“প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি” -বেণুবর্ণা অধিকারী

0
638

বেণুবর্ণা অধিকারী : কুয়াকাটা থেকে বরিশালে এসে আতিথেয়তা আর খানাপিনাতে আগ্রহ কম থাকায় নতুন কিছু দেখতে চাই বললাম বন্ধু ভি হালদারকে, সেটা যদি স্বরূপকাঠির কুড়িয়ানা, আটঘর ভিমরুলি বাজারের ভাসমান বাজার হয় তাইলে ভাল হয়। আগেরদিন দুপুরেই বাস থেকে নেমে চলে যেতে চেয়েছিলাম।

কিন্তু সে বললো এখন গেলে তোমার ওখানেই থাকতে হবে ফিরে আসা সম্ভব হবে না। আসলে আমার ভ্রমণ হলো বাজেটের। তাই ভেবেছিলাম একাই চলে যাব তাইলে ভায়োলেটের উপর প্রেসার হবে না, কারণ সে আবার বাসে চড়তে পারে না।

অগত্যা ভাড়ায় চালিত কার নিয়েই পরেরদিন সকাল ৭ টায় বেরিয়ে পড়লাম চুপিচুপি আমি আর ভায়োলেট। কাউকে বলা হয়নাই কারণ আমার হাতে সময় কম, ৩ টার গ্রীনলাইন লঞ্চের টিকেট করা হয়েছে। ফিরতে হবে ১টার ভেতরেই।

পথে যেতে যেতে ধান -নদী-খাল এই তিনে বরিশালের বাস্তবতা দেখে মুগ্ধ। ছোট ছোট খাল গাছের ফাঁকে ফাঁকে নিজ অবয়বেই সুন্দর। স্বরূপকাঠির রুপ আমাকে প্রতিবারই আকর্ষিত করেছে। অসাধারণ একটা উপজেলা। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানেই প্রতিবারই প্ল্যান করি কিন্তু যাওয়া হয় না।

আটঘর কুড়িয়ানায় তো রীতিমত আমড়া আর পেয়ারা গাছ পলে পলে সাজানো আর এর ফাঁকে ফাঁকে খাল। গাছের আকৃতিগুলো অনেকটাই ভিন্ন। এগুলোর সাথে সারি সারি নারিকেল আর স্লিম সুন্দর সুপারীগাছ আকাশের দিকে ধাবিত। এতই মনোমুগ্ধকর যে একবেলার ভ্রমনে মন ভরে না।

এইখানে এই নিরব ধরণীতে আমি অনন্তকাল থেকে যেতে পারি শুধু বুক ভরে শ্বাস নিতে, চোখ ভরে সবুজ পড়তে। আমরা যে যাব তা ভায়োলেটের বর স্বপন আগেই সেখানকার চেয়ারম্যান শেখর শিকদারকে ফোনে জানিয়েছে, কিন্তু উনি তখন কলকাতার পথে। তাতে কোন সমস্যাই হয়নি, তার ভাই এস আচার্য আমাদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো এলাকা ঘুরিয়ে দেখিয়েছে।

সকালের নাস্তা করলাম স্বপনের মাসির হোটেলে, উনি জোর করেই আমাদের আপ্যায়ন করলেন। দুপুরে চেয়ারম্যানের বাড়িতে আমাদের জন্য নানানপদী দূর্লভ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢেঁকিশাক চিংড়ি, দেশি কচু চিংড়ি, ইলিশভাজা, চিংড়ি নারিকেল বেটে কলাপাতায় পাতুরি পিঠা, দেশিমুরগীর ঝাল ভুনা।

খাওয়া শেষে চেয়ারম্যানের গাছপালা আর বিভিন্ন খামার ঘুরে আবার ফেরার পথে বেরুলাম। আসার আগে সংগীত গরমাগরম কফি খাওয়ালো তাদের অফিসের কার্যালয়ের কাছে। আশেপাশে অনেক এলাকা ঘুরতে গিয়ে কিছু মন্দির, আশ্রম দেখলাম। চমকিত হলাম প্রাকৃতিকভাবেই জলগোলাপের অনেক পানা দেখে।

যেটা ওদের কাছে কচুরিপানাই। আমি সেখানকার এক বোনকে দিয়ে কিছু গাছ পলিতে ভরে নিয়ে এলাম। এটাই অনেকটা আনন্দ দিল আজকের ভ্রমনের। দেড়টায় ফিরে গুছিয়ে লঞ্চঘাটে চলে এলাম এবারের ভ্রমনের সমাপ্তি টেনে।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধ”হর্ষে হর্ষে” – ভাস্কর বাগচী‘র কবিতা
পরবর্তী নিবন্ধ“লুট ও শ্রম” কবি রেজাউল করিম রেজা‘র কবিতা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে