স্মৃতিপটে ও অনুপ্রেরনায় শহীদ জননেতা মমতাজ উদ্দিন – প্রভাষক মোয়াজ্জম হোসেন

0
401
Momtaj

স্মৃতিপটে ও অনুপ্রেরনায় শহীদ জননেতা মমতাজ উদ্দিন

প্রভাষক মোয়াজ্জম হোসেন : বছরের প্রতিটি দিনই রাজনীতি ও লালপুরের উন্নয়ন নিয়ে ভাবতে গেলেই মনের অজান্তেই ভেসে উঠে সদা হাস্বোজ্জ্ব্যল, মিষ্ট ভাষী, ভালোবাসার বাতিঘর খ্যাত শহীদ জননেতা মমতাজ উদ্দিনের কথা। মনে হয় নেতা যদি থাকতেন তবে দলের মধ্যে হয়তো কোন কোন্দল হতো না, নিজেদের মধ্যে মারামারি-হানাহানি থাকতো না। দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটি সৌহার্দ্য পূর্ন সম্পর্ক থাকতো। সর্বোপরি নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের দলীয় নেতাকর্মী শুধু নয় সকল স্তরের মানুষের আস্থা, বিশ্বাস আর ভালোবাসার অভিভাবকটি বেঁচে থাকতো। এ অভাবটা হয়তো লালপুর-বাগাতিপাড়ার মানুষের আর কোন দিনই পূরন হবে না। তাই এ হাহাকারটি আরো জ্বলন্ত হয়ে উঠে প্রতিবছর যখনই ৬ ই জুন আসে, ঠিক তখনই বুকের মধ্যে কেঁপে উঠে, কান্না বের হয়ে আসে।

২০০৩ সালের আজকের এই তারিখে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, লালপুর-বাগাতিপাড়ার মাটি ও মানুষের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জননেতা মমতাজ উদ্দিনকে রাতের অন্ধকারে নিমর্মভাবে কুপিয়ে হত্যা করে কতিপয় কুলাঙ্গাররা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালী জাতির কাছে বিশাল হৃদয়ের ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় নেতা হিসেবে সমাদৃত। ঠিক তেমনি লালপুর-বাগাতিপাড়া বাসীদের নয়নের মনি শহীদ জননেতা মমতাজ উদ্দিন। জন্মগত কারনে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাত আমার ভাগ্যে না জোটলেও প্রিয় এ নেতার স্নেহ মাখা ভালোবাসা ও আদর পেয়েছি। আমি তখন কিশোর, প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শেষে মাধ্যমিকে প্রবেশের সময় ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। প্রিয় নেতার মার্কা নৌকা, প্রতিটি মিছিলে বড়দের সাথে যেতাম। মিছিলে ঘেমে সারা শরীরে ঘামাচি, প্রিয় নেতা এলাকায় আসলেন। সর্ব কনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পিঠে আশীর্বাদ পুষ্ট হাতটি পরম পরশে বুলিয়ে দিলেন। নিমেষেই ভালোবাসা ও স্নেহে ভরা হাতের স্পর্শে সকল জ্বালা-যন্ত্রনা যেনো বরফের ন্যায় ঠান্ডা হয়ে গেলো।

এরপর এলো দুড়দুড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সম্মেলন। সম্মেলনে কোরআন তেলাওয়াত করলাম, প্রিয় নেতা ভালোবেসে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদটি আমাকে দিলেন। পরের সম্মেলনে ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী হলাম। নেতা বললেন, তোমার সামনে অনেক সময় আছে, এখন সহ-সভাপতি হও। নেতার নির্দেশ মেনে নিলাম। আগামী কমিটিতে আমায় সভাপতি করবেন সে অপেক্ষায়। আমার এ অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হলো না। ২০০৩ সালে নরপশুরা আমার প্রিয় নেতাকে, ভালোবাসার বাতিঘরকে নির্মমভাবে হত্যা করলো।

তাই ছাত্রলীগ সভাপতি হওয়ার স্বপ্ন পূরন আর হলো না, বর্তমানে দুড়দুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক হিসেবে আছি ৬ বছর ধরে। যার রক্তে তিল তিল করে গড়ে ওঠা এই আমাদের আজকের লালপুর-বাগাতিপাড়া। কিভাবে ভুলবো তোমার রক্তের দাগ? তোমাকে হারিয়ে আজ আমরা সর্বহারা, তোমার কাছে আমাদের অজস্র ঋণ” তোমাকে আজও ভুলিনী আর ভুলবো না কোন দিন। জানি তোমার ঋণ শোধ করবার সাধ্য আমার নেই। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই চাওয়া, যতদিন বেঁচে আছি তোমার মত সততা, ভদ্রতা ও ভালোবাসার মানুষ হয়ে যেনো চলতে পারি।

আজ কৃতি এ নেতার ১৭ তম শাহাদতবার্ষিকী। এ দিনটিকে নিয়ে কোন কাঁদা ছুড়াছুড়ি বা দলাদলি বা গ্রুপিং নয়। মমতাজ এক আদর্শের নাম, প্রেরণার নাম। মমতাজ শুধু একটি পরিবারের সদস্য নন, উনি লালপুর-বাগাতিপাড়া তথা নাটোরের সকল স্তরের মানুষের ভালোবাসার নাম। তাই আসুন সবাই দোয়া করি, প্রিয় এ নেতাকে আল্লাহ্ যেনো জান্নাতবাসি করেন- আমিন। লেখক : প্রভাষক ও সাংবাদিক মোয়াজ্জেম হোসেন, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক, দুড়দুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোর জেলাবাসীর প্রতি সাবেক ওসি মনিরুল ইসলামের খোলা চিঠি
পরবর্তী নিবন্ধএকজন মানবতার ফেরিওয়ালা মনিরুল ইসলাম- আবু জাফর সিদ্দিকী

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে