নকল কীটনাশক প্রয়োগের ফলে ১৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট

0
198

নাটোর কন্ঠ : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নকল কীটনাশক প্রয়োগে ১১ কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিপূরণের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে বাজারের কীটনাশক ডিলারের দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।

ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়ে বুধবার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও এবং কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে, চলতি মওসুমে উপজেলার খাটখইর মাঠে কৃষকরা পেঁয়াজ, রসুন, পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করেছেন।

এসব ফসলের রোগ বালাই দূরীকরণে কীটনাশক প্রয়োগ করেন। কিন্তু সম্প্রতি ওই এলাকার হাকিমপুর বাজারের শরিফুল ইসলামের কাউছার ট্রেডার্স এবং সোহরাব হোসেনের দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানীর নামের কীটনাশক ক্রয় করে তাদের ফসলে স্প্রে করেন।

প্রায় ১০ থেকে ২৫ দিন পূর্বে বালাইনাশক প্রয়োগের পর ১১ জন কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির পেঁয়াজ, রসুন ও পেয়ারা নষ্ট হয়েছে। কৃষক বিকাশ, রাজিব, কুরবান, আশরাফ, রতন, নজরুল, মতিউর, বিপ্লব, আসাদ, কামরুল, সালমান জানান, ক্ষতির বিষয়ে দোকানিদের জানালেও ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা সংশ্লিষ্ট কীটনাশক কোম্পানীর লোকদের জানাই,

কোম্পানীর লোকজন মঙ্গলবার মাঠ পরিদর্শন করে এবং প্রয়োগকৃত কীটনাশকগুলো দেখে নকল বলে। এরপর আমরা ওইদিন দুই কীটনাশক ডিলারের দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেই এবং ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করি।’

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক রাজিব জানান, ‘চলতি মওসুমে তিন মাসের জন্য বিঘা প্রতি ১০ মণ গমের বিনিময়ে জমি লিজ নিয়ে সাড়ে চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছি। কীটনাশক প্রয়োগের পর সব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে।’

কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘ওই দুই দোকান থেকে কীটনাশক ক্রয় করে পেয়ারা বাগানে প্রয়োগ করেছিলাম। এরপর থেকেই বাগানের গাছ পুড়ে গেছে, পেয়ারায় লাল দাগ পড়ে গেছে, নতুন নতুন ফুল মরে যাচ্ছে।’

সরেজমিনে খাটখইর মাঠের ক্ষতিগ্রস্থ পেঁয়াজ-রসুন খেত ও পেয়ারা বাগান ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজের গাছগুলো মরে গেছে, কিছু কিছু গাছের পাতার মাথাগুলো মরে পুড়ে গাছ হলুদাভ হয়ে গেছে। পেয়ারার নতুন ফুলগুলো মরে গেছে, পেয়ারার গায়ে কালো দাগ পড়ে গেছে।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। তাছাড়া প্রয়োগ করা কীটনাশকের নমুনা কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো টেস্টের জন্য ল্যাবে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।’

ভারপ্রাপ্ত ইউএনও নিশাত আনজুম অনন্যা বলেন, ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতে কৃষকদের মাঠ পরিদর্শণ করা হয়েছে। তাছাড়া অভিযুক্ত দুই কীটনাশক ডিলারের দোকানে কৃষকদের লাগানো তালা খুলে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ কীটনাশক পাওয়া গেছে।

এছাড়াও সঠিক পথে না কিনে কিছু কীটনাশক বাইরে থেকে কমমূল্যে ক্রয় করে বিক্রি করার কথা দোকান মালিকরা স্বীকার করেছেন। একারনে দুই দোকানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে কাউছার ট্রেডার্সের শরিফুল ইসলামকে ৭ হাজার এবং অপর দোকানের সোহরাব হোসেনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরের বড়াইগ্রামে নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্ট : মৌখাড়া এ্যালিভেন্ট ষ্টার চ্যাম্পিয়ন
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরের লালপুরে কুপিয়ে ও হাত-পায়ের রগ কেটে যুবককে হত্যা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে