বাগাতিপাড়ায় ফোন করে ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ

0
358
Bagatipara

সেলিম আহমেদ বাগাতিপাড়া সংবাদদাতা: করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য নিজ উদ্যোগে নাটোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শাহ রিয়াজ বিশেষ খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ কেরেছেন। নাটোর জেলার সব মানুষ যাতে এই খাদ্য সহায়তা পায় সেজন্য গঠন করেন বিশেষ কমিটি। জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শাহরিয়াজ বলেন,নাটোরে এমন কিছু নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার রয়েছে,যারা করোনার প্রভাবে বাড়িতে অনেক কষ্টে দিন যাপন করছেন। অনেকেই সম্মানের কথা ভেবে কারও কাছে নিজের দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে পারছেন না। অথবা এমন দরিদ্র রয়েছেন যারা অনেক কষ্টে আছেন,কিন্তু কোনো খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন না। তাদের কথা চিন্তা করে নিজ উদ্যোগে বিশেষ খাদ্য সহায়তা কমিটি গঠন করেন।

এই কমিটিতে সরকারি-বেসরকারি ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন। যারা ত্রাণ পাননি, আমার কিংবা কমিটির লোকজনের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করুন। বিশেষ ব্যবস্থায় আপনাদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। ফোন করলেই ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব খাদ্যসামগ্রী। (সূত্র সংবাদ শৈলৗ) জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগকে মহতী উদ্যোগ বলেছেন অনেকেই। বিশেষ করে যারা চক্ষু লজ্জায় কারো কাছে সহযোগীতা চাইতে পারতেন না তাদের জন্য সুবিধাজনক একটি মাধ্যম হয়েছিলো। কিন্তু কতটুকু সুফল পেয়েছেন সুবিধাভোগীরা? অভিযোগ উঠেছে বাগাতিপাড়া ও সিংড়া উপজেলার জন্য দায়িত্বে রয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল আমিন সরকার। যারা ত্রাণ পাননি তোদেরকে এই (০১৭১৭-৫৬৬৪৩২)নম্বরে ফোন করতে বলা হয়।কিন্তু বাস্ত চিত্র ভিন্ন। ফোন কলে ত্রাণ সুবিধা দেওয়ার হয়েছে দাবি করা হলেও তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন এবং অন্যকে দেখিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বাগাতিপাড়া ইউনিয়েনের ৩নং ওয়ার্ডের ভ্যান চালক রাকিবুল হাসান রকি দাবি করেন, তার ভ্যান চালানো না থাকায় সংসারে খাবারের সংকট দেখা দেয়।

তিনি সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারেন ফোন করলে বাড়িতে খাবার পৌছে যাবে। তাই তিনি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল আমিন সরকারের নম্বরে ফোন দেন। কিন্তু তাকে বলা হয় আপানি ইউএনও সাবহবকে ফোন দেন। পরে রাকিবুল ইউএনও সাহেবকে ফোন দিলে তিনি বাগাতিপাড়া ইউনিয়েনের চেয়ারম্যানকে ফোন দিতে বলেন। অতঃপর চেয়ারম্যান মজিবর রহমানকে ফোন দিলে চেয়ারম্যান সাহেব মেম্বেরকে ফোন দিতে বলেন। শেষে মেম্বরকে ফোন দিলে মেম্বর বলেন, যখন ত্রাণ আসে তখন দেয়া হবে। এতেকরে রাকিবুল হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন এতো বিড়ম্বনা হলে মানুষ না খেয়ে থাকলেও ত্রাণের জন্য ফোন করতে চাইবেন না। অপরদিকে স্থানীয় সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন বলেন, বাগাতিপাড়া ইউনিয়নের বসুপাড়া গ্রামের মৃত মদনের শারীরিক প্রতিবন্ধি মেয়ে মুর্শিদা খাতুন (২৮)।

মহিলাটি শারীরিক প্রতিবন্ধি হলেও পান বিক্রি করে সংসার চালায়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসা না থাকায় সংসারে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। তিনি সাংবাদিকের কাছে সহযোগীতা চাওয়ায় তার হয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল আমিন সরকারকে এসএমএস করেন তিনি। এসএমএস পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে বিরক্তির প্রকাশ করে পিআইও বলেন “ফোন করে বিরক্ত করেন কেন, পাগলা হয়ছেন নাকি” এমনটা দাবি করেছেন স্থানীয় সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন। এদিকে অনেকেই ফোন এবং এসএমএস করেছেন তাদেরকে ফিরতি এসএমএস-এ বলা হয়েছে আগামীকাল (মঙ্গলবার)ত্রাণ পাবেন। কিন্তু অদ্যবদি দেয়া হয় নাই। জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তাহলে এদরে ত্রাণ যাচ্ছে কোথায়? বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল আমিন সরকার বলেন, ‘অনেক মানুষ ফোন করে তাই সকলের ফোন রিসিভ করা সম্ভব হয় না। আর মোবাইল ফোনে বিরক্তির শুরে আমার কথা বলাটা ঠিক হয়নি।

কিন্তু অনেকেই ত্রাণ পেয়েছে। যারা আমাকে এসএমএস করেছেন তাদেরকে ত্রাণ না থাকার জন্য দেওয়া সম্ভব হয়নি। পর্যায়ক্রমে তারাও পাবে।’ বিষয়টি নিয়ে বাগাতিপাড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রোজ বলেন, জেলা প্রশাসকের এমন একটি মহতী উদ্যোগ বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল আমিন সরকার বাস্তবায়ন না করে, মানুষের সাথে বিরক্তি প্রকাশ করা এবং ত্রাণ চাওয়ার পরেও তাদেরেকে না দেওয়াটা দায়িত্বে অবহেলা মনে করি। আবার ত্রাণ না দিয়ে ভুক্তভোগীদের অন্য কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের দেখিয়ে দিয়ে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলাটা ঠিক হয়নি। সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্শন করে এমন দায়িত্বে অবহেলাকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন তিনি। সভাপতি আরো জানান একই সাথে দুই উপজেলাতে দায়িত্ব পালনের দোহাই দিয়ে ওই অফিসার কোথাও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন না। গতকাল বাগাতিপাড়া অফিসের সহকারী সাখাওয়াত হোসেন জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন।পিআইও কোথায় আছেন এবং সপ্তাহের কোন কোন দিন বাগাতিপাড়ায় অফিস করনে সেটাও তিনি জানেন না বলে দাবি করা হয়।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনার তালিকায় একজন থাকলেও সে নাটোরে আক্রান্ত হয়নি,আতংকিত না হওয়ার আহবান
পরবর্তী নিবন্ধমেয়র কল্যাণ ট্রাস্টের উপহার চলমান

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে