করোনাকালে নিয়োগবাণিজ্য বন্ধ- রেজাউল করিম খান

0
472
Rezaul

করোনাকালে নিয়োগবাণিজ্য বন্ধ- রেজাউল করিম খান

‘নিয়োগ বাণিজ্য’ শব্দটির সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। সরকারের প্রায় সব বিভাগে এই বাণিজ্য চলে। তবে এই মুহূর্তে প্রমাণ চাইলে আমি দিতে পারবো না। সময় দিলে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর, বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের রিপোর্ট উপস্থাপন করা যাবে। সরকারের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাফাই কর্মী পর্যন্ত, অধিকাংশকেই ঘুষ দিতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা স্বয়ং ঘুষের টাকা গ্রহণ করেন। এছাড়া নেতা ও দালাল তদ্বিরকারক হিসেবে কাজ করেন। নিকটাত্মীয় ও দলীয় প্রভাবেও নিয়োগ পাওয়া যায়। আনন্দের বিষয় এই যে, করোনাকালে নিযোগ বন্ধ রয়েছে। এখন আর ঘুষ লেনদেন হচ্ছে না। তবে ক্রয়বাণিজ্য চলছে বলে অনেকে আলোচনা করছেন। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা আশা করতে পারি এই নিয়োগে কোনও ঘুষ দিতে হবে না। তবে তদ্বির শুরু হবে নিয়েগের পর পদায়ন নিয়ে। অধিকাংশই ঢাকায় থাকতে চাইবেন না। অনেকেই চাইবেন খাগড়াছরি যেতে। যা আগে হতো উল্টো। এরজন্য কে কত দেবেন তা নিয়ে দরদাম হবে। এতক্ষণ যা লিখলাম, তা কাল্পনিক। জীবিত বা মৃত ব্যক্তির সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। এবার মূল কথায় আসি।
সংবাদ মাধ্যমে জানা গেলো, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে স্বাস্থ্যসেবায় গতি বাড়াতে আরও দুই হাজার চিকিৎসক ও ছয় হাজার নার্স নিয়োগ দেবে সরকার। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বুলেটিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, “বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে বেশ কিছু চিকিৎসক-নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। এজন্য নতুন ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” এটি খুবই ভালো খবর। কিন্তু শুধু ডাক্তার ও নার্স দিয়ে চিকিৎসা সম্পূর্ণ হয় না। এর জন্য আরও কর্মী দরকার। বিশেষ করে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। তাদের বাদ দিয়েই কি চলবে করোনা ও অন্যান্য চিকিৎসা?
করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে টেস্টের ওপরে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আর এই টেস্টের জন্য প্রয়োজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। কিন্তু দেশে এদের সংখ্যা খুবই কম। অনেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টেকনোলজিস্টের অভাবে রক্ত-মল-মুত্র পরীক্ষা হয় না। রোগীকে যেতে হয় বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারে বা হাসপাতালে। হতদরিদ্র রোগীরা টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় টেস্ট করাতে পারে না। আমরা জানি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি একজন ডাক্তারের সাথে তিনজন নার্স এবং পাঁচজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকা উচিত। সেই অনুযায়ী এখন ১০ হাজার কেনোলজিস্ট নিয়োগ প্রয়োজন। কিন্তু এদের নিয়োগের কোনো ঘোষণা নেই। উল্লেখ্য, গত ১০ বছরে কোনো মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ করা হয় নি। কারণ এই সম্পর্কিত বিষয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা চলমান আছে। ভুক্তভোগীর প্রশ্ন, হাইকোর্টে একটি মামলা নিস্পত্তি হতে কতদিন সময় লাগে?
এতো গেলো সাধারণ চিকিৎসার চিত্র। করোনা টেস্টের বেলায় কি হবে?

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধসূরা নাস বাংলা অনুবাদ
পরবর্তী নিবন্ধবাড়ি বাড়ি ভাতার টাকা বিতরন করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে