সিংড়া পৌরসভায় সবার আস্থা জান্নাতুল ফেরদৌস

0
952

তৃনমৃল নেতাকর্মী ও পৌরবাসির আস্থা সিংড়া পৌরমেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস

নাটোর কণ্ঠ: সিংড়া পৌরসভার একজন সফল মেয়র হিসেবেই তাঁকে চেনেন সিংড়া পৌরবাসি। তাকে নিয়ে বিরোধিতার খাতিরে কেউ বিরোধিতা করতে পারে, কিন্তু কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি কিংবা পৌরবাসির কোনো বিপদে পাশে দাঁড়াননি এমন রেকর্ড নাই। মাত্র ৫ বছরে পৌর এলাকার মানুষের মুখে মুখে নাম ফেরদৌস। খুব অল্প বয়সে বাবা, মা, ভাই হারানো এ মানুষটি পৌরবাসির মাঝে খুঁজে বেড়ান তাঁর বাবা, মা কিংবা ভাইকে। তাই মানুষের সেবা করা, বিপদে আপদে পাশে দাঁড়ানো যে নামটি সবার মুখে মুখে তিনি জান্নাতুল ফেরদৌস।

করোনার দু:সময়ে দিন রাত পরিশ্রম করে মানুষের ঘরে খাবার পৌছে দিয়েছেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে করজোরে মিনতি করে মানুষকে ঘরে পাঠিয়েছেন। পৌরসভার চলো পরিবহনে এবং হট লাইন সার্ভিসে রাত ২ টার সময়ে বাড়ি বাড়ি করোনার দু:সময়ে চাল, ডাল নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার পৌছে দেন তিনি। করোনার সময় টানা ৫৪ দিন পৌরসভায় দিনরাত কাটিয়ে খাদ্য সামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌছে দেন তিনি। কারো কারো বাড়িতে নিজে বাজার করে পৌছে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

এবছরে শ্রমিক সংকটে নিজে স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে প্রান্তিক কৃষকদের ধান কেটে তাদের ফসল বাঁচিয়েছেন। বন্যার সময় বুক পানিতে নেমে ত্রাণ দিয়েছেন বন্যার্ত পৌরবাসীর ঘরে ঘরে। মেয়র হয়ে নয়, সিংড়াবাসীর দশ জনের একজন হয়ে যে ফেরদৌস কাজ করেন, তা কারোই অজানা নয়। এভাবেই মানুষের পাশে থেকে, কাছে থেকে সিংড়া পৌরবাসীর আস্থা, ভরসার জায়গাটি অর্জন করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস।

গত বৃহষ্পতিবার পৌরসভা নির্বাচনে পুনরায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দলীয় মনোনয়ন ফর্ম উত্তোলন ও জমা দেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মেয়র ফেরদৌস। পরদিন শুক্রবার তৃনমৃল আওয়ামী লীগের দলীয় ভোটাভুটিতে ৮২ জন ডেলিগেটের সমর্থন পেয়ে কেন্দ্রে প্রেরিত তালিকার শীর্ষে আসেন তিনি। ১১৫ টি ভোটের ৮২ ভোট পেয়ে প্রমান দেন শুধু জনসমর্থনে নয় দলের সমর্থনে ও সর্বোচ্চ।

মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস মনোনয়ন ফর্ম জমা দেয়ার সময় শুধু দলীয় নেতাকর্মী নয়, এসেছিলেন এমন অনেক ব্যক্তি যারা কোনো দলের রাজনীতির সাথে যুক্ত নন। মেয়রের প্রতি ভালোবাসা থেকে তারা সাথে এসেছেন। সিংড়া পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এসব সাধারন মানুষ শুরু করছেন জনসংযোগ।

মূলত মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস তার কর্মনৈপূন্য ও সিংড়াবাসীর প্রতি দায়িত্ববোধের সবচেয়ে বড় পরিচয় দিয়েছেন ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসের বন্যায়। ওই বন্যায় পৌরসভার ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৩০০ বানভাসী মানুষকে মাসাধিকাল আশ্রয়ের ব্যবস্থাসহ নিয়মিত খাবারের ব্যবস্থা করেন জান্নাতুল ফেরদৌস। এছাড়া বানভাসী অবস্থায় নিজ নিজ এলাকায় অবস্থানরত পরিবারগুলোকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ত্রাণ সহায়তা দেন তিনি।

২০২০ সালের দুই দফা বন্যায় আবারও সিংড়া পৌরবাসীর জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন জান্নাতুল ফেরদৌস। খুব বেশিদিন আগে নয়, গত অক্টোবরের শুরুতে সিংড়া সিংড়া পৌরসভার শোলাকুড়া মহল্লায় তীব্র স্রোতে ৩৪টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হলে ওই মহল্লায় অস্থায়ী বাধ দিয়ে অবশিষ্ট বাড়িঘর রক্ষা, দুর্গত মানুষদের খাদ্য সরবরাহ ও তাদের মালামাল সামগ্রী স্থানান্তরে নিরন্তর পরিশ্রম করে একপ্রকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন এই মেয়র। এবারও পৌর এলাকার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ব্যক্তি উদ্যোগে কয়েক হাজার বন্যার্তদের আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করেন তিনি। পানিবন্দী মানুষদের প্রতিদিন খাবার পৌছে দেয়া, বন্যার পানি প্রবেশ রোধে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতে শ্রমিকদের সাথে অংশ নেয়াসহ নানাকাজে তাদের সাহায্য করেন।

সিংড়া পৌরবাসীর জন্য মেয়র ফেরদৌস আন্তরিকতার সাথে কিছু বিশেষ কাজ করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হল-পৌর সড়কগুলোতে সৌর বিদ্যুতের স্ট্রিট লাইট স্থাপন, সিংড়ার বারনই নদীতে ৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ, বন্যার পানি প্রবেশ রোধে শহর রক্ষা বাঁধ ও আরসিসি সিড়িঘাট নির্মাণ, নাগরিক সুবিধার্থে পৌরসভার পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ও এম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা, পৌরসভার বাড়িতে বাড়িতে জরুরী মোবাইল নম্বর সম্বলিত হোল্ডিং প্লেট স্থাপন, অবৈধ দখলকৃত বাজারের জায়গা দখলমুক্ত করা, খাদ্যে ভেজাল ও চলনবিলের জীববৈচিত্র রক্ষায় ভূমিকা প্রভৃতি।

বন্যায় ফসলহানির আশংকা থেকে সিংড়ার কৃষকদের ফসল বাঁচাতে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশে নিজেই ফসল কেটে ঘরে তুলে দিয়েছিলেন মেয়র ফেরদৌস। এপ্রিলে করোনা সংক্রমণের সেই সময়ই ছিলো বোরো ধান সংগ্রহের সময়। কাটতে একটু একটি দেরী হলেই যেখানে কৃষকের ধান মাঠেই তলিয়ে থাকার কথা, তখন একবেলা পৌরসভায় দাপ্তরিক কাজ করে আরেকবেলা নিয়ম করে ধান কাটতেন মেয়র ফেরদৌস, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে প্রশংসিত হন মেয়র ফেরদৌস।

মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, যেসব প্রত্যাশা নিয়ে পাঁচ বছরের জন্য সিংড়াবাসী আমায় নির্বাচিত করেছিলো, আমি শুধু তাই পূরণের চেষ্টা করে গেছি। আমি যদি সত্যিকার অর্থেই পৌরবাসীর সেবা করতে পারি তবে অবশ্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে আবারও সুযোগ দেবেন বলে বিশ্বাস করি। বাকীটা আল্লাহর ইচ্ছা। তিনি আরো বলেন, আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নাই। পৌরবাসি আমার বাবা, আমার মা, আমার ভাই,তাদের মাঝেই আমার স্বপ্ন। আমি কাউকে হিংসা করিনা, কারো বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নাই। একজন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এবং মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী, আমার অভিভাবক জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির পরামর্শে আজীবন মানুষের সেবা করে যাবো।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধঅবশেষে গোপালপুর পৌর নির্বাচন নৌকার হাল লিলির হাতে
পরবর্তী নিবন্ধ‘কবি মাহবুবুল হক শাকিল সাহিত্য পুরস্কার ২০২০ পেলেন কবি অরবিন্দ চক্রবর্তী

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে