নাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, নাটোরের সচেতন নাগরিক, সমাজসেবক, শ্রদ্ধেয় মো. মনিমুল হক’এর ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পোস্ট করেছেন। সচেতনতামূলক এই পোস্টটি, নাটোর কণ্ঠে’র পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
মনিমুল হক : “কুল্লু নাফসিন যা-ইক্বাতুল মাউত” – প্রতিটি প্রাণকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। মৃত্যুর এই অমোঘ ক্ষণ আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই আসবে। এরপর অনন্ত জীবনের পথে আমাদের যাত্রা হবে একাকীর। কিন্তু মৃত্যুক্ষণ এবং শেষ শয়ানের অন্তিম যাত্রায় মৃতের পাশে পরিজন-প্র্রিয়জন কেউ থাকবে না- দূরতম কল্পনায়ও কি তা আমরা ভাবি! ভাবি না।
অথচ করোনা পরবর্তী পৃথিবী আজ সে বাস্তবতার মুখোমুখিই দাঁড় করিয়েছে আমাদের। সংক্রমণের ভয়ে ছেলে আসছে না মৃত মায়ের দাফনে, ভাই যাচ্ছে না ভাইয়ের লাশ তুলতে, স্বামী পালাচ্ছে মৃতা স্ত্রীকে ফেলে। জেনে রাখুন, আমাদের কর্মীবাহিনী এ পর্যন্ত ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ৫১২টি দাফন ও ৭৮টি সৎকার সম্পন্ন হয়েছে (১২ জুন ২০২০ পর্যন্ত)। মৃতের যথাযোগ্য সম্মান জানাতে আমাদের কর্মীরা কোনো পার্থক্য করেন নি। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী যারা মৃত্যুবরণ করছেন, তাদের জন্যেও ছুটে গেছেন আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা। মৃতা নারী হলে তার দাফনের জন্যে রয়েছে নারী স্বেচ্ছাসেবীর একটি চৌকষ দল…….।
এতক্ষণ যা বর্ণনা করলাম
আমি এতক্ষণ যা বললাম, সেটি কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম। মানবতার কল্যাণে এগিয়ে চলা এ ফাউন্ডেশন সম্পর্কে আপনারা প্রায় সকলেই জানেন। প্রধান অফিস ঢাকায়। অধিকাংশ জেলা শহরে ও কিছু উপজেলায় এর সেল রয়েছে। নাটোরের সেলটি হলো বলারীপাড়ায় (আইনজীবী আবু আহসান টগর সাহেবের বাসার নীচতলার ফ্লাট)। যারা মানবতার কল্যাণের ব্রত নিয়ে এ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে কোর্স করেছেন, তাদের বলা হয় কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট, আর যারা পরবর্তী উচ্চতর কোর্স করেছেন তারা হলেন প্রো-মাষ্টার্স। আমি নাটোর সেলের অধীনে একজন কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট।
এবার মুল কথা বলি-
রাজশাহী কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের গ্রাজুয়েট ও প্রো-মাষ্টারগণ সম্মিলিতভাবে নিজেরা সকল প্রকার সুবিধা সম্পন্ন একটি এ্যাম্বুলেন্স কিনেছেন। করোনা ক্রান্তিকালে এটি আপাততঃ লাশবাহী গাড়ী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া মৃতের সৎকার করার জন্য এ ফাউন্ডেশনে রয়েছে একটি প্রশিক্ষিত দল, যারা নিজেদের PPE পরে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সৃষ্টি করে সৎকারের সব রকম ব্যবস্থা করছেন। এটির আওতাভূক্ত এলাকা আছে, নাটোর জেলা তার একটি।
আপনার মাথায় এবার যে প্রশ্নটি খেলছে
এতক্ষণ যারা এটি পড়লেন তাঁদের মনে উদয় হয়েছে- কিভাবে এ লাশবাহী গাড়ীটি পাওয়া যাবে, কত টাকা খরচ পড়বে ইত্যাদি-ইত্যাদি….। এ প্রশ্নের উত্তরে আপনাদের সদয় জ্ঞাতার্থে বলছি যে, এজন্য আপনাকে কোন অর্থ ব্যয় করতে হবে না। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন মনে করে, ” করোনায় মারা যাওয়া মানে- শহীদি মৃত্যু ”। তাই মানবতার কল্যাণে শুধুমাত্র মহান আল্লাহকে সন্তষ্টির জন্য আমরা নি-খরচায় সৎকার কার্যক্রমটি সম্পাদন করছি। আর তাই……..
করোনার লাশ সৎকার করতে যেসব আত্মীয় ও শুভানুধ্যায়ীরা নিজেদেরকে ভয়ে গুটিয়ে রাখছেন- আর লাশ পড়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায় এ ধরণের আমানবিক কাজ যদি আপনার বিবেককে নাড়া দেয় তাহলে নিকটস্থ প্রশাসনের মাধ্যমে ফোন করতে পারেন রাজশাহী কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে। অফিসটি রাজপাড়া থানা রোডের ঝাউতলা মোড়ে। যোগাযোগ- এ্যাড. মেহেদী হাসান, পরিচালক, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, রাজশাহী (মোবা-০১৭১১-১০৪২৮৯)।
আমার সাথে যোগাযোগ করলেও ব্যবস্থা হবে ইনশাল্লাহ। আমি আমার ফেসবুক আইডিতে মোবাইল ও ই-মেইল নাম্বার দৃশ্যমান করলাম, সেখানে আপনি তথ্য জানাতে পারেন। তাই- সবিনয়ে আহ্বান জানাই- মুঠোফোন -01716720551 ফেসবুক আইডি –https://www.facebook.com/profile.php?id=100007529865605&__tn__=lC-R&eid=ARCArUQfaqYyFMkKSE1nC60SvInfszOjm_pEXWcStiSkjYGdvN7l1LuDs9ErgHmqoGWQEAkXY6VgAwlN&hc_ref=ARRxIdpf8zDH_Jk-Z-EL8oI9y5bi9AV3SWgJB-oZSNfdyWKYSupRsvR3jFxKY59E4ww
এগিয়ে আসুন আপনিও_____!
করোনার সাথে লড়াই করে যিনি মারা গেছেন তিনি আপনার আপনজন। তাকে শহিদ হিসেবে সম্মান জানানোর এই পুণ্যময় মানবিক উদ্যোগে আপনিও শামিল হোন! অর্থ, সময় বা শ্রম দিয়ে বা স্রেফ তার জন্যে দোয়া করে আপনি এ শহিদদের পাশে থাকুন। ভালো থাকবেন, আর আমাদের জন্য দোয়া করবেন। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ওয়েব সাইট দেখতে লিংক দিলাম-
https://quantummethod.org.bd/