গোপালপুর পৌরসভা নির্বাচন ভোটারদের ‘আস্থার’ প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে জয় নিশ্চিত

0
235

গোপালপুর পৌরসভা নির্বাচন
ভোটারদের ‘আস্থার’ প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে জয় নিশ্চিত

লালপুর, নাটোর কণ্ঠ:
নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মনোনয়ন ফর্ম উত্তোলন ও জমাদানে এখন রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করছেন। তবে থেমে নেই পৌর এলাকায় তাদের সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণা। এই পৌরসভায় বিগত দিনে বিএনপির মেয়ররা নির্বাচিত হলেও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এবার পৌর পরিষদের নেতৃত্বে আসতে চান আওয়ামী লীগের হাফ ডজন নেতা। তবে মনোনয়ন দৌড়ে শীর্ষে আছেন তিনজন। চুড়ান্ত মনোনয়ন যিনিই পাবেন তাকে বিজয়ী করার অঙ্গীকার করেছেন সকলে। তবে চুড়ান্ত প্রার্থী মনোনয়নে অধিকতর সতর্কতার আহ্বান জানিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তা না হলে বিগত নির্বাচনগুলোর মতো ভরাডুবির শঙ্কা তাদের।

২১ হাজার ভোটার অধ্যুষিত গোপালপুর পৌরসভায় আগামী ১৬ই জানুয়ারী দ্বিতীয় দফা পৌর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে গোপালপুর পৌরসভার মেয়র পদের জন্য মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ করেছেন লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বদিউর রহমান বদর, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, জেলা তাঁতীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন রিপন, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি রোকসানা মোর্তুজা লিলিসহ হাফ ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়া মনোনয়ন ফর্ম উত্তোলন ও জমাদানের শেষ দিন পর্যন্ত মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ করবেন আরো বেশ কয়েকজন নেতা বলে জানা গেছে।

স্থানীয় ভোটার ও রাজনীতি সচেতন মানুষরা মনে করছেন, চুড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি রোকসানা মোর্তুজা লিলি, জেলা তাঁতীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন রিপন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। এই তিন প্রার্থীর মধ্যে তুলনামূলক এগিয়ে রয়েছেন ক্লিন ইমেজের জেলা তাঁতীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন রিপন। পেশায় শিক্ষক রাকসুর এই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বেশ জনপ্রিয় পৌরবাসির কাছে। তিনি বিগত দিনে বিএনপি-জামাতের সহিংসতা ও অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সংগঠনে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এবারের পৌর নির্বাচনকে দেখছেন চ্যালেঞ্জ হিসেবে। তারা মনে করেন বিগত নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নে দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়নি। ফলে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের কাছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা শুধু পরাজিতই নয়, তাদের জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়েছে যা নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙ্গে দিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, বিগত নির্বাচনগুলোতে পরাজিত দলীয় প্রার্থীদের পুনরায় মনোনয়ন দিলে আবারো দলের ভরাডুবি হতে পারে। তাই স্বচ্ছ ও ক্লিন ইমেজসম্পন্ন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে পৌরসভায় জয় নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রকে আরো সতর্ক হওয়া উচিত।

এদিকে, গোপালপুর পৌরবাসীকে প্রাপ্য নাগরিক সেবার শতভাগ দিতে চান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মেয়র প্রার্থীরা। সর্বদা রাজনীতির বিপরীত স্রোতের অনুকূলে থাকা এই পৌরসভার সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্ব বার বার নাগরিক আকাঙ্খা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন তারাও। তাই আসন্ন পৌর নির্বাচনে দল মনোনয়ন দিলে নিজের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি কাজে লাগিয়ে নাগরিক সেবা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান নির্ভর আধুনিক পৌরসভা গড়তে চান তারা।

পৌরসভার ভোটাররা মনে করেন, ভারী শিল্প অধ্যুষিত গোপালপুর পৌরসভায় আগামী দিনে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ সম্ভাবনার সুযোগটি কাজে লাগাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও প্রয়োজনীয় পরিবেশসম্পন্ন পৌরসভা গড়ে তোলাই খুবই প্রয়োজন। এছাড়া পৌর এলাকায় রাস্তাঘাট নির্মাণ, জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় ড্রেন নির্মাণ, যানজট সমস্যা নিরসনে বাস-ট্রাকসহ পৃথক যানবাহন ষ্ট্যান্ড, আলোকিত পৌরসভা গড়তে পর্যাপ্ত সড়ক বাতি স্থাপন, জননিরাপত্তা নিশ্চিতে পৌর এলাকায় পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, ভার্চুয়ালি শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য ওয়াইফাই সংযোগ স্থাপন, শিশুকিশোর ও বৃদ্ধদের জন্য পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র, সন্ত্রাস ও মাদক সমস্যা নিরসনে জনসচেতনতা তৈরীসহ পৌরসভার বিভিন্ন কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার ও বাস্তবায়ন চান তারা।

মনোনয়ন প্রত্যাশী ইকবাল হোসেন রিপন বলেন, বিগত বছরগুলোতে এই পৌরসভার বিএনপি সমর্থিত মেয়ররা নাগরিকদের জন্য উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারেননি। ফলে নাগরিকরা তাদের প্রাপ্য মৌলিক সেবা থেকে একেবারেই বঞ্চিত। আমাকে মনোনয়ন দিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গী ও দুর্নীতিবিরোধী চলমান প্রক্রিয়াকে গতিশীলতা আনয়নের পাশাপাশি নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে আধুনিক পৌরসভা গড়ে তুলতে সচেষ্ট হবো।

অপর মেয়র প্রার্থী রোখসানা মর্তুজা লিলি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি ও আমার পরিবার দলের জন্য কাজ করে চলেছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে জয় উপহার দেবো।

মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, পৌর
বাসীর সেবায় আমি নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে সুযোগ দেন।

এদিকে, এই পৌরসভায় এখন দলের প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। তবে দলীয় সমর্থকরা মনে করছেন বিএনপির প্রার্থী হবেন বর্তমান মেয়র নজরুল ইসলাম মোলাম। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন সাবেক মেয়র মুঞ্জুরুল ইসলাম বিমল।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশে গণতন্ত্র, রাজনীতি আর  আইনের শাসন বলে কিছু নেই – দুলু 
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরের সিংড়ায় পাখি শিকারীকে ধরিয়ে দিলেই শীতবস্ত্র পুরস্কার

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে