রাজু আহমেদ, নাটোর কন্ঠ:
নাটোরের সিংড়ায় আত্রাই নদীর পানির অব্যহত বৃদ্ধিতে সিংড়া পৌর এলাকার ১২টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। বুধবার আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ১০৯ সে:মি: উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বুধবার রাত ২ টায় পানির তীব্র স্রোতে পৌর এলাকার শোলাকুড়া মহল্লায় সিংড়া -বলিয়াবাড়ি রাস্তার বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে মহেশচন্ত্রপুর সহ কয়েকটি মহল্লার হাজার হাজার মানুষ।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টার দিকে নাগর নদীর হিয়াতপুর নামক স্থানে সিংড়া- তাজপুর সড়ক ভেঙ্গে যায়। এতে ঐ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এদিকে বন্যায় উপজেলার ২ হাজার ৭৭৬ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
১৩শ টি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। পানিবন্দি হয়েছে অন্তত ১লাখ মানুষ। ফলে নিরুপায় হয়ে আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে ছুটছেন বন্যাকবলিত এলাকার দুর্গত মানুষরা। ইতোমধ্য ২৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
সিংড়া পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, শোলাকুড়া মহল্লা সংলগ্ন বাঁধ ভেঙ্গে তিনটি বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। আরো বাড়ি হুমকির মুখে। আমরা মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছি।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহি অফিসার ( ইউএনও ) নাসরিন বানু জানান, বন্যা পরিস্থিতি সার্বিক খোঁজ-খবর নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষগুলো যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে প্রায় ৮৮০ টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, নতুন করে বন্যার কারণে এই উপজেলায় ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন পানিতে তলিয়ে গেছে । প্রায় ২ হেক্টর মাসকালাইসহ অসংখ্য সবজি ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আরো ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি ।
সিংড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ওয়ালিউল্লাহ জানান, দ্বিতীয় দফার এই বন্যায় তার উপজেলায় এ পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৩০০ টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। তবে এখনো পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি। বন্যার পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আরও ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে মৎস্য বিভাগ তৎপর রয়েছেন।
নাটোরের জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সদা প্রস্তুত রয়েছেন। সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। ইউএনও সহ সরকারি কর্মকর্তাদের বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে।