২য় দফা বন্যায় ‘বিপাকে’ নলডাঙ্গার লক্ষাধিক মানুষ

0
426

২য় দফা বন্যায় ‘বিপাকে’ নলডাঙ্গার লক্ষাধিক মানুষ

নলডাঙ্গা, নাটোর কণ্ঠ:
লাগাতার বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নাটোর জেলার নলডাঙ্গা পয়েন্টে বারনই নদীর পানি বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। অন্যদিকে আত্রাই নদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়ে ঢুকে পড়েছে হালতির বিলে। হালতির বিলের অববাহিকা পানিতে ভাসছে।

দ্বিতীয় দফায় বন্যার পানিতে ভাসছে নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার নলডাঙ্গা পৌরসভা, ব্রহ্মপুর, মাধনগর, খাজুরা ও পিপরুল ইউনিয়ন। পানিবন্ধী হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।

পৌরসভা ও ইউনিয়ন গুলোতে বন্যার পানি ঢোকার কারণে, শতশত কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে এবং রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে ভেঙ্গে যাচ্ছে। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উঁচু জায়গাতে।

ঝুঁকিতে রয়েছে বারনই নদীর বাঁধের অনেক পয়েন্ট, যদিও এর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলেছে কিন্তু পানি বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকির মধ্যে আছে বাঁধ।এলাকাবাসীর দাবি এখন কোনো ধরনের ভারী যানবাহন যেনো চলতে না দেওয়া হয়।সেই সাথে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের আবেদন জানান তারা।

উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগ প্রায় বিছিন্ন হয়ে পড়েছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর। ক্ষতিগ্রস্থের তালিকা তৈরী করছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নের গ্রামের অধিকাংশ পরিবার এখন বন্যার পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। ডুবে গেছে অসংখ্য ফসলি জমি, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

বুক পানি ভেঙ্গে বাড়ির বাইরে যেতে হচ্ছে কমবেশী সবাই’কে- হয়তো অনেকের ঘরে খাবার নেই এখন – অনেকের ঘরে চাল-ডাল থাকলেও চুলোতে পানি জমে আছে – হয়তোবা কারো ঘরে চাল আছে, অথচ উনুন জ্বালানোর দিয়াশলাই নেই – হয়তো কেউ অভুক্ত’ও থাকতে পারেন। দেখা দিচ্ছে বিশুদ্ধ পানির অভাব।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই বলেন পানির নিচে তলিয়ে থাকলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রসাশনের উপস্থিত চোখে পড়ার মতো ছিলোনা।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতিতে নলডাঙ্গা উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে জরুরি হেল্প লাইন খুলা হয়েছে এবং বন্যা দূর্গতদের পাশ্ববর্তী আশ্রয়কেন্দ্র, স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসায় আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপজেলা প্রসাশনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল-মামুন।

১লা অক্টোবর বৃহস্পতিবার নলডাঙ্গা উপজেলার বন্যা দূর্গত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক( সার্বিক) নাদিম সারোয়ার।
এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল- মামুন সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ।

বন্যায় সবচেয়ে বিপদে পড়েছেন বৃদ্ধ, শিশু,নারী,প্রতিবন্ধী, এবং অসুস্থ মানুষরা।
গবাদি পশু পাখি ও আছে চরম খাদ্য সংকটে।

পাটুল হাপানিয়া স্কুল এন্ড কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ফরিদা বেগম ( ৪০) বলেন আমার বাড়ি পুরোটাই ডুবে গেছে এর আগেও দীর্ঘদিন আশ্রয় কেন্দ্রে থাকতে হয়েছে না জানি এবার আর কতদিন থাকতে হবে।

খোলাবাড়িয়া গ্রামের কলেজ ছাত্র জুলহাজ (২১) বলেন অস্বাভাবিক পানি বাড়ায় পানি ঢুকে পড়েছে হালতির বিলের দ্বীপ গ্রাম গুলোতে।

বাঁশভাগের এরশাদ আলী(৬০) বলেন এত পানি ১৯৮৮ সালের বন্যায় ও দেখিনি আমি।

সকল বানভাসিরা দ্রুত সরকারি সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধসম্মানিত নাটোর জেলাবাসী: কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে সম্পত্তি কিনুন, মামলা নয়!- এসিল্যান্ডের খোলা চিঠি
পরবর্তী নিবন্ধআমরা সবাই যখন সাংবাদিক- গোলজার আহমেদ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে