ভালোবাসা বুঝিস
কবি মাহফুজা আরা পলক
বিহগের ডানায় পড়ন্ত রোদ্দুর
পরম মমতায় উষ্ণতা ছুঁয়ে দিয়ে
বিহ্বলতায় শুধায়- ভালোবাসা বুঝিস?
জানিস- বেলা শেষে কেন দিগন্তের বুকে
নিতুই চলে ভানুকরের লুকোচুরি?
তৃণময় বিস্তৃত প্রান্তরে হাওয়ার লহরি
কেন ঢেউ তুলে সূক্ষ্ণ শীষের সুরে?
কেন ছয় ঋতু পরমানন্দের বান ডেকে যায়
প্রকৃতির হৃদয় অতলে বারে বারে।
হংসেরা কেন সদলবলে এতো উচ্ছাসে মেতে
নদীর সোঁতায় দিনমান ঘুরে জলকেলি করে?
আম্রমঞ্জরীর ঘ্রাণে বিমোহিত হয়ে গুঞ্জরন তুলে
ভ্রমর কেন পরাগায়নে মাতে মধুমাসে?
ধেয়ে আশা বোশেখের মাতাল বাতাসে
নিঃসীম পাথারে চঞ্চল মেঘের চঞ্চুতে চঞ্চুতে
নটরাজ রুদ্র নৃত্যের ঝঙ্কার কেন তুলে?
কেনই বা উত্তাল সাগরের বুকে ঢেউয়ের দোলায়
দুলে দুলে পালতোলা সাম্পান অভয়ে ভেসে চলে?
কেনই বা ধামিনী নদীর নাব্যতা হারিয়েও
ঝিরিঝিরি জলের ধারা আজও তার নামে বয়ে যায়?
কেন এমনতরো ছায়াঘেরা বনের বুক চিরে
মেঠোপথের রেখা ধরে বাউল সাধক একতারা হাতে
তাঁর সন্ধানে ছুটে চলে অজানা ঠিকানায়?
বল না দেখি- কে জানে এমন অজানা কথা?
নীড়ে ফেরা বিহগ পরম মমতায় হেসে কয়ে যায়
ভালোবাসা হলো সকল দূরত্ব দূরে ঠেলে দিয়ে
আমৃত্যু গভীর টানে বিনি সুতোর বাঁধনে জড়িয়ে থাকা।