বাগাতিপাড়ায় করোনা প্রতিরোধ কমিটির কাজে স্থবিরতা

0
487

বাগাতিপাড়ায় করোনা প্রতিরোধ কমিটির কাজে স্থবিরতা
সেলিম রেজা, বাগাতিপাড়ায়,নটোর, সরকারের (১৯মে)সকালে দয়ারামপুর বাজারের মু্ন্নু মার্কেটসহ উপজেলার বেশ কিছু মার্কেটে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। করোনায় দুই জন আক্রান্ত হলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে তার কোন প্রভাব দৃশ্যমান হয়নি। সচেতন মহলের দাবি উপজেলা প্রশাসনের দূর্বলতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটছে।
স্বাস্থ্য বিধি না মেনে কিভাবে ব্যবসা চলছে এমন প্রশ্নে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, আমরা আগের মতো আবারো বন্ধের দিকে যাচ্ছি। আগামীকাল থেকে কাঁচামাল, মুদি, কীটনাষক ও ঔষধের দোকান ছাড়া সকল দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রশাসনকে সহযোগীতা করতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “করোনা প্রতিরোধ কমিটি’’ সিপিসি’র ভুমিকা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। মানুষকে সচেতন করতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন সংগঠনটির সদস্যরা।সংগঠনটির সদস্যদের বর্তমান যুগের মুক্তিযোদ্ধা বলে আখ্যায়িত করেছেন অনেকেই। দেখাগেছে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাজারে আসা মানুষদের সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখতে এবং বিনা কারনে বাজারে ঘোরাঘুরি না করতে ও বাড়িতে অবস্থান করতে সচেতন করেছেন সিপিসি। এছাড়াও ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাড়ি ফেরা মানুষকে পারিবারিক হোম কোয়ারান্টাইন মানতে পরামর্শ প্রদান এবং উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সহ বিভিন্ন সংগঠনের খাদ্য সামগ্রী করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌছে দিতে সহযোগিতা করেছেন এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।
কিন্তু দেশের মানুষ যখন করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)এ বেশী সংক্রমিত এবং মৃত্যু বাড়ছে তখন নাটোররে বাগাতিপাড়ায় হাল ছেড়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এমনকি বেশ কিছুদিন থেকে মাঠে দেখা মিলছেনা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন (সিপিসি)সদস্যদের। প্রথম দিকে তাদের সক্রিয় ভূমিকার জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। তাতে কাজে উৎসাহ দেখা দিলেও বর্তমানে তাদের কাজের মধ্যে স্থবিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
কেন,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিপিসি’র কার্যক্রম স্থবির হয়েছে এমন প্রশ্নে “করোনা প্রতিরোধ কমিটি’’(সিপিসি) এর সমন্বয়ক ও স্থানীয় সাংবাদিক মিজানুর রহমান বলেন, প্রশাসনের জনবল কম থাকায় করোনা প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করতে হিমসিম খাচ্ছিলো। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম দেখে এবং করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করেছেন এই সংগঠনটি। উপজেলার সকল ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্রথম ও ২য় ধাপে সর্বমোট ১০২জন স্বেচ্ছাসেবী রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল সংগঠনটির সদস্যদের পরিচয় পত্রে স্বাক্ষর করে অনুমতি প্রদান করেন।
যেভাবে হাট-বাজারের দোকান পাঠ খোলা হয়েছে, তাতে আমাদের সিপিসি’র পক্ষে সম্ভব নয়। আগের পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তবে ঠিকই বলেছেন আগের চাইতে এখনকার কাজের গতি একটু কম। আর আমরাতো প্রশাসনকে সহযোগীতা করি মাত্র।
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এর আইন ও মানবাধিকার বিভাগের ছাত্র বাগাতিপাড়া করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য তাহমিনুর রহমান সজিব বলেন, সেচ্ছাসেবকের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় পরিবারের পক্ষ থেকে কাজে নিরুৎসাহীত করায় আমাদের কাজগুলো বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বাগাতিপাড়া ইউনিয়নের খেজের আলী বলেন, প্রথম দিকে করোনা প্রতিরোধ কমিটি গুরুত্বসহকারে কাজ করেছে। আবার সেচ্ছাসেবক হওয়ার জন্য খুব আগ্রহ দেখিয়েছেন অনেকেই।কিন্তু এখন তাদের কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। হয়তো নগদ কোন সুবিধা না থাকার কারনেই তারা আগের মতো কাজ করছেন না।
জিগরী এলাকার মিঠন আলী দাবী করেন, অনেকই মটর-বাইক নিয়ে ব্যবসয়ীক কাজ,বাজার এলাকায় আড্ডা মারতে ও বাজার এলাকায় নিজ দোকান খোলা রাখতে সেচ্ছাসেবক কার্ড করেছেন। প্রকৃত পক্ষে মাঠে কাজ করার মতো সেচ্ছাসেবকের সংখ্য খুব কম ।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নাজমুল হক বলেন, বাগাতিপাড়া পুলিশের তৎপরতা যথেষ্ট রয়েছে। প্রত্যকটি ইউনিয়নে একজন করে অফিসার দেওয়া আছে তারা দায়িত্ব পালন করছেন।
নাটোর জেলা পরিষদ সদস্য (বাগাতিপাড়া ওয়ার্ড) হাসানুর রহমান বিপ্লব বলেন, প্রশাসনের দূর্বলতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটছে। অনিয়মের বিষয়গুলি কঠোরভাবে দেখা উচিৎ।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধসিংড়ায় লটারীর মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে বোরো ধান সংগ্রহ শুরু
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরে সুবিধাবঞ্চিত ১৪৩জন শিশুর মাঝে ঈদ বস্ত্র ও খাবার বিতরণ করলেন ডিসি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে