প্রধানমন্ত্রীর অনুদানে বেঁচে থাকা দরিদ্র শিক্ষার্থী কোবরা’র এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ ৫ অর্জন

0
643
Khadijatul-Kobra

বুলবুল আহাম্মেদ, লালপুর প্রতিনিধি, নাটোরকন্ঠ : প্রধানমন্ত্রীর অনুদানে বেঁচে থাকা পরিবারটির মেয়ে খাদিজাতুল কোবরা তার ভাইয়ের মতোই পরীক্ষায় ভালো ফল করেছে। সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার ভাই গত বছর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। দুই ভাই-বোনের সাফল্যে সবাই খুশি।

কিন্তু মেয়েটির উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণিতে পড়াশোনার খরচ নিয়ে পরিবারটি দুশ্চিন্তায় পড়েছে। সে এবার নাটোরের বড়াইগ্রামের সেন্ট জোসেফ’স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল। তার বিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবেল হোসেন বলেন, মেয়েটি তার ভাইয়ের মতোই মেধাবী।খাদিজাতুলদের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার কদিমচিলান গ্রামে। তার বাবা খাইরুল ইসলাম নিরাপত্তাপ্রহরীর চাকরি করে সংসার চালাতেন। মেধাবী দুই সন্তান নিয়ে বড় স্বপ্ন ছিল তাঁর।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার রায়ের দিন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা খাইরুলের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ নিয়ে ২০১৩ সালের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে , সেই খবরের কাটিংসহ খাইরুলের স্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি আবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী খাইরুলের স্ত্রীর হাতে ১০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র তুলে দেন। এই অনুদানের টাকায় তাঁদের সংসার চলে। খাইরুলের ছেলে জুবায়ের হোসেন গত বছর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।

সে সময় তাঁর পড়াশোনার খরচ নিয়ে সংকটে পড়ে পরিবারটি। এ নিয়ে গত বছরের ২১ অক্টোবর ‘প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের মান রেখেছেন জুবায়ের’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ঢাকার এক সহৃদয় ব্যক্তি তাঁর পড়াশোনার দায়িত্ব নেন। জুবায়ের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ২০১৩ সালের সেই দুঃসময়ে নাটোরের একটি কলেজের উপাধ্যক্ষ বাবুল আক্তার খাইরুলের স্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, তৎকালীন সাংসদ ও বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী খাইরুলের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। আর বলেছিলেন, ১০ লাখ টাকা দিলে তার অনেক অংশীদার বের হবে। এ জন্য পারিবারিক সঞ্চয়পত্র দেওয়া হলো। খাইরুলের স্ত্রী লিপি খাতুন বলেন, এই সঞ্চয়পত্র থেকে প্রতি মাসে যে মুনাফা পাওয়া যায়, তা দিয়ে তাঁর সংসার খরচ ও ছেলেমেয়ের লেখাপড়া চালাতে হয়। এখন মুনাফার পরিমাণ কমে এসেছে।

মাসে সাত হাজার টাকার কিছু বেশি পান। উল্লেখ্য ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাঈদীর ফাঁসির রায় হয়। দুপুরে নামাজ পড়ে উঠে খাইরুল স্ত্রীর কাছে ভাত খেতে চান। তাঁর স্ত্রী রান্নাঘরে খাবার আনতে যান। এ সময় হইচই শুনে খাইরুল বাড়ির বাইরে আসেন। তখন তাঁর চাচার বাড়িতে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা হামলা করে আগুন লাগিয়ে দেন। খায়রুলকে সামনে পেয়ে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেন তাঁরা।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধমেধাবী আদিবাসী শিউলি বাইসাইকেল চালিয়ে এখন স্কুলে যাবে!
পরবর্তী নিবন্ধগ্রামে প্রবেশের একমাত্র রাস্তা ‘পলক সড়ক’ পাকাকরণের দাবি গ্রামবাসির

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে