নাটোরের গুরুদাসপুরে সড়ক সংস্কারে অনিয়ম, তিন নম্বর ইটে চলছে কাজ

0
716
Road

গুরুদাসপুর, নাটোরকন্ঠ:
নাটোরের গুরুদাসপুর সোনাবাজু থেকে মৌখাড়া আজিজ মোড় পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের নামে অনিয়ম ও নিন্মমানের ইট-খোয়া ব্যবহারসহ বৃষ্টির মধ্যেই প্যালাসেটিং এর ঢালাই দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এলজিইডি গুরুদাসপুরের উপসহকারী প্রকৌলী শহিদুল ইসলামের সহযোগিতায় এ অনিয়ম করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে ওই সাত কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের অনুকুলে দুইটি গ্রুপে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। সেখানে কাজটি করছেন নাটোরের ঠিকাদার মাসুদ। সড়কটি গ্রেটার মেশিনের মাধ্যমে তিন ইঞ্চি রাস্তা আলগা করে অতিরিক্ত খোয়া ব্যবহার করা হবে। যাহা এক নম্বর পিকেট ইটের খোয়া হতে হবে। রাস্তার সকল ভাঙ্গনে নিচে তিন মিটার পিলার ১২ মিলি রোড দিয়ে ৬/৬ ইঞ্চি তৈরী করে দুই মিটার মাটির নিচে দিয়ে সেখানে ৬/৬ ইঞ্চি গ্রেটবিম করতে হবে। গ্রেটবিমের ওপরে এক মিটার ঢালাই ওয়াল নির্মান করতে হবে যাহা ৪ ইঞ্চি চওড়া করে মজবুত প্যালাসেটিং তৈরী করা হবে। কাজটি দেখভালের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হলেন উপসহকারী প্রকৌলী শহিদুল ইসলাম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রেটার মেশিনের মাধ্যমে তিন ইঞ্চি আলগা করার কথা থাকলে শুধু কার্পেটিং তুলে দেয়া হয়েছে। এক নম্বর পিকেট ইটের খোয়া পরিবর্তে দেয়া হয়েছে দুই ও তিন নম্বর ইটের ডাষ্ট মিশ্রিত খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। ১২ মিলি রোড দিয়ে ৬/৬ ইঞ্চি তৈরী করে দুই মিটার মাটির নিচে দিয়ে সেখানে ৬/৬ ইঞ্চি গ্রেটবিম করতে হবে। গ্রেটবিমের ওপরে এক মিটার ৪ ইঞ্চি চওড়া ওয়াল নির্মাণ করার কথা থাকলেও অনেক ভাঙ্গন বাদ দিয়ে ১০ মিলি রোড দিয়ে ৫/৫ ইঞ্চি পিলার, ৪/৬ ইঞ্চি গ্রেটবিম, ৩ ইঞ্চি ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। ওয়ালে ৪/৬ ইঞ্চি পর পর রোড দেয়ার কথা থাকলেও সেখানে দেয়া হচ্ছে ৬/৮ ইঞ্চি। কোন কোন স্থানে ১০ ইঞ্চি অন্তর অন্তর রোড বাঁধা হয়েছে। আবু জাফরের পুকুরের পারে প্যালাসেটিং বৃষ্টির মধ্যেই ঢালাই করা হয়েছে।
ওই রাস্তা সংশ্লিষ্ট জহুরুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, শাহ আলমসহ অন্ততঃ ১৫ জনের সাথে কথা বললে তারা জানান, রাস্তায় অত্যান্ত নিন্ম মানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। স্থানীয়রা এধরনের খোয়া ব্যবহার করতে নিষেধ করলে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদা বাজীর মামলার ভয়ভীতি দেখান ঠিকাদারের লোকজন।
ঠিকাদার মাসুদ মোবাইল ফোনে জানান, ৫শ’ শিএফটি খোয়া ভাটা থেকে ক্রয় করা হয়েছে। ওই খোয়া গুলো নিন্মমানের। পরে ভাল ইট দিয়ে খোয়া তৈরী করা হচ্ছে।
ওই কাজে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌলী শহিদুল ইসলাম বলেন, সময়ের অভাবে সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়নি। শুনেছি নিন্মমানের খোয়া দিয়ে কাজ হয়েছে। ঢালাই মাখানোর পর বৃষ্টি আশায় ওই ভাবেই ঢালাই দেয়া হয়েছে। কামাই করে খাচ্ছি, সহ্য হচ্ছেনা। যা হয় লিখেন। ২/৪ দিনের মধ্যেই বদলী নিয়ে চলে যাব।
গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি জেনে সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। ঠিকাদারকে সব কিছু পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধলালপুরে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সভা
পরবর্তী নিবন্ধচৌগ্রাম ইউনিয়নের ১৫০ জন পেলো খাদ্য সামগ্রী

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে