সিংড়া শোলাকুড়া গ্রামের, বানভাসি মানুষেরা কেমন আছে?

0
465
nATORE KANTHO

নাটোর কন্ঠ : “ঐ যে দেখছো বাবা অগাধ পানি! একদিন ঐখানে আমার বসত ভিটা ছিল। হঠাৎ এক কাল রাতে শাঁ-শাঁ পানির তোরে আমার বসত ভিটা ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেল। পানির স্রোত থেকে কোনরকমে প্রাণ নিয়ে বেঁচে আশ্রয়ে দিকে ছুটে চলি আমি,আমার তিন সন্তান নাতি-নাতনী ও বৌমারা। স্বামী ? গত হয়েছে সেই কবে! মনেও নেই বাবা।

তিন ছেলে, নাতি- নাতনী ও বৌমাদের নিয়ে আমাদের সংসার বেশ হাসি খুশিতেই কাটত।ছেলেরা মাঠে পরের জমিতে কামলা দিয়ে যা রোজগার করে আনত তাই দিয়ে কোনরকমে আমাদের আহারের জোগাড় হতো।এখন চারিদিকে নেই কোনো কাজ বিলজুড়ে হাহাকার। জীবনের চারিদিকে ধুধু বালুচর।আজ খাবারের অনিশ্চয়তায় আমরা।রাতে ঘুমানোর জন্য মাতবরেরা আশ্রয় দিয়েছিল পাশের একটা মাদ্রাসায়।

সেই সময় মাতব্বরেরা শুকনা খাবার, খিচুড়ি দুই-তিন দিন খাইয়েছিল এবং মন্ত্রী তাঁর বাড়ীতে ডেকে পাঁচ হাজার টাকা নগদ দিয়েছিল।ঐখানে বেশ কয়েক মাস কেটে গেছে।মাদ্রাসার লোকজন এখন বলছে তোমরা এই মাদ্রাসায় থাকতে পারবে না। তোমরা বেরিয়ে যাও।

কোথায় যাব বাবা আমরা এখন?কত নেতা ও স্যারেরা বলেছিল তোমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি আগের মতন করে দেওয়া হবে। কিন্তু কয়েক মাস কেটে গেলেও কেউ কথা রাখেনি। কি হবে আমাদের ভবিষ্যৎ? কোথায় গিয়ে নিশ্চিন্তে একটু ঘুমানোর আশ্রয় পাব? দুবেলা-দুমুঠো খাবারের নিশ্চয়তা পাব? তোমরা বলতে পারো বাবা?”

এভাবেই বলছিলেন সিংড়া উপজেলার সেই আলোচিত শোলাকুড়া গ্রামের ছিন্নমূল হতদরিদ্র বিধবা নারী মৃত জাফের মৃধার স্ত্রী জুলেখা বেওয়া।শুধু তিনি নন, তার মত ৩৫ টা পরিবারের ভিটা, বসত বাড়ি সবই সেই বন্যায় ভেসে গিয়েছিল। তারা আজ বেদনা ভরা কন্ঠে আশ্রয় খুঁজে ফিরছে।কোথায় সেই প্রতিশ্রুতি দাতারা?

চলবে…

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধলালপুরে গৃহবধু হত্যার অভিযোগে স্বামী আটক
পরবর্তী নিবন্ধসিংড়া পৌরসভায় নৌকাকে বিজয়ী করতে মাঠে শিক্ষকরা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে