জাকির তালুকদার : কানাডায় চেইন বুকশপ ‘চার্টার-ইনডিগো’তে ঢুকলেই মন ভালো হয়ে যায়। প্রত্যেকটা আউটলেটই বিশাল জায়গা জুড়ে। বইয়ের সাম্রাজ্য। পৃথিবীর যেসব লেখক-কবির বইয়ের চেহারা কল্পনা করি তাদের সবার বই একসাথে। যেসব বইয়ের নাম জানি না, অথচ জানা উচিত, সেগুলোও দেখি আর দেখি।
মাঝে মাঝে আদর করার ভঙ্গিতে হাতে তুলে আলতো করে পৃষ্ঠা উল্টাই। কখনো কখনো যে কোনো সেলফ-এর পাশে হেলান দিয়ে পড়তে শুরু করি। নিষেধ করে না কেউ। বরং মগ্ন হয়ে পড়তে দেখলে সেলস গার্ল একটু মিষ্টি হাসে। যদি চোখে চোখ পড়ে আর কী!
দোকানে ঢুকতেই একটি র্যাক চোখে পড়বে। কিছু বই আলাদা করে রাখা সেই র্যাকে। র্যাকের ওপরে একজন সুন্দরী রমণীর ফটো। র্যাকের ওপরে লেখা আছে ‘হিদার’স পিকস’। মানে, হিদার নামক এই সুন্দরী ঋদ্ধ পাঠক বইগুলি পাঠকদের জন্য বাছাই করে দিয়েছেন। পাঠক বিনা দ্বিধায় এই বইগুলো কিনতে পারেন। যদি বইটি তার মনমতো না হয়, তবে তিনি বইটির পূর্ণমূল্য ফেরত পাবেন।
হিদার কীভাবে বই খুঁজে নেন পড়ার জন্য?
একসময় হয়তো নিজে খুঁজে খুঁজে বই পড়তেন। এখন বই পড়াটাই তার পেশা। প্রকাশক এবং লেখকরা তাদের বইয়ের তালিকা এবং বিষয়বস্তু পাঠান হিদারের কাছে। হিদার সেগুলোর মধ্য থেকে কিছু বই পড়ার ব্যাপারে সম্মতি জানান। তখন তার কাছে বই এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্মানী পাঠানো হয়। তিনি পড়ার পরে যে বইগুলোকে ভালো বলেন, সেগুলোই জায়গা পায় দোকানের দৃষ্টি-আকর্ষণী র্যাকটিতে।
খেয়াল করে দেখেছি, প্রতি ৫ জনের মধ্যে অন্তত ৩ জন পাঠক দোকানে ঢুকেই আগে চোখ বুলিয়ে নেন ‘হিদার’স পিকস’-এ।
পাঠানো যে বইটি হিদারের পছন্দ হয় না সেই বই পড়ার টাকাটা কি হিদার ফেরত পাঠান? মোটেই না। বইটা পড়েছেন তিনি, এটাই যথেষ্ট। লেখক বা প্রকাশকও টাকা ফেরত পেতে চেয়েছেন বলে শুনিনি। কারণ লেখকের পরের বইটা হয়তো হিদারের পছন্দ হবে।