গুরুদাসপুরে বাঙ্গী চাষে অধিক লাভে কৃষক

0
140
nATORE KANTHO

মো. আখলাকুজ্জামান : রোজার মাসকে ঘিরে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় কৃষকদের চাষকৃত সুস্বাদু তরমুজ ও বাঙ্গীর চাহিদা বেড়েছে। প্রতিদিন এলাকার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে এই বাঙ্গী।

এ বছর উপজেলায় ৩৫ মেট্রিকটন বাঙ্গী উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। এদিকে রসুনের সাথী ফসল হলেও চলতি মৌসুমে কৃষকদের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বাঙ্গী। কারণ রসুনে লোকসান গুনতে হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও ৭ হাজার টাকা মণ ছিল রসুন।

তখন স্বচ্ছলতা ফিরেছিল গরিব কৃষক পরিবারগুলোতে। এখন সেই রসুন ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণ হওয়ায় কৃষকদের চাষ খরচও উঠছে না। তবে সাথী ফসল বাঙ্গীর ন্যায্য দাম পেয়ে রসুনের ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে লাভবান হওয়ায় খুশি চাষীরা। বিক্রির জন্য উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বাঙ্গীর মোকাম বসিছেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা।

দক্ষিন নাড়ীবাড়িতে বাঙ্গী কিনতে আসা পাইকার ব্যবসায়ী শাহারুল ইসলাম ও রানা বলেন, ‘ঢাকার কাওরান বাজারে বিক্রির উদ্দ্যেশে বাঙ্গীর ট্রাক ভর্তি করছি। চাষীদের কাছে থেকে ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিচ হিসেবে ১০০ বাঙ্গী ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কিনেছি। এক ট্রাকেই প্রায় ১ লাখ টাকার ১৫শ বাঙ্গী সরবরাহ হয়। এতে ২০ হাজার টাকার মতো লাভ থাকে।’

উপজেলার বাঙ্গীর মাঠগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিবছরের মতো এবারো রসুনের সাথে বাঙ্গীর চাষ করেছেন বেশিরভাগ কৃষক। জমিতে বাঙ্গীর গাছে এখনো ফুল ফুটে আছে। রসুন ঘরে তোলার পর কৃষকরা তাই বাঙ্গী উত্তোলন ও বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম ও পরিচর্যার মাধ্যমে বাঙ্গী তুলে বিক্রির জন্য জমিতে ও সড়কের পাশে স্তুপ করে রাখছেন। এসব বাঙ্গী দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত স্থানীয় ও বহিরাগত পাইকাররা কিনে ট্রাকভর্তি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন।

পৌরসদরের খামারনাচকৈড় মহল্লার কৃষক তাজেল প্রামাণিক বলেন, ‘অন্যের ২ বিঘা কৃষিজমি লিজ নিয়ে প্রতিবারের মতো এবারেও বাঙ্গীর চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। এখন ১০০ বাঙ্গী ৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকায় পাইকারদের কাছে বিক্রি করছি। বাঙ্গীর ভালো দাম থাকায় রসুনের লোকসান পুষিয়ে যাবে।’

উপজেলার পাঁচশিসা গ্রামের কৃষক শাকিরুল্লাহ খোকনসহ কয়েকজন জানান, এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় ও পোকামাকড়ের অতিরিক্ত আক্রমণে বাঙ্গীর ফলন কম হয়েছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও কাজ হয়নি। তবে স্থানীয় বাজারে এবং পাইকারদের কাছে ভালো দাম পেয়ে বাঙ্গী বিক্রি করে লাভবান হয়েছি আমরা।’

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হারুনর রশিদ জানান, ‘গুরুদাসপুরে এবছর প্রায় ৩৫ মেট্রিকটন বাঙ্গী উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষকরা ৭৯০ হেক্টর কৃষিজমিতে বাঙ্গী ও ৭৬০ হেক্টর জমিতে তরমুজের অবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। এজন্য মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি।’

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধদুধের কন্টেইনারে ফেন্সিডিলসহ যুবক আটক
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরে মাদক মামলায় এক ব্যক্তির ১০ বছর কারাদন্ড

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে