে এই উপাধি দেয়া হয়।

সর্বব্যাপী গ্রীক দর্শন থেকে শুরু করে শিয়া মতবাদের উত্থান এবং জোয়ার; সবকিছুর বিরুদ্ধেই তিনি ছিলেন সোচ্চার। ইমাম গাজ্জালী ক্ষমতাসীনদের হুমকীর মুখেও প্রকৃত ইসলামী দর্শন ও জ্ঞানের পুনরুজ্জীবনের জন্য সম্ভাব্য সকল উপায়ে চেষ্টা করেছেন।

ইমাম আল গাজ্জালি ছিলেন মুসলিম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দার্শনিক। তার চিন্তাধারাকে মুসলিম ধর্মতত্ত্বের বিবর্তন বলে ধরা হয়। ফালাসিফা বা দার্শনিকদের বিরুদ্ধে তিনি বলেন- দার্শনিক মতবাদ কখনও ধর্মীয় চিন্তার ভিত্তি হতে পারে না। প্রয়োজনীয় সত্য সম্পর্কে শুধু ওহির জ্ঞান পাওয়া সম্ভব।

তিনি সমকালীন দার্শনিকদের দর্শন-চিন্তার অপূর্ণতা দেখতে পান এবং তাদের সমালোচনা করেন। তাহাফাতুল ফালাসিফা গ্রন্থে তিনি দার্শনিকদের চিন্তার শূন্যতা প্রমাণ করেন। আবু হামিদ মোহাম্মদ ইবনে মোহাম্মদ আল-গাজ্জালি বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক অঞ্চলেই ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) হিসেবে বেশি পরিচিত।

মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শিক্ষাবিদ ইমাম আল-গাজ্জালির ১০৫৮ সালে ইরানের খোরাসানের তুশ নগরীতে জন্মগ্রহণ এবং সাহাদৎ বরণ করেন। তাঁর পিতার নামটিও ছিল তাঁর নামের অনুরূপ, মুহাম্মদ। মুহাম্মদের পিতা অর্থাৎ ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)-এর দাদার নাম ছিল আহমদ।

তাঁর পিতা মুহাম্মদ তখনকার সময়ে একজন স্বনামধন্য সূতা ব্যাবসায়ী ছিলেন। গাজল অর্থ সূতা, নামকরনের এই সামঞ্জস্যতা তাই তাঁর বংশকে গাজ্জালী নামে পরিচিত করেছে। আবার কারো মতে তিনি হরিণের চক্ষু বিশিষ্ট অপরূপ সুদর্শন ছিলেন, আর গাজাল অর্থ হরিণ, তাই পিতা মাতা তাঁকে শৈশবে আদর করে গাজ্জালী বলে ডাকতেন।

উভয় বর্ণনানুসারে তাঁকে গাজ্জালী বা গাজালীও বলা হয়। তিনি সে সময়ে ইরানের শিক্ষা নিয়ে বেশ কিছু কাজ করেন। জ্ঞান অন্বেষণের জন্য তিনি দেশভ্রমণেও বেরিয়েছিলেন। ১১১১ সালে তিনি সাহাদৎ বরণ করেন।ইমাম গাজ্জালি (রহ•) চারশ’র ও অধিক গ্রন্থ রচনা করেন। তার অধিকাংশ বইগুলোতে ধর্মতত্ব, দর্শণ ও সুফিবাদ আলোচনা করেছেন।

অনুবাদ করা হয়েছে :  Al-Ghazali and the Revival of Islamic Scholarship আর্টিকেল থেকে।
অনুবাদক : মুহসিন সুরী
সম্পাদনায় : খন্দকার মাহাবুবুর রহমান

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধ“এসো খোলা মাঠে” কামাল খাঁ‘এর ছড়া
পরবর্তী নিবন্ধদূর্নীতির সংবাদ ছাপতে যখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে!-কালিদাস রায়

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে