অনন্ত অপেক্ষার প্রহর
মাহফুজা আরা পলক
বাস্তবতার ঘোড়ায় চেপে
দূরন্ত বেগে ছুটে চলা জীবনে যখন রাত নামে,
তখন জীবনে হঠাৎ লাগাম টানার ঝাঁকুনিতে-
শরীরে অসহ্য যন্ত্রণার উদ্রেক হয়।
ঘরের চৌহদ্দিটা অন্ধকূপের মতো;
গলা চেপে প্রতিশোধ নেয় বেহিসেবী সময় গুলোর।
পরাস্ত হয়ে কোনরূপ খোলা রোয়াকে ছুটে আসি স্বস্তির আশে।
অনন্তে চোখ মেলে খুঁজি শৈশবে হারিয়ে যাওয়া কোন মুখের আদল,
যে ছিল আমার অস্তিত্বের অন্যতম উপকরণ।
যার চলন,বলন,ব্যক্তিত্ব এমনকি প্রতিটি হাসির অনুরণ
আমায় এতকাল দূরন্ত বেগে চলার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।
আমি ভীষণ ভাবে ব্যাকুল হয়ে খুঁজি
সেই নক্ষত্রের মাঝে তার পবিত্র মুখখানি,
এখনো ঠোঁট ভাঙা কান্নায় নিরব সলিল ঝরে অসহায় কপোলে।
সবাই বলতো তুমি আছ, তুমি আছ অনন্তের নক্ষত্রের বাগানে,
রাতের আকাশে দেখা দিবে তুমি আমার প্রতিক্ষার চোখে।
তবে কেন হয়নি শেষ-
এই ব্যথাতুর হৃদয়ের আর্তি ভরা ক্রন্দনরত প্রতিক্ষার রজনী,
তোমায় খুঁজে না পাওয়ার বেদনায় সীমাহীন অম্বরে,
আজো রজনীর আড়ালে ছলছল চোখে নিয়ত নিশি জাগি।
একটি বার এসো- এসো মোর শয্যা পাশে,
তোমার করপুট ভরে শান্তির পরশ বুলিয়ে যাও শৈশবের আদলে,
দ্রুতবেগে ছুটে চলা সওয়ারি হয়ে আমি আজ বড় বেশি ক্লান্ত।
বিষাদ ভরা ভারবাহ জীবনে আমি ন্যুব্জ হতে হতে
আর্তচিৎকারের শক্তি হারিয়ে অস্ফুট স্বরে কেবল তোমায় ডাকি- বা…..বা…..
একটি বার আমার হৃদাকাশে এসে শান্তির পরশ বুলিয়ে যাওনাগো।
রাতের আঁধারে তখন শুধু- দূর থেকে
ভেসে আসা বেহালার করুন সুর কানে কানে আমায় জানায়,
অপেক্ষা কর…. অপেক্ষা কর….
অপেক্ষা ফুরোতে লাগবে সমগ্র জীবন।।
১১.০২.২০২১