বড়াইগ্রামে মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ার আড়ালে আধ্যাত্মিক চিকিৎসা, প্রতারণা বন্ধের দাবি

0
356

বড়াইগ্রামে মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ার আড়ালে আধ্যাত্মিক চিকিৎসা, প্রতারণা বন্ধের দাবি

নাটোর কণ্ঠ:
নাটোরের বড়াইগ্রামের জারিন শাহরিয়া নিজেকে দাবি করছেন তিনি মেয়ে থেকে হয়েছেন পুরুষ। আবার বিয়েও করেছেন তিনি। শুধু তাই নয় অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা করছেন আধ্যাত্মিক জ্ঞান দিয়ে।

মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ার ঘটনায় শারিয়ারের বাড়িতে ভিড় জমেছে। কেউ এক পলক দেখতে চায়, কেউবা করাতে চায় চিকিৎসা। তবে সাংবাদিক এর ক্যামেরা দেখেই গা-ঢাকা দেয় শাহরিয়ার। মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ার চিকিৎসা বিষয়ে কোনো কথা বলতে চান না তিনি। তবে অনেক বুঝিয়ে তার আধ্যাত্মিক চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হন তিনি।

তিনি বলছেন কোন অসুস্থ রোগী যদি তার নাম এবং তার বাবা-মার নাম বলেন, তাহলে জন্মলগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত তাঁর কোথায় কি হয়েছে তিনি চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারেন। এবং সেগুলোর চিকিৎসা করছেন। আর এগুলো চিকিৎসা তিনি অনলাইনের মাধ্যমে ২০৫ টাকা বিকাশ ফি নিয়ে ঘরে বসেই দেশের বিভিন্ন স্থান সহ বিদেশী রোগীদের ও চিকিৎসা করে থাকেন টেলিপ্যাথির মাধ্যমে। আবার তিনি তার চিকিৎসা আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত ভাবে করলেও অন্য রোগীদের বেলায় করছেন আধ্যাত্মিক চিকিৎসা দিচ্ছেন জিন-ভূতের আছর থেকে মুক্তি কালা যাদু টোনা থেকে মুক্তি সহ নানা রোগের চিকিৎসা।

স্থানীয় এক শ্রমিক জানায় কিছুদিন আগেও তার বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে তিনি দেখেছেন তাকে মেয়ে পোশাকে ঘোরাফেরা করতে কিন্তু হঠাৎ করেই দুইদিন আগেই তাকে দেখছেন পুরুষের পোশাকে। এবং সে শ্রমিকের ভাবির বাচ্চা হয় না কেন তার চিকিৎসা করতেও ২০৫ টাকা ফি দাবি করেছেন জারিন শাহরিয়া।

মেয়ে থেকে ছেলে হওয়া কে কেন্দ্র করে এখন তার বাড়িতে দেখতে আসছেন বিভিন্ন জায়গার মানুষ।

স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি এসকল চিকিৎসা মানুষের সাথে ভাওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয় তবে,সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এসকল ভুয়া চিকিৎসকদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী।

নাটোরের সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম রেজা নাটোর কণ্ঠকে বলেন, বিষয়টিতে জানেন স্যারের সাথে কথা বলে আমার কাছে মনে হয়েছে আধুনিক চিকিৎসা সে হয়তো মেয়ে থেকে পুরুষে রূপান্তরিত হয়েছে কিন্তু আধ্যাত্মিক শক্তি এবং তার যান্ত্রিক শক্তি দ্বারা চিকিৎসা এটা এক ধরনের প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। তুমি যদি এ রকম প্রতারণা করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান প্রশাসনকে।

এ ব্যাপারে ডাক্তার সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, হরমোনের কারণে মানুষের আংশিক পরিবর্তন হতে পারে তবে রাতারাতি মেয়ে থেকে ছেলে হওয়া বা আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জন করা এটা এক ধরনের ভণ্ডামি এবং সাধারণ মানুষের টাকা-পয়সার লুণ্ঠন করায় তার মূল উদ্দেশ্য ।

এ ব্যাপারে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ইতিমধ্যেই তাদের ডিএসবি এবং বড়াইগ্রাম থানার পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করেছেন ,যদি কোন প্রতারিত ব্যক্তি অভিযোগ করেন তাহলে আমলে নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।

এতে সকল ভন্ড প্রতারকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধমানবতার সেবায় “ধারাবারিষা ফুটবল একাডেমি”
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরে বিলুপ্তির পথে এক সময়কার ঐতিহ্য “পলো” দিয়ে মাছ ধরা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে