নাটোরে বর্ষবরণ ও স্থানীয় প্রশাসন

0
526

বিপ্লব কুমার পাল : শুভ নববর্ষ। দীর্ঘদিন পর পহেলা বৈশাখে নাটোরে ছিলাম। স্বভাবতই দেখার আগ্রহও ছিল প্রবল। কারণ ছোটবেলায় আমরা বিভিন্ন সংগঠন শোভাযাত্রা নিয়ে নাটোর রাজবাড়ীতে যেতাম।

সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো, ছিল খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও। পরবর্তীতে নাটোর বাজবাড়ীতে স্থায়ী মঞ্চও হয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগে নাটোরের সকল সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন একত্রিত হয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করেছে। তবে এবার সেই ছন্দ যেন কিছুটা কেটেছে।

স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে নাটোর রাজবাড়ীতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিল নাটোরের প্রশাসনের কর্মকর্তা, তাদের স্ত্রী সন্তান এবং জনপ্রতিনিধিরা। নাটোরের সকল সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের উপস্থিতি ছিল না সেই অনুষ্ঠানে।

নাটোর কানাইখালীতে রাস্তার পাশে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করেছে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। সেখানে গান-নৃত্য-আবৃত্তি যেমন ছিল, তেমনি অতিথিদের বক্তব্যে ছিল প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ। কেউ বলেছেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের প্রাপ্য সম্মান টুকুও দিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন।

কেন আলাদা অনুষ্ঠান?

সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বলছেন, তাদের ডাকাই হয়নি, সেখানে যাবেন কিভাবে? কিন্তু প্রতিবছরই জেলা প্রশাসন থেকে সবাইকে ডাকা হয়, সবার মতামত নিয়ে অনুষ্ঠান সাজানো হয়।

গত চারজন জেলা প্রশাসকের সময় তেমনটি দেখেছি। কিন্তু এবার কি এমন হলো? প্রশাসন কেন বেসরকারি সংগঠনগুলোকে ডাকলো না? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হয়তো আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

অনুষ্ঠান কেমন হলো?

দুটি অনুষ্ঠানে উৎসব ছিল। একটিতে ছিল প্রশাসনের আধিক্য, আরেকটি ছিল সাধারণ কিন্তু প্রাণবন্ত। বিকেলে কানাইখালীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল। কিন্তু রাজবাড়ীতে কিছুই ছিলনা। কিছু ছিলনা বলতে, একজন পুলিশ পর্যন্ত ছিলনা। অথচ হাজারো মানুষ বিকেলে ভিড় করেছিল রাজবাড়ীতে।

বঙ্গোজ্জ্বল মোড় থেকে রাজবাড়ী পর্যন্ত অটোরিকশা আর মোটরসাইলের চাপ। যে যার মতো চলেছে। তীব্র ভিড়ের কারণে সাধারণ মানুষের চলাচল থমকে ছিল দীর্ঘ সময়। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ কেউ এই যানজট ছড়ানোর চেষ্টা করে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করে।

এতো মানুষ রাজবাড়ীতে যান, একথা কি স্থানীয় প্রশাসন জানেনা। এখানে নিরাপত্তার জন্য কোন ব্যবস্থা ছিলনা কেন? সব দায়িত্ব যেন জনগণের! কিছু হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়!

অথচ স্থানীয় প্রশাসন যখন অনুষ্ঠান করলো, তখন প্রশাসনের সবাই ছিল। বিকেলে তারা নেই- তাই নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই? এটা কেমন নিয়ম? এসব দেখে মনে পড়ছে- নাটোরের রাজা-প্রজার গল্প।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনগণের শাসক নয়, সেবক হিসেবে কাজ করবেন।”
নাটোরের প্রশাসন কি প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনা মেনে চলেন? বলতে পারেন আপনিও…

লেখক : গণমাধ্যম কর্মী

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধগৃহবধূর র.হ.স্য.জ.নক মৃ.ত্যু.র অ.ভি.যো.গে
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরে প্রার্থীকে অ.প.হ.র.নে.র অ.ভি.যোগ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে